নতুন মন্ত্রিসভা

আমাদের অভিনন্দন

প্রকাশ | ০৮ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একঝঁাক নতুন মুখ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত হলো ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভার ৩১ জনই নতুন। অপরদিকে ২৭ জন প্রথমবার মন্ত্রী হলেন। বাকি ৪ জন আওয়ামী লীগ সরকারের ২০০৮ সালের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। মন্ত্রিসভা গঠনের মধ্য দিয়ে এ সংক্রান্ত সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটলÑ এমনটি মনে করা যেতে পারে। একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অজর্ন এবং শেখ হাসিনা সংসদ নেতা নিবাির্চত হওয়ার পর থেকেই এবারের মন্ত্রিসভায় চমক থাকতে পারে, রাজনৈতিক বোদ্ধামহলে এমন আলোচনা শুরু হয়েছিল। আর বোদ্ধাদের পযের্বক্ষণ যে অমূলক ছিল না, তা মন্ত্রিসভা গঠনের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে। নতুনদের প্রাধান্য দিয়ে গঠিত মন্ত্রিসভায় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ২৪ মন্ত্রী, ১৯ প্রতিমন্ত্রী ও ৩ উপমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া এই মন্ত্রিসভায় পুরনোদের মধ্য থেকে স্থান পেয়েছেন ১৫ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম রোববার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ও দপ্তর জানিয়ে দেন। সংবাদ সম্মেলন করে মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণা বাংলাদেশে ইতিহাসেও প্রথম। জানা গেছে, সোমবার বিকালে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে দায়িত্ব পালনের শপথও নিয়েছেন মন্ত্রীরা। দেশ ও জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করা একাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভার সদস্যদের আমাদের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন। তথ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত দুবার শরিক দলের নেতাদের নিয়ে সরকার গঠন করলেও এবারের মন্ত্রিসভার সবাই আওয়ামী লীগের। আর এবারের ২৪ জন মন্ত্রীর মধ্যে ৯ জন একেবারে নতুন। বিদায়ী সরকারে না থাকলেও আগে মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেছেনÑ এমন তিনজনকে শেখ হাসিনা ফিরিয়ে এনেছেন পূণর্মন্ত্রী হিসেবে। অপরদিকে পুরনোদের মধ্যে যে সাতজন মন্ত্রী নতুন সরকারে আছেন, তাদের ছয়জনের দপ্তর পরিবতর্ন হয়নি। এ ছাড়া গত সরকারের পঁাচজন প্রতিমন্ত্রীর পদোন্নতি হয়েছে। শেখ হাসিনার গত সরকারে অনিবাির্চত (টেকনোক্র্যাট) মন্ত্রী ছিলেন চারজন। এদের মধ্যে দুজনকে এবারও সরকারে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া টেকনোক্র্যাট হিসেবে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে এসেছেন একজন। সব মিলিয়ে এবারের মন্ত্রিসভা অত্যন্ত সময়োপযোগী হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশ্লেষকরা। ইতোমধ্যে নতুন মন্ত্রিসভা তথা সরকারের কাছে প্রত্যাশা তুলে ধরেছেন দেশের বিশিষ্টজন। তারা মন্ত্রিপরিষদে নতুন মুখকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে কিন্তু দেশ থেকে দুনীির্ত কমছে না। রয়েছে ব্যাংক খাতে নৈরাজ্য। সড়ক-মহাসড়কেও নৈরাজ্য কমেনি মোটেও। তবে এর মধ্যেই অনেক উন্নয়ন হয়েছে দেশের। সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহতও রয়েছে। এখন তারা সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, সুশাসনের নিশ্চয়তা এলে দেশ দ্রæত এগিয়ে যাবে। অস্বীকারের সুযোগ নেই যে, যখন দেশে একের পর এক হরতাল চলছিল, জালাও-পোড়াও হচ্ছিল তখন দেশ ও দেশের অথর্নীতি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ওই সময়ের প্রতিক‚ল অবস্থার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে গেছে। দেশের প্রবৃদ্ধি কমে যায়নি। দেশের দুদিের্ন রপ্তানিমুখী শিল্পগুলো সব থেকে বেশি অবদান রেখেছিল। দেশের অথৈর্নতিক অগ্রযাত্রা থেমে যায়নি। এখন সময় এসেছে সামগ্রিকভাবে দেশকে আরও উন্নত স্থানে নিয়ে যাওয়ার। বলাইবাহুল্য, দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত না হলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সবর্স্তরে। সুশাসন নিশ্চিত না হলে বিভিন্ন খাতে নৈরাজ্য বেড়ে যায়। সঙ্গত কারণেই এ ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি। এবার মন্ত্রিপরিষদে নতুন মুখ এসেছে। তাই তাদের কাছে দেশবাসীর প্রত্যাশাও অনেক। জনগণের প্রত্যাশা, ঘুষ, দুনীির্ত, প্রতারণামুক্ত ও শান্তিপূণর্ একটি দেশের। সুশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক সহাবস্থানের পরিবেশও তৈরি করতে হবে। দেশ স্থিতিশীল থাকলে দেশের অথর্নীতিও শক্তিশালী হবে এবং এভাবে আরও উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বদরবারে বাঙালি মাথা উঁচু করে দঁাড়াতে সক্ষম হবে। একাদশ জাতীয় সংসদে নতুন সরকারকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি প্রত্যাশা থাকবে, সুশাসন নিশ্চিতের মধ্য দিয়ে দেশ ও জাতিকে আরও এগিয়ে নেয়ার। বৈষম্যহীন, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লালিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে সামগ্রিকভাবে দেশ এগিয়ে যাবে, এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা।