পাসপোটর্ সূচকে এগিয়েছে দেশ

উন্নয়ন অব্যাহত থাক

প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
তথ্যপ্রযুক্তির উৎকষর্ এবং সরকারের নানামুখী প্রচেষ্টায় আন্তজাির্তক অঙ্গনে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের সুনাম উত্তরোত্তর বাড়ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় যুক্ত হলো আরেকটি সাফল্য। এবার বৈশ্বিক পাসপোটর্ সূচকে তিন ধাপ এগিয়ে ৯৭তম অবস্থানে এসে দঁাড়িয়েছে বাংলাদেশ। ভিসা ছাড়া শুধু পাসপোটর্ দিয়ে বিদেশ ভ্রমণের সুবিধার ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী এই সূচক তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নাগরিকত্ব ও পরিকল্পনাবিষয়ক ফামর্ হেনলি। জরিপ অনুযায়ী পূবের্র ১০০তম অবস্থান থেকে তিন ধাপ এগিয়ে ৯৭তম স্থানে আসার বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। আর আন্তজাির্তক সংবাদমাধ্যম বলছে, বিনা ভিসায় বা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় বিদেশ ভ্রমণ সুবিধার ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশের পাসপোটের্র মূল্যায়ন করে আসছে হেনলি অ্যান্ড পাটর্নারস। অপরদিকে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোটর্ অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) তথ্য ব্যবহার করে তৈরি এটিই বিশ্বের একমাত্র সূচক। গণমাধ্যমের তথ্য মতে, বুধবার হেনলি অ্যান্ড পাটর্নারসের ওই পাসপোটর্ সূচকটি প্রকাশ হয়। এতে দেখা যায়, বিনা ভিসায় বিশ্বের ৪১টি দেশে ভ্রমণের সুবিধা নিয়ে লেবানন, লিবিয়া এবং দক্ষিণ সুদানের সঙ্গে যৌথভাবে ৯৭তম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভিসা ছাড়া শুধু পাসপোটর্ দিয়ে ৩৩টি দেশ ভ্রমণের সুবিধা নিয়ে ১০২তম অবস্থানে আছে পাকিস্তান। তবে ভারত বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। ৬১টি দেশে ভ্রমণ সুবিধা নিয়ে বৈশ্বিক পাসপোটর্ সূচকে ৭৯তম অবস্থান নিয়েছে দেশটি। সূচকে বাংলাদেশের পাশাপাশি অবস্থানে আছে শ্রীলঙ্কা। শুধু পাসপোটর্ দিয়ে ৪৩ দেশে ভ্রমণ সুবিধা নিয়ে এশিয়ার এ দেশটি ৯৫তম র‌্যাংকিংয়ে। তা ছাড়া নেপাল রয়েছে ৪০টি দেশে ভিসা ছাড়া পাসপোটর্ দিয়ে ভ্রমণ সুবিধার ৯৮তম স্থানে। মিয়ানমার ৯০তম অবস্থানে। দেশটির ভ্রমণের অধিকার আছে ৪৮ রাষ্ট্রে। বলাই বাহুল্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, আমদানি-রপ্তানি থেকে শুরু করে নানান প্রয়োজনেই একটি দেশের নাগরিককে অন্য দেশে গমনাগমন করতে হয়। দেখা গেছে, বিদেশ ভ্রমণের জন্য অনেক সময় ভিসা ও এয়ার টিকেট অপ্রাপ্তিজনিত জটিলতার কারণে এই গমনাগমন ব্যাহত হয়। এতে আথির্ক ক্ষতিরও শিকার হতে হয় ভ্রমণেচ্ছুদের। সুতরাং নাগরিকের সুবিধাথের্ ‘পোটর্-ভিসা ব্যবস্থা’ তথা ‘অন-অ্যারাইভাল ভিসা’র (বিমাবন্দরে নামার পর দেয়া ভিসা) প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকারের সুযোগ থাকে না। বলা চলে, দিন দিন এই ভিসার চাহিদাও বাড়ছে। অন্যদিকে এ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও বাণিজ্যসহ নানাবিধ চুক্তি ও সমঝোতা থাকাও আবশ্যক। অন-অ্যারাইভাল ভিসা প্রদানকারী রাষ্ট্রে পেঁৗছে ভ্রমণেচ্ছু ব্যক্তিকে ভিসার শতর্ মেনে আবেদন করলে সংশ্লিষ্টরা তা অনুমোদন করেন। এতে পাসপোটর্ও হতে হয় তথ্যসমৃদ্ধ ও আন্তজাির্তক মানের। বাংলাদেশে আগে এনালগ (হাতে লেখা) পাসপোটর্ থাকলেও তথ্যপ্রযুক্তির উৎকষের্র কারণে সরকার বেশ কয়েক বছর আগেই মেশিন রিডেবল (এমআরপি) পাসপোটর্ চালু করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করে অন-অ্যারাইভাল ভিসা ব্যবস্থা চালু করে। বাংলাদেশের একজন নাগরিক এ প্রক্রিয়ায় বতর্মানে বিশ্বের ৪৩টি দেশে যাতায়াত করতে পারেন। উল্লেখ্য, সূচকের তথ্য মতে, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোটর্ জাপানের। এ দেশের পাসপোটর্ দিয়ে ১৯০টি দেশে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করা যায়। এরপরেই আছে সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া। তাদের পাসপোটর্ দিয়ে ১৮৯টি দেশে ভ্রমণ করা যায়। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ১০ পাসপোটের্র তালিকায় এই এক ও দুই নম্বরে অবস্থানের তিনটি দেশ ছাড়াও আছে ফ্রান্স ও জামাির্ন, ডেনমাকর্, ফিনল্যান্ড, ইতালি, সুইডেন, লুক্সেমবাগর্ ও স্পেন। এ ছাড়া যৌথভাবে ছয় নম্বর অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তাদের ভ্রমণের সুবিধা আছে ১৮৫টি দেশে। আর সাত নম্বর অবস্থানে আছে কানাডা। সবোর্পরি, যেহেতু বাংলাদেশের নাগরিককে নানা প্রয়োজনেই বিদেশ ভ্রমণে যেতে হয়, সেহেতু ভ্রমণের প্রক্রিয়া হওয়া দরকার ঝামেলাহীন এবং সহজ। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টরা কাযর্কর উদ্যোগ নিলে বাংলাদেশের নাগরিকের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণের দেশের সংখ্যা আরও বাড়ানো অসম্ভব নয়। লক্ষ্য করেছি, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বৈষম্য বিলোপ, শান্তি, অথর্নীতিসহ বৈশ্বিক নানান সূচকে বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্র স্পষ্ট। ফলে প্রত্যাশা থাকবে, দেশের বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে।