পাঠক মত

হাওড়ে কৃষকদের দুর্ভোগ

প্রকাশ | ২৩ মে ২০২২, ০০:০০

ফজিলতুন্নেছা ফৌজিয়া শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
হাওড় মূলত বিস্তৃত প্রান্তর যা প্রতিবছর মৌসুমী বৃষ্টির সময় পানি পূর্ণ হয়ে ওঠে। সমগ্র বর্ষাকালজুড়ে হাওড় এলাকার পানিকে সাগর বলা হয়। অর্থবছরের বেশি সময় ধরে হাওড়গুলো পানির নিচে অবস্থান করে। প্রায় দুই কোটি মানুষ হাওড় জলাভূমি ও জলাশয় এলাকার বাসিন্দা। হাওড় এলাকার মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করে। প্রধানত কৃষিভিত্তিক এ অঞ্চলের মানুষের জীবনের সব ক্ষেত্রেই সংকট রয়েছে। সবিশেষ, কৃষকদের দুর্ভোগের সীমা থাকে এ সময়ে। কৃষি উপকরণ বা সহায়তা এখানকার মানুষের কাছে দুর্লভ। বৈরী আবহাওয়া, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, অকাল বন্যা কৃষকদের জনজীবন অতিষ্ঠ করে তোলে। কৃষক প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকে এবং বন্যার পানিতে কৃষকদের ফসল ধুয়ে যায়। একই সঙ্গে হতদরিদ্র কৃষকদের বয়ে আসে বিশাল ঋণের বোঝা। চলতে থাকে দুর্বিষহ জীবন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে হাওড় এলাকার প্রান্তিক কৃষকদের মানবেতর জীবন কাটাতে হয়। দরিদ্রতা যেন হাওড় এলাকার কৃষকদের নিত্যদিনের সঙ্গী। কৃষকরা টাকার অভাবে সময়মতো সার, তেল, বীজ, কৃষি উপকরণ সংগ্রহ করতে পারে না। ফলে এলাকার মহাজন, এনজিও ঋণের ফাঁদে সর্বস্বান্ত হয়। তাছাড়া কৃষকরা তেমন শিক্ষিত না হওয়ায় উদ্ভাবিত উন্নত কৃষিপ্রযুক্তি সম্পর্কে তারা তেমন অবগত নয়। উন্নত বীজের জাত নির্বাচন করতে জানে না বলে অধিক খরচ করে উচ্চফলন থেকে কৃষকরা বঞ্চিত হয়। ধান রোপণ করার পরে বন্যা, অতিবৃষ্টিতে পানির নিচে তলিয়ে যায়। নতুন ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা সংসার খরচ তথা ঋণের টাকা পরিশোধ করতে কম মূল্য ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে তারা দিশেহারা হয়। সারাবছর খাদ্যের সংস্থান নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। বলাই বাহুল্য, ঋতু বর্ষার আগমনে বন্যা হলে তো কৃষকদের শান্তি, সুখ বিদায় নেয়। হাওড় এলাকার কৃষকদের এই দুর্ভোগ থেকে বাঁচাতে তাদের সহায়তা করা দরকার। এমন অবস্থায়, হাওড়বাসী কৃষকদের দুর্ভোগ রোধকল্পে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।