ডেঙ্গু পরিস্থিতি

কার্যকর উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিপর্যস্ত হয়েছিল পুরো বিশ্ব। যার প্রভাব পড়েছে প্রায় প্রত্যেকটি খাতে। দেশেও করোনার প্রভাব পড়েছিল নানাভাবে। যখন প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসছে করোনা পরিস্থিতি, তখন যদি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ে তবে তা উদ্বেগজনক বলেই প্রতীয়মান হয়। উলেস্নখ্য, বৃহস্পতিবার সারাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আরও ৯০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃতু্য হয়েছে। সব মিলিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬৪ জনে। একই সঙ্গে উলেস্নখ্য, ডেঙ্গুতে এ বছর মৃতু্য হয়েছে ১৬ জনের এই তথ্যও সামনে আসে। এছাড়া প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নতুন ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ৭৩ জনই ঢাকার বাসিন্দা। আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার ডেঙ্গু পরিস্থিতি আমলে নেওয়া। এর আগে ডেঙ্গু বা এডিস মশার বৃদ্ধি ঠেকাতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল দুই সিটি করপোরেশন। কিন্তু তারপরও রোগী বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কার বিষয়টি সামনে এসেছিল। এছাড়া ডেঙ্গু প্রসঙ্গে চিকিৎসকরা বলেছেন, এখনই সবাই সচেতন না হলে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমিয়ে রাখা যাবে না। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে। আমরা মনে করি, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে দুই সিটি করপোরেশনকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এর পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে তার বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। কোনোভাবেই যাতে মশার বংশ বিস্তার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। প্রসঙ্গত, এমন বিষয় পরিলক্ষিত হয় যে, এর আগে সড়ক, বিভিন্ন পরিত্যক্ত ও নির্মাণাধীন ভবন এবং বাসাবাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেছিল দুই সিটি করপোরেশন। জরিমানাও করা হয় বেশ কিছু ভবন মালিককে। একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের এমন মতও উঠে এসেছিল, ডেঙ্গু নিধনে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক এখনো বৃদ্ধি পায়নি। সাধারণ মানুষ এখনো সচেতন হয়নি। জনগণের সম্পৃক্ততা আরও বৃদ্ধি করার বিষয়টিও আলোচনায় আসে। এছাড়া বাড়ির ছাদ, দুই বাড়ির মাঝখানে ময়লা পড়ে থাকা, পানি জমে থাকা, ডেঙ্গুর লার্ভাসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় আসে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প নেই। একইসঙ্গ জনসচেতনতা বাড়ানোর কার্যকমকে বেগবান করতে হবে। এর আগে এমনটিও সামনে এসেছিল যে, একজন কীটতত্ত্ববিদ বলেছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি সার্ভে করা হয়েছে। সেখানে রাজধানীর কয়েকটি এলাকা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। সেসব এলাকায় দুই সিটি করপোরেশন মশা নিধনে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এডিসের ঘনত্ব বেশি পাওয়া গেছে রাজধানীতে- এমন তথ্যও উঠে এসেছিল। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করে। ওই বছর এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মারা যান ১৪৮ জন। করোনা মহামারির মধ্যে ২০২০ সালে ডেঙ্গু তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় কিছুটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। ফলে এখন যে পরিস্থিতি তা আমলে নিতে হবে। ডেঙ্গু রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখা বাঞ্ছনীয়। এটাও মনে রাখতে হবে মশার উপদ্রব রোধ করা না গেলে পরিস্থিতি আরও বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠবে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।