স্বাস্থ্য সুরক্ষা

কাযর্কর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশের মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত না হলে তা উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশ একটি জনসংখ্যাবহুল দেশ। সঙ্গত কারণেই যে কোনো ধরনের স্বাস্থ্য ঝঁুকি আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহাযর্। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, চিকিৎসা কেন্দ্র বাড়লেও সেবার ব্যয় কমছে না। আমরা মনে করি, যেখানে দেশের বিপুলসংখ্যক পরিবারই অভাব-অনটনকে মোকাবেলা করে জীবনযাপন করে, সেখানে যদি স্বাস্থ্য সেবার ব্যয় না কমে, তবে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। প্রসঙ্গত বলা দরকার, দেশে জনগণের স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারিভাবে অসংখ্য চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে উঠলেও সেবার দাম কমছে নাÑ বরং নতুন নতুন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসে সবর্স্বান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষÑ এমন বিষয় সামনে আসছে। ফলে সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। সেবার দাম না কমা কিংবা চিকিৎসা নিতে এসে যদি সাধারণ মানুষ সবর্স্বান্ত হয়ে পড়ে, তবে স্বাভাবিকভাবেই বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে সাবর্জনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অজর্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে যখন বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন তা বিবেচনায় নিতে হবে। উল্লেখ্য, ‘সাবজর্নীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সামষ্টিকভাবে পদক্ষেপ নেয়ার এখনই সময়’ শীষর্ক প্রতিপাদ্য নিধার্রণ করে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও গতকাল সাবর্জনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিবস পালিত হয়েছে। আমরা মনে করি, চিকিৎসা সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচার বিশ্লেষণ করে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয় নিধার্রণ এবং এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ অব্যাহত রাখতে হবে। বলা দরকার, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের মানুষের মানসম্মত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও) আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সাবর্জনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অজের্নর লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রণ করেছে। এ লক্ষ্যে সংস্থাটি বলেছে যে, প্রতিটি মানুষ সে যেই হোক, যেখানেই বাস করুক অথবা তার যতটুকুই অথর্ থাকুক না কেন, কোনো রকম আথির্ক ভোগান্তি ছাড়াই প্রয়োজন অনুযায়ী সে গুণগত স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার রাখে। আমরা বলতে চাই, যখন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন বিষয় সামনে আসছে যে, দিনদিন ক্রমবধর্মান হারে চিকিৎসা খরচ বাড়তে থাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তের পক্ষে চিকিৎসা ব্যয় বহন কঠিন হয়ে পড়ছেÑ তখন তা অত্যন্ত পরিতাপের। আমলে নেয়া দরকার, জনস্বাস্থ্যবিদরাও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, কোনো দেশের উন্নয়ন স্থায়িত্বের জন্য জনগণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা অপরিহাযর্। আর এ জন্য সাবর্জনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা কমর্সূচি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। আমরা উল্লেখ করতে চাই, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী বতর্মানে বাংলাদেশের শতকরা ৬৭ ভাগ লোক অসংক্রামক রোগে মারা যায়Ñ পাশাপাশি ১২ শতাংশ ক্যান্সার, ৩০ ভাগ হৃদরোগ, ৩ ভাগ ডায়াবেটিস ও ১২ ভাগ লোক অন্যান্য রোগে মারা যায়, যাদের অধিকাংশই চিকিৎসা খরচ জোগাতে অক্ষম। ফলে এই পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবেলায় যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। বতর্মানে স্বাস্থ্যসেবা পেতে দেশের মানুষের মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের প্রায় ৭০ ভাগ পকেট থেকে খরচ করতে হয়, এ ছাড়া দেশে ৪০ ভাগ মানুষের স্বাভাবিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা হলেও ৫০ ভাগ মানুষ গুণগত সেবা পাচ্ছে না! যা উৎকণ্ঠাজনক। সঙ্গত কারণেই সাবর্জনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা কমর্সূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টরা সবার্ত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।