বাসভাড়া বৃদ্ধি

অনিয়ম রোধ করতে হবে

প্রকাশ | ০৮ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সম্প্রতি জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে অর্থনীতিতে বড় ধাক্কার শঙ্কাসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় আসছে। এরই মধ্যে বাসভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি সামনে এলো। তথ্য মতে, বাসভাড়া সর্বোচ্চ ২২ শতাংশ বেড়েছে। মূলত শনিবার রাতে বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে পরিবহণ মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বিআরটিএর ভাড়া নির্ধারণী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের পর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ চেয়ারম্যান- রোববার থেকে নতুন ভাড়ার হার কার্যকর হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। জানা গেছে, দূরপালস্নায় আগের ভাড়া ১ টাকা ৮০ পয়সার জায়গায় ৪০ পয়সা বাড়িয়ে ২ টাকা ২০ পয়সা করা হয়েছে। এতে ভাড়া বাড়ল ২২ শতাংশ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১৬ শতাংশ বাড়িয়ে নতুন ভাড়া করা হয়েছে ২ টাকা ৫০ পয়সা। আগে ভাড়া ছিল ২ টাকা ১৫ পয়সা। ভাড়া সমন্বয়ের বিষয়ে গণমাধ্যমে সড়ক সচিব জানিয়েছেন, মহানগর এলাকায় বাসভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ৩৫ পয়সা বেড়ে আড়াই টাকা, দূরপালস্নায় ৪০ পয়সা বেড়ে ২ টাকা ২০ পয়সা হয়েছে। সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকাই থাকছে। মিনিবাসে ভাড়া থাকছে ৮ টাকা। বলা দরকার, শুক্রবার রাত ১২টার পর জ্বালানি তেলের নতুন দাম কার্যকর করেছে সরকার। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রোলের দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাসভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি সামনে আসে। আমরা বলতে চাই, বাসভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে- আর এতে কীরূপ প্রভাব পড়বে জনজীবনের ওপর- সেটা যেমন আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই, তেমনি সংশ্লিষ্টদের এই বিষয়টিও এড়ানো যাবে না যে, বাসভাড়া আদায়ে যেন কোনো অনিয়ম না হয়। কেননা, এর আগে গণপরিবহণে ভাড়া আদায় কিংবা সার্ভিস সংক্রান্ত নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে এমন ঘটনাও ঘটেছে যে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে সব গণপরিবহণের ভাড়া বাড়িয়েছিল সরকার। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, সে সময়ও সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে সারাদেশে বেশি ভাড়া আদায় করার অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি আন্তঃজেলা বাসের ভাড়া নিয়ে চলছে চরম নৈরাজ্য- এমন খবরও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছিল। আমরা মনে করি, এবার যখন বাসভাড়া বাড়ল, তখন যেন ভাড়া আদায়ে কোনো প্রকার নৈরাজ্য সৃষ্টি না হয় সেটি মনিটরিং করতে হবে। জিম্মি করে বেশি ভাড়া আদায় করতে যেন কোনো প্রকার তৎপরতা না হয় সেটি আমলে নিতে হবে। বিভিন্ন সময়ে ঘটনাগুলো আমলে নেওয়া এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাড়া আদায়ে যেন কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। বলা দরকার, যে কোনো কিছুর মূল্য বৃদ্ধিতে জনজীবনের ওপর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে। এখন এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে যে, এক লাফে জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানোর প্রথম প্রভাব পড়ল বাসভাড়ায়; পর্যায়ক্রমে গণপরিবহণের অন্য মাধ্যম আর পণ্যবাহী বাহনে বাড়ানোর বিষয়টি কার্যকর হলে অনেক কিছুতেই 'বাড়তি' অর্থ গুনতে হবে। এতে করে সংসার সামলানোর চাপকে তা করে তুলবে আরও কঠিন। সঙ্গত কারণেই বাসভাড়া আদায়ে যেন কোনো প্রকার অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা না হয় সেটি যেমন নিশ্চিত করতে হবে, তেমনি প্রয়োজনীয় মনিটরিং নিশ্চিত করতে হবে। কেননা, এটাও আলোচনায় আসছে যে, বেশ কয়েক মাস থেকে নিত্যপণ্যসহ প্রায় সবখানেই উচ্চমূল্য দিয়ে আসা মানুষজনকে শিগগিরই আবার বাসভাড়ায় নতুন 'নতুন দরের' মুখোমুখি হতে হবে, যার শুরু হলো বর্ধিত বাসভাড়া দিয়ে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, যখন বাসভাড়া বাড়ল তখন যেন গণপরিবহণের ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করা না হয় সেটি আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যত দ্রম্নত সম্ভব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হতে হবে। কেউ যেন মানুষকে জিম্মি করে ইচ্ছামাফিক ভাড়া আদায় করতে না পারে সেই লক্ষ্যে মনিটরিং জোরদার করতে হবে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।