সাড়ে ৩ কোটি টাকার ইয়াবা উদ্ধার

কাযর্কর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মাদকের আগ্রাসন একটি দেশ ও জাতির জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে নিদের্শ করে। বলার অপেক্ষা রাখে না, মাদকের কথা এলে ইয়াবার বিষয়টিও সামনে চলে আসে। বিভিন্ন সময়েই পত্রপত্রিকার প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো আমলে নিলে ইয়াবার যে চিত্র পরিলক্ষিত হয় তাতে স্পষ্টÑ ইয়াবার দৌরাত্ম্য ভয়াবহ হয়ে উঠছে। আমরা মনে করি, যখন ভয়াবহ আকারে ইয়াবার বিস্তার হচ্ছে, তখন এ পরিস্থিতিতে ইয়াবার আগ্রাসন থেকে যুবসমাজকে রোধ না করতে পারলে, তার জন্য ভয়ঙ্কর মূল্য দিতে হবে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। সঙ্গত কারণেই সাবির্ক পরিস্থিতি বিচার বিশ্লেষণ সাপেক্ষে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, কক্সবাজারের টেকনাফে পৃথক অভিযান চালিয়ে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা মূল্যের ১ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে বডার্রগাডর্ বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। এ সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তথ্য মতে, রোববার টেকনাফের মÐলপাড়া ও নয়াপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়। টেকনাফ ২ বিজিবির পরিচালক লেফটেন্যান্ট কনের্ল আছাদুদ জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, রোববার ভোরে টেকনাফের নাজিরপাড়া বিওপির আওতাধীন মÐলপাড়া এলাকার লবণ মাঠে অভিযান চালায় বিজিবির একটি দল। সেখান থেকে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা ২০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে সাবরাং নয়াপাড়া এলাকার একটি সুপারি বাগানে অভিযান চালিয়ে প্লাস্টিকে মুড়িয়ে রাখা অবস্থা এক লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, উদ্ধার করা ইয়াবার বাজার মূল্যে প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আমরা মনে করি, এবারের অভিযানে ইয়াবা উদ্ধারের এই ঘটনাও এটা স্পষ্ট করে যে, ইয়াবা পাচারকারীরা সক্রিয়। ফলে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনাটিকে আমলে নিয়ে, সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার, ইয়াবাসহ যে কোনো ধরনের মাদকের ছোবল থেকে যুবসমাজ তথা মানুষকে রক্ষা করতে কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বলাই বাহুল্য, এর আগেও নানা সময়ে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছেÑ কক্সবাজারে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযানও চালিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বহিনী। লক্ষণীয় যে, বিভিন্ন সময়েই এমনটি দেখা গেছে, অভিযানের পর ইয়াবা পাচারকারী বা ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কিছুটা ঝিমিয়ে পড়লেও কিছুদিন পর আবারও আগের অবস্থা ফিরে আসে। আমরা মনে করি, এ ধরনের পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই উৎকণ্ঠাজনক। সংগত কারণেই পরিস্থিতির ভয়াবহতাকে বিবেচনা করে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে ইয়াবা রোধ করা অপরিহাযর্। সংশ্লিষ্টদের বলতে চাই, এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে, কক্সবাজার, টেকনাফ, উখিয়া, চট্টগ্রামসহ মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা হয়ে বিপুলসংখ্যক ইয়াবা আসে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। আমরা মনে করি, নিয়মিত অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি এই চক্রগুলোর নেপথ্যে কারা বা কোন মহল এর সঙ্গে জড়িত, কারা মদদ দিচ্ছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। কেননা, ইয়াবার ভয়াবহতা রোধ করা না গেলে তার ফলে সৃষ্টি হবে অত্যন্ত আতঙ্কজনক পরিস্থিতিÑ যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, নিয়মিত অভিযান পরিচালনাসহ কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্যদিয়ে ইয়াবা পাচারকারীদের রুখে দিতে হবে। এ ছাড়া মাদকচক্রের গডফাদারদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করলে এদের ভয়ানক তৎপরতা কমে আসবে এমনটি মনে করা অমূলক নয়। মাদকের কুফল সম্পকের্ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ক্যাম্পেইন জোরদার করা জরুরি। ইয়াবার ভয়াবহ আগ্রাসন ঠেকাতে আরও কৌশলী ও যথাথর্ উদ্যোগ নিশ্চিত হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।