শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর হস্তান্তর এই উদ্যোগ ইতিবাচক

নতুনধারা
  ২৩ জুলাই ২০২২, ০০:০০

ভূমি ও গৃহহীন পরিবার ঘর পেলে তা কতটা ইতিবাচক বলার অপেক্ষা রাখে না। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে ভূমিহীন-গৃহহীন আরও ২৬ হাজার ২২৯টি পরিবারকে পাঁচটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ঘর হস্তান্তর করেন। বলা দরকার, আশ্রয়ণ একটি মানুষের ঠিকানা উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আশ্রয়ণ জীবন-জীবিকার একটি সুযোগ, বেঁচে থাকা, স্বপ্ন দেখা এবং তা বাস্তবায়ন করার। যে বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, সে বাংলাদেশের কোনো মানুষ যেন ঠিকানাবিহীন না থাকে, তাদের জীবনটা যেন অর্থহীন হয়ে না যায়, তাদের জীবনটা যেন সুন্দর হয়, সেই লক্ষ্য নিয়েই এই উদ্যোগটা সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধু নিয়েছিলেন। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার হাতে গড়া বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষের জন্য অন্তত বসবাসের একটি জায়গা করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই এই আশ্রয়ণ প্রকল্প। এছাড়া বলা দরকার, ঘর হস্তান্তরের মাধ্যমে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সব উপজেলাসহ দেশের ৫২টি উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হওয়ার ঘোষণাও দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, সরকারের এই উদ্যোগের সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও যুক্ত হয়েছেন। এছাড়া এমন আলোচনাও এর আগে এসেছিল যে, বিশ্বে এটা নতুন মডেল, আগে কখনো কেউ এটা ভাবেনি। আমরা মনে করি, গৃহহীনরা ঘর পাচ্ছে এই বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক এবং সুখকর। এর মধ্য দিয়ে গৃহহীনরা নতুন করে বাঁচতে পারবে, জীবনকে অর্থবহ করার সুযোগ পাবে- যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই প্রতীয়মান হয়। উলেস্নখ্য, মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা ছিল একটি মানুষও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না। এই লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি জমির মালিকানাসহ ৬৩ হাজার ৯৯৯টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০ জুন জমির মালিকানাসহ ৫৩ হাজার ৩৩০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণ করা একক ঘরের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি। চলমান তৃতীয় পর্যায়ে মোট বরাদ্দকৃত একক ঘরের সংখ্যা ৬৭ হাজার ৮০০টি, যার মধ্যে গত ২৬ এপ্রিল হস্তান্তরিত হয় ৩২ হাজার ৯০৪টি। আর বৃহস্পতিবার হস্তান্তর হয়েছে ২৬ হাজার ২২৯টি। নির্মাণাধীন রয়েছে আরও ৮ হাজার ৬৬৭টি ঘর।

এবারে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি যুক্ত হন ৫টি প্রকল্প এলাকার সঙ্গে। প্রকল্পগুলো হচ্ছে লক্ষ্ণীপুরের রামগতি উপজেলার চরকলাকোপা আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকল্প, ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চর ভেলামারী আশ্রয়ণ প্রকল্প, পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাহানপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার জঙ্গালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প। আমলে নেওয়া দরকার, অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একটা ঘর একটা মানুষের জীবন পাল্টে দেয়। ঘর পাওয়া মানুষের মুখের সেই হাসিই জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া, এরচেয়ে বড় কিছু আর হতে পারে না।

জানা যায়, এই প্রকেল্প খাসজমি উদ্ধার করা, পাশাপাশি যেখানে খাসজমি পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে যেন জমি কিনে দেওয়া যায় তার জন্যও একটি ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। প্রয়োজনে জমি কিনে প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিকভাবেই এই উদ্যোগ অত্যন্ত মহৎ যার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন জরুরি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের কোনো মানুষ যেন আর ছিন্নমূল না থাকে। সে ব্যবস্থাই নেওয়া হবে এবং সেটাই লক্ষ্য। আমরা মনে করি, এই লক্ষ্যের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হোক এবং গৃহহীন মানুষ ঠিকানা পাক। প্রধানমন্ত্রীর এই দারিদ্র্যবান্ধব উদ্যোগ সন্দেহাতীতভাবেই অত্যন্ত মহৎ। ফলে এর যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের কাজ করতে হবে।

সর্বোপরি বলতে চাই, অসহায় মানুষের জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়া বাংলাদেশ সরকারের একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর ফলে গৃহহীন মানুষ নতুন করে যেমন ঠিকানা পাচ্ছে তেমনি জীবনকে নব উদ্যোমে সাজাতে পারছে। সংগত কারণেই এই সেবা প্রদান বাংলাদেশ সরকারের একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ বলেই প্রতীয়মান হয়। এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক- এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে