শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বেগম রোকেয়া থেকে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব

একথা অবধারিতভাবে বলা যায় যে, স্বাধীন বাঙালি জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আপামর বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করতে যে গণজাগরণ সৃষ্টি করে ছিলেন তার অন্যতম ভূমিকায় ছিলেন অন্তরালের নেপথ্য মহীয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।
প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন
  ০৮ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এই দেশের আপামর জনগণ যারা বাঙালি, বাংলা যাদের ভাষা। এই বাংলা ভাষাভাষীর বাঙালি জাতি একক জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যা আজ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। কিন্তু এই বাঙালি ছিল একদিন অবহেলিত, নিষ্পেষিত, অধিকারহীন অবস্থার এক জাতি। পৃথিবীর কোথাও যে জাতি মর্যাদা পেত না এমনকি ভালো করে চিনতও না পৃথিবীর মানুষ এই বাংলা ভাষাভাষীর মানুষকে। যতটুকু জানতো তা হলো দারিদ্র্য, অবহেলিত, বন্যা, খরা আর ক্ষুধায় জর্জরিত অনুন্নত এক জনগোষ্ঠী হিসেবে। কুসংস্কার, নিরক্ষরতা, অজ্ঞতা সব মিলিয়ে পিছিয়ে পড়া জাতি হিসেবে পরিচিতি ছিল এই অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর। একদিকে কুসংস্কার ও অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজ, অন্যদিকে অনুন্নত অর্থনীতি যা বাঙালিকে করেছিল অধিকারহীন আর অবহেলিত। সামাজিক বিষয়গুলো বিবেচনা করলে দেখা যায় এই বাঙালি সমাজ সে সময়ে শিক্ষায় পিছিয়ে- বিশেষ করে নারী শিক্ষায়, কুসংস্কারাচ্ছন্ন বেষ্টিত জনগোষ্ঠী, প্রচলিত প্রথা বেষ্টিত মানসিকতা, সংস্কৃতির অনগ্রসরতাসহ সব ক্ষেত্রেই পশ্চাৎপদতা। আর অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, কৃষিনির্ভর অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, ব্যবসাবাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রেই অনুন্নয়নের অবস্থা বিরাজমান। ঠিক এই রকম আর্থ-সামাজিক অবস্থায় নারী শিক্ষার অগ্রদূত হিসেবে আর্বিভাব হয় বেগম রোকেয়া। ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে জন্ম নেয় বেগম রোকেয়া রংপুর জেলায় পায়রাবন্দ গ্রামে। পারিবারিক প্রভাব পরিবেশে বেগম রোকেয়া শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে উঠে। পরবর্তী সময়ে স্বামীর সহযোগিতাও তাকে উদ্যোগী করে তুলে নারী শিক্ষার বিস্তারে ভূমিকা রাখতে। প্রাসঙ্গিকভাবে বলা প্রয়োজন তৎকালীন আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় বেগম রোকেয়া প্রভাবিত হয়েছিলেন নারী শিক্ষা বিস্তারে। অজ্ঞতা, নিরক্ষরতা, আর অধিকারহীনতায় জর্জরিত নারী সমাজকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে অধিকার সচেতনতায় নারী জাগরণের প্রকৃত উদ্যোগ নিয়েছিলেন বেগম রোকেয়া মাত্র ৫ জন ছাত্রী নিয়ে ভাগলপুরে প্রথম সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল স্থাপন করে। বেগম রোকেয়া তার লেখনী এবং প্রতিষ্ঠানিক উদ্যোগগুলোর মধ্য দিয়ে নারী জাগরণের পথ উন্মুক্ত করেছিলেন। বেগম রোকেয়ার প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত গ্রন্থ এবং প্রবন্ধসমূহের প্রমাণ পাওয়া যায় নারী শিক্ষা, নারী অধিকার তথা নারী জাগরণের সর্বোপরি সামাজিক আন্দোলনের অনন্য দিকনির্দেশনা। বেগম রোকেয়ার সমসাময়িক সময় থেকে ১৯৪৭ সালের ভারতবর্ষ বিভক্ত হওয়া পর্যন্ত অনেক নারী নেতৃত্বের ভূমিকা দেখা যায়। তবে ১৯৪৭ পরবর্তী তৎকালীন পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর পূর্ব পাকিস্তান তথা বাঙালি জনপদের ওপর শোষণ প্রক্রিয়ায় প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ আন্দোলন বিকশিত হয় ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের শাসকদের উর্দু ভাষা রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে। এই সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ আপামর বাঙালি জনগণ নিজের ভাষা, মায়ের ভাষা, বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করেন- যা ১৯৫২ সালে ২১ ফেব্রম্নয়ারি বাঙালির রক্তের ঋণে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৪৭ ও ১৯৪৮ সাল থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে আপামর বাঙালিকে সচেতন ও সংগঠিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যান সভা, সমিতি এবং প্রচারণার মধ্য দিয়ে। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ এই চার বছরের ঘটনা প্রবাহ এবং নানা আন্দোলন সংগ্রাম এর অভিজ্ঞতার আলোকে বঙ্গবন্ধুর আত্মোপলব্ধি বিশ্লেষণ করলে দেয়া যায়, তার প্রণীত এবং আমার ভাষায় 'বঙ্গবন্ধুর ব্রেইন চাইল্ড' ১৯৬৬-এর ৬ দফা- যা বাঙালির ম্যাগনেকাটা নামে অভিহিত। বঙ্গবন্ধু বুঝে গিয়েছিলেন বাঙালি জাতিকে অবদমিত করতে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী নানা ষড়যন্ত্র করে প্রথম আঘাতটি হেনেছে একটি জাতির মূল উপাদান ভাষাকে, সংস্কৃতিকে, ঐতিহ্যকে, নস্যাৎ করার প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে। এছাড়াও রয়েছে অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে শোষণ ও বঞ্চনার প্রচেষ্টা। উলিস্নখিত প্রতিটি ক্ষেত্রেই পশ্চিম পাকিস্তান ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে বড় ব্যবধান তৈরি করে নানা ষড়যন্ত্রে শোষণ ও শাসন করার প্রচেষ্টা। এই বাস্তবতায় বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবিত ৬ দফা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়ায় পূর্ব পাকিস্তান তথা বাঙালি জনপদের আপামর জনগণের কাছে। বঙ্গবন্ধুর ৬ দফাই ছিল মূলত বাঙালির স্বাধীকার থেকে স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি রাষ্ট্র গঠনের দূরদর্শী প্রস্তাবনা। আর এই সময়ে ৬ দফা দাবি আদায়ের পক্ষে গণজাগরণের প্রেক্ষাপটে উপস্থিত বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।

বেগম ফজিলাতুন্নেছা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী। বেগম ফজিলাতুন্নেছা যার ডাক নাম রেনু, জন্ম ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট। খুব শৈশবে পিতৃ-মাতৃ হারা ফজিলাতুন্নেছা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শেখ মুজিবের সঙ্গে। ফজিলাতুন্নেছা ছিলেন শেখ মুজিবের চাচাত বোন। ফজিলাতুন্নেছার বয়স যখন তিন বছর তখন শেখ মুজিবের সঙ্গে বিয়ে হয়। শেখ মুজিবের তখন ১৩ বছর। পিতৃমাতৃহীন ফজিলাতুন্নেছা ওরফে রেনুকে ছেলের বউ হিসেবে কোলে তুলে নেন শেখ মুজিবের মা সাহারা খাতুন। সুতরাং, ফজিলাতুন্নেছার সৌভাগ্য হয়েছিল শেখ মুজিবের মা এবং বাবার স্নেহে বেড়ে উঠার। আর শিশুকাল থেকেই ফজিলাতুন্নেছা ওরফে রেনুর পরিচয় ঘটেছিল স্বামী শেখ মুজিবের আদর্শ, স্বভাব, আচরণ, ইচ্ছা-অনিচ্ছার সঙ্গে। বলা যায় স্বামী শেখ মুজিবের মন মনন সবকিছুই তার আত্মস্থ ছিল। আর এজন্যই তিনি সহজাত হয়েছিলেন স্বামী শেখ মুজিবের সারাজীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে। ধাপে ধাপে বেড়ে ওঠা ফজিলাতুন্নেছা হয়ে উঠেছিলেন আত্মবিশ্বাসী, সাহসী এবং অভিজ্ঞতালব্ধ- যা হয়েছিল শেখ মুজিবের সাহচর্যে। প্রাপ্ত তথ্য মতে ফজিলাতুন্নেছা ছিলেন অত্যন্ত সাহসী, দৃঢ়চিত্ত ও দূরদর্শী এবং উপস্থিত বুদ্ধিসম্পন্ন নারী। যার প্রমাণ পাওয়া যায় আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলায় বন্দি শেখ মুজিবকে প্যারোলে মুক্তির বিরোধিতা করার জোড় সিদ্ধান্তে। বেগম ফজিলাতুন্নেছা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্যারোলে মুক্তির বিরোধিতা করে বলেছিলেন- 'তুমি যদি ওই নেতাদের কথায় প্যারোলে যাও তাহলে আমি পল্টন ময়দানে তোমার বিরুদ্ধে বক্তৃতা দেব' (বেবী মওদুদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তার পরিবার, পৃ: ২০, ফেব্রম্নয়ারি ২০১০)। সাহসী ও সিদ্ধান্তে অটল বেগম ফজিলাতুন্নেছা সর্বক্ষণ শেখ মুজিবের আদর্শে ছায়ার মতো প্রভাবিত করেছেন অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে। প্রাপ্ত তথ্য মতে জানা যায়, ১৯৪৬ সালের দাঙ্গায় এবং দুর্ভিক্ষের সময় স্বামী শেখ মুজিব যখন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, মানুষের সেবা করেছেন তেমনি একইভাবে একই মনোভাব নিয়ে সার্বক্ষণিক সমর্থন দিয়েছেন বেগম ফজিলাতুন্নেছা। এছাড়াও '৫৪-এর যুক্তফন্ট নির্বাচনের প্রচারণা ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে অকুণ্ঠ সহযোগিতা, উদ্বুদ্ধকরণ ও গণজাগণের উৎসাহ প্রদানসহ নানা কাজে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকেছেন অন্তরালে থেকে। শেখ মুজিব প্রণীত ৬ দফা প্রচারে বেগম ফজিলাতুন্নেছা নিজ হাতে লিফলেট বিলি করেছেন। নেতাকর্মীদের মধ্যে ৬ দফা সংবলিত লিফলেট বণ্টন করেছেন প্রচারের জন্য। এছাড়া দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ, বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সময়ে সভার ব্যবস্থা ও সহযোগিতা করাসহ প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ছায়ার মতো নেপথ্যে থেকে সাহস যুগিয়েছেন। ষাটের দশক থেকে শুরু করে প্রতিটি সময়ে তার আত্মত্যাগ আজ গণজাগরণের সহায়ক শক্তি হিসেবে প্রমাণিত। আদর্শ সংসার, ছেলেমেয়েদের আদর্শবাদী করে গড়ে তোলা, শেখ মুজিবসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের মামলা পরিচালনায় আইনজীবীদের নির্দেশনা, নেতাকর্মীদের সহযোগিতা এবং শেখ মুজিবের সিদ্ধান্ত পৌঁছে দেয়া থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বেগম ফজিলাতুন্নেছা হয়ে উঠেন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। প্রাসঙ্গিকভাবে উলেস্নখ করা প্রয়োজন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বাঙালি স্বাধীকার থেকে স্বাধীনতার গণজাগরণে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করেন শেখ মুজিবের পাশে ছায়ার মতো থেকে।

একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বাঙালির জাতিসত্ত্বা প্রতিষ্ঠায় জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ গঠনে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামের সঙ্গে এবং শেখ মুজিবের পাশে থেকে সংসারের অন্তরালে নানা সাংগঠনিক কাজে সহায়তা করেছেন। যা গণজাগরণে উদ্বুদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করতে সহায়ক হয়েছে। আর তার প্রমাণ পাওয়া যায় ১৯৬৯-এর গণঅভু্যত্থানের সময়ে। আপামর বাঙালির গণজাগরণের মধ্য দিয়ে '৬৯-এর গণঅভু্যত্থানের মাধ্যমে শেখ মুজিবকে মুক্ত করার ইতিহাসে। আর এই ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় '৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে গণজোয়ার, '৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের গণজাগরণ তার বাস্তব প্রমাণ। বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কখনো প্রত্যক্ষ কখনো নেপথ্যে থেকে আপামর বাঙালির গণজাগরণে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। প্রাপ্ত তথ্যমতে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যে ভাষণ দিয়েছিলেন সে ক্ষেত্রেও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ওই জনসভায় যোগ দিতে যাওয়ার আগমুহূর্তে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বলেছিলেন 'সারাদেশের মানুষ তোমার দিকে তাকিয়ে আছে। তুমি তাদের নিরাশ করবে না। তোমার মন যা বলে তুমি তাই বলবে' (বেবী মওদুদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তার পরিবার, পৃ: ২০-২১, ফেব্রম্নয়ারি ২০১০)। এর পরবর্তী ইতিহাস এখন সবার জানা আছে। আমার বিশ্লেষণে বঙ্গবন্ধু সেদিন তার ভাষণে- 'এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম' উচ্চারণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। আর এর মধ্য দিয়েই আপামর বাঙালি জনগণ গণজাগরণে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। প্রসঙ্গত, ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ছিলেন সেটি ছিল আমার বিশ্লেষণে প্রশাসনিক বা অফিসিয়াল ঘোষণা। তার প্রমাণ পাওয়া যায় পরবর্তী সময় ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে। যুদ্ধকালীন পাকিস্তানে কারাবন্দি বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশে গৃহবন্দি বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। এই যুদ্ধকালীন সময়েও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোপনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগসহ নানাবিধ কাজ করেছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।

একথা অবধারিতভাবে বলা যায় যে, স্বাধীন বাঙালি জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আপামর বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করতে যে গণজাগরণ সৃষ্টি করে ছিলেন তার অন্যতম ভূমিকায় ছিলেন অন্তরালের নেপথ্য মহীয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।

সবশেষে বলতে হয়, শত শত বছরের অবহেলিত বাঙালি জনগোষ্ঠীকে (বিশেষ করে নারী শিক্ষার মাধ্যমে) নারী জাগরণের পথ উন্মুক্ত করেছিলেন বেগম রোকেয়া, ঠিক তেমনিভাবে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ, উদ্বুদ্ধ তথা গণজাগরণে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন আন্তরালে থেকে যাওয়া নেপথ্য মহীয়সী ব্যক্তিত্ব বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।

প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন : উপাচার্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে