১৬ দিনের শিশুর মমাির্ন্তক মৃত্যু

নিরাপদ হোক জীবন

প্রকাশ | ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শিশু নিযার্তন, ধষর্ণ, অপহরণ ও হত্যার ঘটনা সমাজে উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গিয়েছে। ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে কিছু কিছু মানুষ শিশুদের ওপর অমানুষিক নিযার্তন চালাচ্ছে। একশ্রেণির পিশাচ পুরুষ কোমলমতি শিশুদের ধষর্ণ করছে। এই নিপীড়নকারীরা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে শিশুদের হত্যা পযর্ন্ত করছে। আবার নিযার্তনের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আপলোড করা হচ্ছে। এ সমাজে শিশুরা কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানীর মিরপুরে নিমার্ণাধীন ভবনের ওপর থেকে ইট পড়ে মো. আবদুল্লাহ নামে ১৬ দিন বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মিরপুর-১ নম্বর সেকশনের পাইকপাড়া ৬০ ফিট রাস্তার পাশে মমাির্ন্তক এ ঘটনাটি ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় শিশুটিকে প্রথমে আগারগঁাও শিশু হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। সেখানে কতর্ব্যরত চিকিৎসকরা দুপুর ১টার দিকে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুটির মৃতদেহ ঢামেক মগের্ রাখা হয়েছে। নিহত আবদুল্লাহর বাবার নাম কবির হোসেন। তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মুলাদী উপজেলায়। বতর্মানে স্ত্রী লাইজু ও মেয়ে আয়েশাকে নিয়ে মিরপুর ১ নম্বর সেকশনের পাইকপাড়া ৬০ ফিট রাস্তার পাশে একটি টিনশেড বাড়িতে ভাড়া থাকেন। ১৬ দিন আগে মিরপুরের একটি হাসপাতালে আবদুল্লাহ জন্মগ্রহণ করে। শুক্রবার আবদুল্লাহকে কোলে নিয়ে খালা তামিম সুলতানা রোদ পোহানোর জন্য বাসার সামনে দঁাড়িয়ে ছিল। নিমার্ণাধীন একটি চারতলা ভবনের ছাদ থেকে একটি ইট আবদুল্লাহর মুখে এসে পড়ে। কী মমাির্ন্তক মৃত্যু, ভাবাও যায় না। শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখার দিন কয়েক পরেই পরপারে চলে গেল। এর জন্য দায়ী কে? নিমার্ণাধীন ভবনের ওপর থেকে ইট পড়ে কীভাবে শিশুটি নিহত হলো তার যথাযথ তদন্ত হওয়া জরুরি। অপরাধীর শাস্তি হওয়াও জরুরি। কারণ এই ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র নিহত হয়েছে একই ধরনের ঘটনায়। যারা ভবন নিমার্ণ করেন তাদের আরো সচেতন ও সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। পাশাপাশি জনসাধারণকে এ ব্যাপারে আরো অধিক সচেতন হতে হবে। আমরা মনে করি, শিশুদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে তাদের কল্যাণের ব্যাপারে সরকারকে আরো বলিষ্ঠ ভ‚মিকা পালন করা উচিত। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ত্বরান্বিত করতে সবার আগে তাদের সাবির্ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। যত্রতত্র শিশুদের প্রাণ চলে যাবে এটা কোনোভাবেই সমথর্নযোগ্য নয়। অনস্বীকাযর্ যে, মানবিকতা চচার্র বিষয়টি সমাজ থেকে প্রায় উঠে গেছে। বিশ্বায়নের কুফল পড়তে শুরু করেছে আমাদের সমাজে। শুধু সামাজিক বন্ধন ও মূল্যবোধই নয়, বদলে যেতে শুরু করেছে মানুুষের আচরণও। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সমাজে। মানুষের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে। সামান্য কারণে ধৈযর্চ্যুতি ঘটছে। সুকুমারবৃত্তি চচার্ উঠে গিয়ে মানবিক বোধশূন্য হয়ে পড়ছে মানুষ। রাজনৈতিক দুবৃর্ত্তায়নের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসততা। সাম্প্রতিক ধারাবাহিক শিশু নিযার্তন ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে এমন ধারণা অযৌক্তিক নয়। ভুলে গেলে চলবে না, আজকের শিশুরাই আগামী দিনে দেশের কণর্ধার, ভবিষ্যৎ কাÐারি। তাদের নিরাপত্তা যদি নিশ্চিত করা না যায় এবং রাষ্ট্র যদি তাদের মেধা বিকাশে ও নিরাপত্তাদানে কাযর্কর পদক্ষেপ না নেয় তবে তা কেবল দুভার্গ্যজনকই নয়, দেশের ভবিষ্যতের জন্যও হুমকি স্বরূপ।