মিতালী চাকমা ধষর্ণ ও সুশীল সমাজ

কেউ কি একবার ভেবে দেখেছেন যে, নিযার্তনের ভয়াবহতার পারদ কোন উচ্চতায় উঠলে একজন নারী ধষের্ণর মতো অসম্মানের বিষয় প্রকাশ্যে উচ্চারণ করে! তাও আবার পাবর্ত্য চট্টগ্রামে! যেখানে হত্যার বিচার পযর্ন্ত চাইতে ভয় পায় সাধারণ মানুষ।

প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

মাহের ইসলাম
স্থানীয় ডিগ্রি কলেজের তৃতীয় বষের্র এক ছাত্রীকে দীঘির্দন ধরেই প্রস্তাব দেয়া হচ্ছিল একটি রাজনৈতিক দলে যোগ দেয়ার। কিন্তু মেয়েটি সেই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে চলছিল। কে জানে, কি ছিল তার মনে? হতে পারে লেখাপড়া করে মেয়েটি একটি উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখতো। তাই সে অন্ধকার জগতের, অনিশ্চিত জীবনের, ঝুঁকিপূণর্ কাজের, দেশ, রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী, পাপময় কোনো জীবনের সঙ্গে নিজেকে জড়াতে চায়নি। এমন হতে পারে, পড়ার খরচ জোগাতে বাবা-মা আর বড় বোনের কষ্টের ছবি তার মানসপটে এমনভাবে গ্রোথিত ছিল যে, পড়ালেখার বাইরে অন্য কোনো কিছুতে জড়ানো মানেই নিজের দরিদ্র ও সমস্যা জজির্রত পরিবারের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার শামিল বলে বিবেচিত হয়েছিল। অথবা বাবা-মায়ের কষ্টাজির্ত উপাজের্ন পড়তে এসে লেখাপড়ার বাইরে অন্য কোনো কিছুতে জড়াতে মন সায় দেয়নি। লেখাপড়াকে ধ্যান-জ্ঞান হিসেবে গ্রহণ করে সে হয়তো ভেবেছিল, লেখাপড়ার পেছনেই সমস্ত প্রচেষ্টা নিয়োগ করবেÑ যেন সবার মুখ উজ্জ্বল করতে পারে। আশা ছিল, একদিন দেশবাসী তার নাম জানবে। তার অজের্ন পিতা-মাতার দুঃখক্লিষ্ট মুখে ফুটবে গবের্র হাসি, গবির্ত হবে ভাইবোন, সহপাঠীরা, এমনকি এলাকার সবাই। দেশবাসীর কাছে তার নাম কতটা পৌঁছেছে, সেটা জানা না থাকলেও এলাকাবাসীর কাছে তার নাম এখন পৌঁছে গেছে সেটা নিশ্চিত। তেমনি এটাও নিদ্বির্ধায় বলা যায় যে, গবির্ত হওয়ার পরিবতের্ কন্যার কল্যাণে তার পিতা-মাতা এখন প্রাণ হারানোর শংকায় ভুগছে। বাস্তবে তারা কোথায় আছে, কেমন আছে কেউ জানে না। বাবা-মায়ের কঁাধ থেকে সংসারের জোয়ালের ভার কিছুটা হলেও লাঘবের অভিপ্রায়ে, সে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার পরিবতের্ প্রিয় বাবা-মা আর আদরের ছোট ভাইবোনদের ছেড়ে শহরে ছোটখাটো এক চাকরিতে যোগ দিতে অনেকটাই বাধ্য হয়েছে আগেই। আর তাদের সবার অতি আদরের ছোট ভাই এখনো স্কুলের গÐি পেরুতে পারেনি। পারিবারিক বন্ধনে ভালোবাসায় বেড়ে উঠা সন্তানদের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা আর দায়িত্বশীলতার পাশাপাশি বাস্তবতার আলোকে কষ্ট আর পরিশ্রমকে পাথেয় বানিয়ে জীবনযুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার এমন অনেক গল্প হয়তো পাঠকের জানা আছে। সেদিক থেকে মিতালী চাকমাকে নিয়ে কিছু লেখার কোনো প্রয়োজন ছিল না। তবে, তার জীবনের ক্যানভাসে কিছু দুজের্নর অঁাচড়ের বিভীষিকা এবং তৎপ্রেক্ষিতে আমাদের সমাজের প্রতিক্রিয়ার অসঙ্গতির ওপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়া নিতান্তই অমানবিক বিবেচিত হওয়ার কারণেই এই লেখার অবতারণা করা হয়েছে। গত ২৩ নভেম্বর, ২০১৮ তারিখে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক প্রেসব্রিফিংয়ের পরেই মিতালী চাকমার ঘটনাবলি আলোচিত হতে থাকে। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যাবলি তার অপহরণের ঘটনার পরিষ্কার একটা চিত্র পাওয়া যায়। আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলে যোগ দেয়ার আহŸান উপেক্ষা করায় ১৭ আগস্ট, ২০১৮ তারিখে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল। এর পরে তাকে আটকে রেখেই বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়। সে রাজি না হলে, তাকে স্থানীয় দুই নেতার হাতে তুলে দেয়া হলে, তার প্রতি চালানো হয় অবণর্নীয় শারীরিক এবং মানসিক নিযার্তনের স্টিম রোলার। তার বিভীষিকাময় জীবনের একাংশ কিছুটা হলেও উঠে এসেছে কান্নামিশ্রিত কণ্ঠে। তার কাছ থেকে আরো জানা যায় যে, তাকে সব সময় দুইজন অস্ত্রসহ পাহারা দিয়ে রাখত, যেন সে পালাতে না পারে। তবে, যেখানে আটকে রাখা হয়েছিল, সেখানে সেনাবাহিনীর এক টহল দলের আনাগোনা টের পেয়ে অস্ত্রধারীরা সরে পড়ে। এই সুযোগে সে টহল দলের কাছে এসে তার দুদর্শার কথা জানালে, তারা তাকে উদ্ধার করে এনে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। প্রয়োজনীয় ডাক্তারী পরীক্ষা ও মামলার প্রক্রিয়া শেষ হলেও প্রাণ ভয়ে সে এখন বাড়িতে ফিরতে পারেনি। সে এখনো চিন্তিত আছে এই ভয়ে যে, তার বাবা-মাকে এ সন্ত্রাসীরা মেরে ফেলবে। তার সঙ্গে আরো দুজন নারী বন্দি ছিল, তাদের উদ্ধারের আবেদনও সে জানিয়েছে। ইউপিডিএফের (প্রসীত) পক্ষ থেকে অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করা হয়েছে যে, তাদের ভাবমূতির্ ক্ষুণœ করার উদ্দেশ্যেই এমন পরিকল্পিত নাটক সাজানো হয়েছে। ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতে এমন দাবির সপক্ষে বেশ কিছু প্রচারণাও লক্ষ্য করা গেছে। ইতোপূবের্ এক চাকমা নারীকে কোনো বাঙালি কতৃর্ক ধষের্ণর শুধুমাত্র অভিযোগ পাওয়ার পর প্রমাণিত হওয়ার আগেই কি পরিমাণ প্রতিবাদ হয়েছিল সেটা বলার বিন্দুমাত্র প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। ইতি চাকমা নিহতের ঘটনায় দেশবাসী তা প্রত্যক্ষ করেছে। কারণ, এমন প্রতিবাদ মিছিল ঢাকার শাহবাগ ছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গায় দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছেন। আর যদি কোনোভাবে একটা ধষের্ণর ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর দিকে আঙুল তোলা যায়, তাহলে কি লঙ্কাকাÐ হতে পারে সেটাও দেশবাসী দেখেছে বিলাইছড়ির দুই মারমা বোনের ঘটনায়। এ ধরনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অপরাধীর শাস্তি দাবি করে আন্দোলন বা নারী নিযার্তনের প্রতিবাদে যাবতীয় পদ্ধতি প্রয়োগে পাবর্ত্য চট্টগ্রাম ও বাংলাদেশের সুশীল সমাজ, মানবাধিকার কমীের্দরও অহরহই দেখা যায়। অথচ, নারীর প্রতি সংবেদনশীল এই মানুষগুলোই আবার একদম চুপ মেরে যান, যদি ধষর্ক, খুনি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ হয় বা অবাঙালি কেউ হয়। তেমনটি ঘটে থাকলে, অনেক সময় আবার অপপ্রচার চালানো হয় ঘটনার দায় বাঙালি বা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টায়। এক বছরের মধ্যেই সংঘটিত মাত্র দুটি ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে সামনে উপস্থাপন করে আমাদের সমাজের কিছু মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির বৈপরীত্যের পাশাপাশি প্রতিক্রিয়ার অসঙ্গতির এই চিত্র পরিষ্কারভাবে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। এই বছরের জানুয়ারিতে রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির দুই মারমা বোনের ঘটনা নিয়ে কী না করেছে পাবর্ত্য চট্টগ্রাম ও ঢাকার সুশীল সমাজ, মানবাধিকারের নেতাকমীর্রা। দেশের বড় বড় শহরে প্রতিবাদ মিছিল ও মানববন্ধন, শাহবাগে সেনাবাহিনীকে বিদ্রƒপ করে আয়োজিত পথনাটক, বøগ ও সংবাদপত্রে নারীবাদীদের লেখালেখি, মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটি, উদ্বিগ্ন সুশীল সমাজের বিবৃতি, সুপ্রিম কোটের্ কিছু দেশবরেণ্য ব্যক্তির দৌড়াদৌড়ি, ঢাকার বুকে মশাল মিছিল, চাকমা সাকের্ল চিফের পতœীর আবেগঘন মিথ্যাচার, হাসপাতালে পাহারা বসানো ইত্যাদির বাইরে আরও অনেক কিছুই ছিল। অথচ ওই সময়ে আবেগে আপ্লুত হওয়া ব্যক্তিবগের্র অনেকেই আজো জানেন না যে, এক মিথ্যা অভিযোগকে কেন্দ্র করে কিভাবে তাদের অনুভ‚তিকে বø্যাকমেইল করা হয়েছে। একজন নিযাির্ততা নারী প্রকাশ্য সংবাদ সম্মেলনে তার জীবনের ওপর বয়ে যাওয়া দুবির্ষহ যন্ত্রণা জানান দিলেও এর প্রতিবাদের আওয়াজ দেশের কোনো দিক থেকেই শোনা যায়নি। এমনকি, কোনো নারীবাদী সংগঠন বা মানবাধিকার কমিশন যাদের জেলা অফিস এই রাঙ্গামাটিতেই অবস্থিত প্রতিবাদতো দূরের কথা এমন ভয়াবহ এবং গঁা শিউরে উঠা ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য হলেও নিযাির্ততার সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজনও অনুভব করেনি। কেউ কি একবার ভেবে দেখেছেন যে, নিযার্তনের ভয়াবহতার পারদ কোন উচ্চতায় উঠলে একজন নারী ধষের্ণর মতো অসম্মানের বিষয় প্রকাশ্যে উচ্চারণ করে! তাও আবার পাবর্ত্য চট্টগ্রামে! যেখানে হত্যার বিচার পযর্ন্ত চাইতে ভয় পায় সাধারণ মানুষ। অথচ, অতি সা¤প্রতিক এই মিতালী চাকমার ঘটনার প্রতিবাদের কোনো ধরনের লক্ষণ চোখে পড়ছে না কোথাও। না পাবর্ত্য চট্টগ্রামে, না দেশের অন্য কোন স্থানে। নারীর প্রতি সহানুভ‚তি দেখাতে গিয়ে তৃতীয় পক্ষের শুধু অভিযোগেই যারা এর আগে বহুবার নারী নিযার্তনের বিরুদ্ধে যেভাবে সম্ভব প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন, তারা কোনো এক অজ্ঞাত কারণে এ ঘটনায় কঠোর নীরবতা পালন করছেন। যদিও এখানে নিযাির্ততা নিজেই ভয়াবহ নিযার্তনের কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছেন। জোসনা চাকমার ঘটনাতেও এর ব্যতিক্রম কিছু ছিল না। নারীর প্রতি সংবেদনশীলতা আর পাহাড়ের নারী নিযার্তনের বিরুদ্ধে সব সময়ে যারা উচ্চকিত, সেই সুলতানা কামাল, বাঞ্চিতা চাকমা, ইয়ান ইয়ান, মিজানুর রহমান, রোবায়েত ফেরদৌস, য়েন য়েন, খুশী কবির প্রমুখদের মিতালী চাকমার জন্য কোনো ধরনের পদক্ষেপ যেমন চোখে পড়ছে না, তেমনি তাদের এই হতভাগার জন্য বিন্দুমাত্র উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা আছে বলেও প্রতীয়মান হচ্ছে না। একজন নারী হিসেবে এবং বিশেষত নারী নিযার্তনের বিরুদ্ধে দেশবাসীর সামনে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত ইমেজের কথা মাথায় রেখে নিতান্ত দায়সারা গোছের হলেও অন্তত ক্ষীণ কণ্ঠে কিছু একটা বলা যেত অথচ তেমন কিছুও করা হচ্ছে না। একই ধরনের নিলির্প্ততা প্রকাশ পেয়েছে সিএইচটি কমিশনের আচরণেÑ যারা কিনা পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ইস্যুতে নিজেদের সম্পৃক্ততা প্রমাণের জন্য এর আগে অসংখ্যবার নিদেনপক্ষে বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। পাবর্ত্য চট্টগ্রামের সংঘটিত ঘটনাবলির প্রতি আমাদের দেশের কিছু মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির বৈপরীত্য কতটা চরম হতে পারে, তার সবের্শষ উদাহরণ মিতালী চাকমার ঘটনাবলি। যারা এ ধরনের ঘটনায় প্রতিবাদ করেন বা ইতোপূবের্ করেছিলেন তাদের কাউকেই এখন আর দেখা যাচ্ছে না। অবশ্য আমাদের সমাজের কিছু লোকের এমন আপাতদৃষ্টিতে রহস্যজনক কিন্তু বাস্তবে দ্বিমুখী আচরণ একেবারে আনকোরা কিছু নয়। অতীতের ঘটনাবলির আলোকে মিতালী চাকমার ওপর যে ভয়াবহ নিযার্তন চালানো হয়েছে তার প্রতিবাদ বা বিচারের দাবি করে হয়তো তেমন কেউ সরব হবেন না। কারণ, সচরাচর এই ধরনের ঘটনায় দেশের মূল জনগোষ্ঠীর যারা প্রতিবাদ করেনÑ অদ্যবধি তারা অপরাধী দেখে প্রতিবাদ করেছেন, অপরাধ বিবেচনা করে প্রতিবাদ করেননি। অপরপক্ষে, পাহাড়ের নেতারা “প্রতিবাদের চচার্টা অনেকটা এরকম যে, স্বগোত্রের দুবৃর্ত্তরা যাই করুক না কেন, প্রতিবাদ করা যাবে না; কারণ প্রতিবাদ অপরাধ অনুযায়ী হবে না, অপরাধী অথবা নিযাির্ততার পরিচয় অনুযায়ী হবে।” সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন রয়ে যায়, সাধারণ জুম্ম, যাদের কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই, তারা কি মিতালী চাকমার কথা বিশ্বাস করছে? কারণ, তারা তো এখন আর বোকা নেই, অনেক বুদ্ধিমান। পাবর্ত্য চট্টগ্রামের যে কোনো আন্দোলনে নারীরা এখনের পুরুষের ঢাল হিসেবে সামনে থাকে। তাদের হাতে থাকে লম্বা লাঠি, আর নারীর ঢালে আশ্রয় নেয়া পালোয়ানের হাতে থাকে ছোট্ট গুলতি। বছরের যে কোনো সময়ে, যে কোনো উপলক্ষে আয়োজিত মিছিল বা প্রতিবাদে এখন নারীদের সরব উপস্থিতি নজর এড়ানোর উপায় নেই। তবে বলাইবাহুল্য, ৩০ মে, ২০১৮ তারিখে স্বজাতির হাতে মহালছড়ির তিনজন মারমা ছাত্রী ধষের্ণর শিকার হওয়ার পরেও যখন কেউ কোনো প্রতিবাদের আওয়াজ তুলেনি তখন বুঝতে বাকি থাকে না যে, পাহাড়ে নারীরা এখনো যতটা না মানুষ হিসেবে স্বীকৃত, তার চেয়ে অনেক বেশি কাযোর্দ্ধারের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার মোক্ষম অস্ত্র আর ব্যক্তিগত স্বাথর্ হাসিলের সবচেয়ে পছন্দের হাতিয়ার হিসেবেই তাদের শ্রেয় বিবেচনা করা হয়। তাই, অবধারিতভাবেই প্রশ্নের উদ্রেক হয়, মিতালী চাকমা কি নারী নিযার্তনের ক্ষেত্রে আমাদের ‘সমাজের কিছু মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির বৈপরীত্যের পাশাপাশি প্রতিক্রিয়ার অসঙ্গতির’ শুধুমাত্র আরেকটি উদাহরণ হিসেবেই থেকে যাবে? নাকি, প্রতিটি জুম্ম নারীরও যে একজন মানুষ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার অধিকার থাকতে পারে তা অন্যরা বিশেষত নারীরা অনুধাবন করবেন? এই ঘটনায় এমন সৎসাহস কি দেখানোর সুযোগ আছে যে, জুম্ম নারীরা ভবিষ্যতে আর কখনো কারো ‘কাযোর্দ্ধারের মাধ্যম’ কিংবা ‘স্বাথর্ হাসিলের সবচেয়ে পছন্দের হাতিয়ার’ অথবা ‘প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার মোক্ষম অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহৃত হতে চাইবে না? মাহের ইসলাম: পাবর্ত্য চট্টগ্রামবিষয়ক গবেষক