ধান-চালের দাম বৃদ্ধি

কাযর্কর পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
হঠাৎ করেই নতুন বছরের শুরুতে ধান ও চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। মান ভেদে ধানের দাম মণে বেড়েছে বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আর চালের দাম ৫০ কেজির বস্তায় বেড়েছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পযর্ন্ত। সে হিসাবে নতুন বছরে কেজিতে ধানের দাম বেড়েছে আড়াই থেকে ৩ টাকা। আর চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২ থেকে ৫ টাকা। অভিযোগ উঠেছে, চালের মিল মালিকরা কারসাজি করে চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তবে মিল মালিকদের একটি পক্ষের দাবি চালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। সরকারের বেঁধে দেয়া দামের মধ্যেই চাল বিক্রি হচ্ছে। আর ব্যবসায়ীদের একপক্ষ থেকে বলা হচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের পরে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে চালের দাম কমে স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কারণ বতর্মানে ধান বা চালের কোনো ঘাটতি নেই। নিবার্চনের আগে ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মোটা চালের দাম বেড়ে হয়েছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। এ হিসাবে মোটা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪ টাকা। চালের দাম নিয়ে চালবাজি চলছে অনেকদিন থেকেই। এর পেছনে নানা কারণ যুক্ত রয়েছে । কখনো সরকারের পক্ষ থেকে অধিক হারে আমদানি শুল্ক আরোপ, কখনো অসৎ ও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী কতৃর্ক চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা। আবার কখনো কখনো আবার চালের দাম বৃদ্ধিতে দায়ী হয় প্রাকৃতিক দুযোর্গও। অবাক ব্যাপার বাজারে একবার চালের দাম বৃদ্ধি পেলে তা আর কমে না। কখনো কখনো কমলেও তার সুবিধা কোনো না কোনোভাবে বিভিন্ন পযাের্য়র ব্যবসায়ীরাই নিচ্ছেন। দেশের সাধারণ জনগণ এর সুফল ভোগ করতে পারছে না। মোটা চালের দাম বিশ্বে এখন বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে মোটা চালের দাম নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চালের দাম বাড়িয়ে বাজার থেকে অতিরিক্ত প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ব্যবসায়ীদের একটি বিশেষ চক্র। এই ধরনের গণবিরোধী অপকমর্ এর আগেও তারা করেছে। এর আগে চিনি ও পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। এর দায় কে নেবে? এর প্রধান কারণ এ দেশের অসৎ ও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজি। তারা প্রতি বছরই নানা অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায়। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের মাচের্র শেষ দিকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট, সুনামগঞ্জসহ হাওরাঞ্চলের ছয় জেলার দুই লাখ ১৯ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়। ওই সময় থেকেই বাড়ছে চালের দাম। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, এ দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত। ভাতনিভর্র বাঙালি যদি চাহিদা মতো চাল কিনতে না পারে কিংবা কিনতে হয় উচ্চমূল্যেÑ তবে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কি? একদিকে মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে কৃষক ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে বাজারে ধান-চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাসাধারণের মধ্যে নাভিশ্বাস উঠেছে। নতুন সরকারের কাযর্কর উদ্যোগই কেবল পারে এর সমাধান দিতে।