বিচারবহিভ‚র্ত হত্যাকাÐ

কাযর্কর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
গত বছর সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধ এবং তাদের হেফাজতে ৪৬৬ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে; আর এর অধেের্কর বেশি নিহত হয়েছে শুধু মাদকবিরোধী অভিযানেই। সম্প্রতি, ২০১৮ সালে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) এক পযের্বক্ষণে এ চিত্র উঠে এসেছে। প্রসঙ্গত, ঢাকা রিপোটার্সর্র্ ইউনিটিতে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে পযের্বক্ষণের তথ্য প্রকাশ করে আসকের উপ-পরিচালক নীনা গোস্বামী বলেছেন, ২০১৮ সালে আইনশৃঙ্খলা বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এবং তাদের হেফাজতে মোট যে ৪৬৬ জন নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে ৪ মে থেকে ৩১ ডিসেম্বর পযর্ন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ২৯২ জন। এছাড়া ২০১৭ সালেও কথিত বন্দুকযুদ্ধে ১৬২ জন নিহত হয়েছিলেন বলে তথ্য উঠে এসেছে। আমরা বলতে চাই, যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধ এবং তাদের হেফাজতে নিহতের এই সংখ্যা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে সামনে এলো, তখন এটি আমলে নেয়ার কোনো বিকল্প থাকে না। তথ্য পযের্বক্ষণসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করবেন এমনটি কাম্য। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আসকের উপ-পরিচালক বলেছেন, ২০১৮ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ, গুম ও নিখেঁাজ হয়েছেন ৩৪ জন। এদের মধ্যে ১৯ জনের সন্ধান পাওয়া গেছে, যাদের অধিকাংশই বিভিন্ন মামলায় আটক রয়েছেন। এ ছাড়া গত বছর জাতীয় নিবার্চনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পযর্ন্ত সারা দেশে অন্তত ৪৭০টি সহিংসতার ঘটনায় ৩৪ জন নিহত হয়েছেন- এমন তথ্য উঠে এসেছে; যেখানে এসব সহিংসতায় নিহতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিÑ ১৯ জনই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কমীর্-সমথর্ক। এর বাইরে বিএনপির চারজন ও একজন আনসার সদস্যের পাশাপাশি ১০ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন। আমরা বলতে চাই, গত বছর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ও অন্যান্য দলের এবং নিজেদের মধ্যে কোন্দলের জেরে ৭০১টি রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনায় ৬৭ জন নিহত এবং ৭ হাজার ২৮৭ জন আহত হয়েছেন বলে আসকের পযের্বক্ষণে বলা হয়েছে। ২০১৮ সালে নারী নিযার্তনের চিত্র তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত বছর সারা দেশে ধষর্ণ ও গণধষের্ণর শিকার হয়েছেন ৭৩২ জন। তাদের মধ্যে ধষর্ণ পরবতীর্ হত্যার শিকার হয়েছেন ৬৩ জন আর ধষের্ণর পর আত্মহত্যা করেছেন সাত জন। এ ছাড়া নিবার্চনের রাতে নোয়াখালীর সুবণর্চরের এক গৃহবধূকে দলবেঁধে ধষের্ণর বিষয়টিও এসেছে আসকের প্রতিবেদনে। উল্লেখ্য, বন্দুকযুদ্ধে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নিহত হওয়ার ঘটনা ছাড়াও, গৃহকমীর্ নিযার্তন, সাংবাদিকের শারীরিক নিযার্তন ও হামলার শিকার হওয়া এবং হত্যার শিকার হওয়া ছাড়াও শিশু নিযার্তন ও ধষের্ণর যেসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, তা সাবির্কভাবেই উদ্বেগজনক বলে প্রতীয়মান হয়। আমরা মনে করি, এই পরিস্থিতি আমলে নেয়া এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। সবোর্পরি বলতে চাই, সংবাদ সম্মেলনে আসকের নিবার্হী পরিচালক বিচারবহিভ‚র্ত হত্যাকাÐের তদন্তে কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘একটি স্বাধীন দেশে এসব হত্যাকাÐ হোক তা আমরা চাই না।’ আমরা বলতে চাই, শুধু এবারই নয়, বিভিন্ন সময়েই বিচারবহিভ‚র্ত হত্যাকাÐের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে, এ ছাড়া বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রতিনিয়তই নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ও অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছেই যা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টরা যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে এমনটি কাম্য।