শিশু অধিকার লঙ্ঘন

দ্রæত কাযর্কর উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শিশু নিযার্তন, ধষর্ণ, অপহরণ ও হত্যার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গেছে। ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে কিছু কিছু মানুষ শিশুদের ওপর অমানুষিক নিযার্তন চালাচ্ছে। একশ্রেণির পিশাচ পুরুষ কোমলমতি শিশুদের ধষর্ণ করছে। এই নিপীড়নকারীরা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে শিশুদের হত্যা পযর্ন্ত করছে। আবার নিযার্তনের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আপলোড করা হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশে শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬ শতাংশ বেড়েছে বলে তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পযর্ন্ত সময়ে বাংলাদেশে দুই হাজার ৩৩ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নিযার্তনের শিকার হয়েছে, যাদের মধ্যে এক হাজার ৩৬ জন শিশু অপমৃত্যুর শিকার এবং ৪৭৭ জন যৌন নিযার্তনের শিকার হয়েছে। ২০১৭ সালের একই সময়ে এক হাজার ৪৯৬ জন শিশু হত্যা, ধষর্ণসহ বিভিন্ন রকমের সহিংসতার শিকার হয়েছিল। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ধষের্ণর শিকার হয়েছে ৩৫১ জন শিশু, ২০১৭ সালের একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল ২৯৪ জন। চলতি বছর হত্যার শিকার হয়েছে ২১৬ জন শিশু, যা আগের বছরে ১৫৭ জন ছিল। এ বছর ধষের্ণর শিকার ৩৫১ জন শিশুর মধ্যে ৫৩ জন দলবদ্ধ ধষের্ণর শিকার। ৪০টি শিশুকে ধষের্ণর পর হত্যা করা হয়েছে। ধষের্ণর শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে ৬টি শিশু। এই ধরনের অমানবিক ও নিষ্ঠুর ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এটি অধোপতিত সমাজেরই চিত্র। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের উচিত এ ব্যাপারে কাযর্কর পদক্ষেপ নেয়া এবং এর কোনো বিকল্প নেই। সামাজিক ও পারিবারিক অবক্ষয়, বেকারত্ব, অনৈতিক উচ্চাকাক্সক্ষা, আকাশ সংস্কৃতির নেতিবাচক প্রভাব, অনলাইন প্রযুক্তির কু-প্রভাব, পণোর্গ্রাফির প্রসার, অনৈতিক জীবনযাপন, পাচার, বিরোধ-শত্রæতা, ব্যক্তি স্বাথর্পরতা, লোভ, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি এর জন্য দায়ী। আমরা মনে করি শিশুদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে তাদের কল্যাণের ব্যাপারে সরকারকে আরো বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করা উচিত। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ত্বরান্বিত করতে সবার আগে তাদের সাবির্ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। যত্রতত্র শিশুদের প্রাণ চলে যাবে এটা কোনোভাবেই সমথর্নযোগ্য নয়। অনস্বীকাযর্ যে, মানবিকতা চচার্র বিষয়টি সমাজ থেকে প্রায় উঠে গেছে। বিশ্বায়নের কুফল পড়তে শুরু করেছে আমাদের সমাজে। শুধু সামাজিক বন্ধন ও মূল্যবোধই নয়, বদলে যেতে শুরু করেছে মানুুষের আচরণও। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সমাজে। মানুষের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে। সামান্য কারণে ধৈযর্চ্যুতি ঘটছে। সুকুমারবৃত্তিক চচার্ উঠে গিয়ে মানবিক বোধশূন্য হয়ে পড়ছে মানুষ। রাজনৈতিক দুবৃর্ত্তায়নের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রশাসনিক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসততা। সাম্প্রতিক ধারাবাহিক শিশু নিযার্তন ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে এমন ধারণা অযৌক্তিক নয়। ভুলে গেলে চলবে না, আজকের শিশুরাই আগামী দিনে দেশের কণর্ধার, ভবিষ্যৎ কাÐারী। তাদের নিরাপত্তা যদি নিশ্চিত করা না যায় এবং রাষ্ট্র যদি তাদের মেধা বিকাশে ও নিরাপত্তা দানে কাযর্কর পদক্ষেপ না নেয় তবে তা কেবল দুভার্গ্যজনকই নয়, দেশের ভবিষ্যতের জন্যও হুমকিস্বরূপ।