ধষর্ণ রোধ হচ্ছে না

কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ১০ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
কোনোভাবেই রোধ হচ্ছে না অনাকাক্সিক্ষত একেকটি ঘটনা। বরং এমনসব ঘটনা ঘটছেÑ যেন তা আদিম ববর্রতাকেও হার মানায়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, একটি দেশে ধষের্ণর মতো ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর অপরাধমূলক ঘটনা যদি ঘটতেই থাকে, তবে এর ভয়াবহতা আমলে নেয়ার বিকল্প থাকতে পারে না। সঙ্গত কারণেই এমন ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি এই ধরনের ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা অপরিহাযর্ বলেই প্রতীয়মান হয়। আর তা না হলে সবর্স্তরে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তা অত্যন্ত আতঙ্কজনক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করবে, যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল যে, ডেমরায় দুই শিশু হত্যার শিকার হয়েছে। শিশু দুটির পরিবার থেকেই অভিযোগ করা হয়েছে যে, মৃত্যুর আগে তারা ধষের্ণর শিকার হয়েছিল। দুই শিশুর সন্দেহভাজন হত্যাকারী মোস্তফাকে গ্রেপ্তার ও ফঁাসির দাবি জানিয়ে গত মঙ্গলবার রাস্তায় নেমেছে এলাকাবাসী এমন খবরও পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে। এ ছাড়া গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন সড়কে দুই বছরের শিশু মৃত্যুর আগে ধষের্ণর শিকার হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছে শিশুটির পরিবার। আমরা বলতে চাই, যখন এমন চিত্র পরিলক্ষিত হয়, তখন এটা কী ধরনের পরিস্থিতিকে নিদের্শ করে তা সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখার অবকাশ রাখে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে একের পর ধষের্ণর ঘটনা পত্রপত্রিকায় উঠে আসছে তা অত্যন্ত ভয়ানক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার, ঘটনাগুলো আমলে নিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা। বলা দরকার, সাতক্ষীরা আশাশুনিতে দ্বিতীয় শ্রেণি পড়–য়া শিশুকে ধষের্ণর পর হত্যার প্রতিবাদেও গত মঙ্গলবার রাস্তায় নেমেছিল মানুষ। এর মধ্যেই ঢাকার তুরাগে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ধষের্ণর শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। শিশুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া নোয়াখালীর সুবণর্চর উপজেলায় স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে এক নারীকে ধষের্ণর ঘটনায় করা মামলায় এজাহারভুক্ত তিনি আসামি এখনো ধরাছেঁায়ার বাইরে রয়ে গেছে বলেও জানা গেছে। সঙ্গত কারণেই আমরা বলতে চাই, যদি একের পর এক ধষের্ণর মতো ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটতে থাকে তবে এর ভয়াবহতা কীরূপÑ তা আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই এবং এমন ঘৃণ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রসঙ্গত, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পযর্ন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধষের্ণর শিকার হয়েছে ৭১১ জন। ধষের্ণর পর হত্যা করা হয়েছে ৬০ জনকে। ধষর্ণ চেষ্টা করা হয়েছে ৯৮ জনকে। আর ধষের্ণর পর আত্মহত্যা করেছে ৭ জন। আমরা বলতে চাই, কেন এমন ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর ঘটনা একের পর এক ঘটছেই, তা খতিয়ে দেখতে হবে সংশ্লিষ্টদের এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। সবোর্পরি বলতে চাই, ধষর্ণসহ এবং নানাভাবে নারীরা প্রতিনিয়ত নিযার্তনের শিকার হচ্ছেÑ ফলে এই বাস্তবতাকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। নারীরা নিজ যোগ্যতা বলে গুরুত্বপূণর্ কাজ সম্পাদন করছে, দেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অবদান রাখছে. শিক্ষার হার বাড়ছে. রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। এমন অবস্থায় যদি নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয়, তবে এর চেয়ে পরিতাপের আর কী বা হতে পারে! সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে ধষের্ণর মতো ভয়ঙ্কর ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।