দেশবাসীর আস্থার মূল্য দিতে হবে মন্ত্রীদের

প্রকাশ | ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অ্যাডভোকেট শেখ সালাহ্উদ্দিন আহমেদ ঢাকা
অনেকটা চ্যালেঞ্জ নিয়েই নতুন মুখ আর তারুণ্যের জয়জয়কার আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন চতুথর্ মেয়াদের সরকারে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা তৃতীয়বারের মতো নতুন সরকার শপথ নিয়েছেন। নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া ৪৭ জনের সবাই আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা এবং তাদের ৪৪ জন একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে নিবাির্চত সংসদ সদস্য। বাকি তিনজন স্থান পেয়েছেন টেকনোক্র্যাট কোটায়। মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি ১৪-দলীয় জোটের শরিক জাসদ, ওয়াকার্সর্ পাটির্, জেপিসহ অন্যান্য দলের সদস্যরা। শপথ নেয়ার পর মন্ত্রিসভার সদস্যরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করেছেন। বলেছেন প্রধানমন্ত্রী তথা জনগণের আস্থা অজের্ন তাদের ওপর অপির্ত দায়িত্ব তারা সঠিকভাবে পালনের চেষ্টা করবেন। দেশকে এগিয়ে নেয়ার চ্যালেঞ্জ তারা সঠিকভাবে মোকাবেলা করারও অঙ্গীকার করেছেন। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের অঙ্গীকারগুলো খুবই প্রাসঙ্গিক ও তাৎপযের্র দাবিদার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন তার বড় অংশ রাজনীতির পোড় খাওয়া মানুষ হলেও মন্ত্রী হিসেবে নতুন। মন্ত্রী হিসেবে অভিজ্ঞতা না থাকলেও দেশবাসীর প্রত্যাশা কী, তা তাদের অজানা নয়। এ প্রত্যাশা পূরণে শতভাগ আন্তরিক হলে অভিজ্ঞতার অভাব কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। নতুন মন্ত্রীদের এ-সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা পূরণ করতে হবে সদিচ্ছা দিয়ে। দেশের মানুষের জীবনমান উন্নততর করার লক্ষ্য নিয়েই সবাইকে কাজ করতে হবে। নিজেদের মন্ত্রণালয়কে দুনীির্তমুক্ত করার প্রয়াস চালাতে হবে নিরন্তরভাবে। পক্ষপাতহীনভাবে নিতে হবে প্রতিটি সিদ্ধান্ত। সব ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক হতে হবে। গত এক দশকে বাংলাদেশ দৃষ্টিগ্রাহ্যভাবে এগিয়েছে। তবে নানা সীমাবদ্ধতার কারণে এর সুফল সাধারণ মানুষের জন্য শতভাগ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। নতুন মন্ত্রীদের এ বিষয়গুলোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। নিজেরাই সৎ থাকা নয়, মন্ত্রণালয়ের কোথাও যাতে দুনীির্ত ও অসততা বাসা বঁাধতে না পারে সে ব্যাপারে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর গতি ও সততাকে অনুকরণীয় ভেবে দেশ গঠনে জোর কদমে চলার মানসিকতা পোষণ করতে হবে। ৩০ ডিসেম্বরের নিবার্চনে অজির্ত বিপুল জয়ে অহংকারে না ভুগে জনপ্রত্যাশা পূরণকে মন্ত্রীরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেবেন এমনটিই প্রত্যাশিত। মন্ত্রীরা কতটা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবেন তার ওপর তাদের নিজেদের সুনামও নিভর্রশীল। তাদের মন্ত্রী করে প্রধানমন্ত্রী যে আস্থা রেখেছেন তার প্রতিদান দিতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। দেশবাসীর মণিকোঠায় স্থান পেতে হতে হবে শতভাগ আন্তরিক। এটি তাদের সবারই কতর্ব্য বলে বিবেচিত হবে এ প্রত্যাশা দেশবাসীর। আমাদেরও। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, সংসদীয় রাজনীতিতে শক্তিশালী বিরোধী দলের কোনো বিকল্প নেই। বিরোধী দলের অবস্থান শক্তিশালী হলে সরকারও দায়িত্বশীল হওয়ার তাগিদ অনুভব করে। সুশাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে যার কোনো বিকল্প নেই। জাতীয় পাটির্ বিরোধী দলে যোগ দেয়ায় জাতীয় রাজনীতিতে সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেদের তুলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি হবে। গণতন্ত্রের জন্যও এ সিদ্ধান্ত বিবেচিত হবে আশীবার্দ হিসেবে। আমরা আশা করব বিরোধী দলে ভ‚মিকা রাখার সিদ্ধান্তই শুধু নয় সংসদকে জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার জন্যও জাতীয় পাটির্র সদস্যরা সক্রিয় হবেন। সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারাকে এগিয়ে নিতে তারা তাদের মেধা ও মননশীলতা কাজে লাগাবার চেষ্টা করবেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকার ও বিরোধী দল মুদ্রার দুই পিঠ। দুই পিঠকে উজ্জ্বল রাখতেই বিরোধী দলে যোগদানের যে সময়োচিত সিদ্ধান্ত জাতীয় পাটির্র পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে, আমরা তাকে স্বাগত জানাই।