বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুবকরাই মাদকাসক্ত বেশি

কার্যকর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ০১ জুলাই ২০২২, ০০:০০

মাদকের ভয়াবহ বিস্তার ও ভয়ংকর ছোবল দেশের সবাইকেই উদ্বিগ্ন করেছে। এর বিষাক্ত ছোবল অকালে কেড়ে নিচ্ছে অনেক প্রাণ। অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী হচ্ছে বিপথগামী, তারা অন্ধকারে পথ হারিয়েছে।

অবাক ব্যাপার, দেশে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা ৮০ লাখের বেশি। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই যুবক। এই ৮০ শতাংশের মধ্যে আবার ৪৮ শতাংশ শিক্ষিত, ৪০ শতাংশ নিরক্ষর। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে 'মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস' উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এসব তথ্য জানান। মন্ত্রী বলেন, আমাদের মনে আছে সেই ঐশীর কথা কিংবা কেরানীগঞ্জের সেই পরিবারটির কথা? কী ভয়াবহ মাদকের ছোবল ছিল পরিবারগুলোর ওপর। মাদকের এই ছোবল থেকে বের হয়ে আসতে হলে পরিবারের মাধ্যমে পরিবর্তন হতে হবে। পরিবার সচেতন হলে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। আক্রান্তদের অধিকাংশই ইয়াবা সেবন করে, এরপর আছে হেরোইন। এখন আইসবার এসেছে। এসব মাদকের কারবার লাভজনক হওয়ায় যুবসমাজ ঝুঁকে পড়ছে। আশার কথা, সরকার ডোপ টেস্টের দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে। ব্যাপকভাবে ডোপ টেস্ট করার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ।

জাতিবিধ্বংসী এ মাদক থেকে পরিত্রাণের আশায় ১৯৯০ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন (১৯৯০ সালের ২০নং আইন) প্রণীত হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনকল্পে ওই আইন-১৯৯০ সালের ১ ফেব্রম্নয়ারি প্রণয়ন করা হয়। এরপরেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। উন্নতি হয়নি দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়েও।

ভয়াবহ ক্ষতিকর মাদক এলএসডি (লাইসার্জিক এসিড ডাইথালমাইড)। এলএসডি সেবন ও ব্যবসায় জড়িত ১৫টি দল রাজধানীতে সক্রিয়। এটা জিহ্বার নিচে নিয়ে কিংবা ইনজেকশনের মাধ্যমে সেবন করা হয়। এলএসডি এমন এক নতুন ধরনের মাদক- যা সেবন করলে, সেবনকারী নিজেকে মহাশক্তিধর ভাবে এবং যাইচ্ছেতাই করতে পারে। মূলত এই ভয়ংকর মাদক সেবন করলে মানুষ আত্মনিয়ন্ত্রণ শক্তি হারিয়ে ফেলে। প্রশ্ন উঠতে পারে, দেশব্যাপী মাদকের সরবরাহ নিশ্চিত করছে কারা? কারা দেশের সম্ভাবনাময় তরুণ সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর কি কোনো পরিত্রাণ নেই। এর আগে ৪২ জন কোটিপতি মাদক ব্যবসায়ীর সন্ধান পেয়েছিল সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা। এদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে একাধিক ব্যক্তি। গোয়েন্দাদের ধারণা এই কয়জনকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হলে, রাজধানীতে অনেকটাই মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। বিভিন্ন ধরনের মাদকগুলোর মধ্যে- হেরোইন, কোকেন, ইয়াবা, আফিম, গাঁজা, ফেনসিডিল, বিয়ার, কেটামিন, তামাক, বিড়ি, সিগারেট, স্পিড, ঘুমের বড়ি, তুসকা ইত্যাদি। আর নতুনভাবে আবিষ্কৃত হয়েছে এলএসডি আইস। এসব মাদকদ্রব্য আমাদের সমাজে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। সময় থাকতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে