জীবনযাত্রার ব্যয়

সঙ্গতিপূণর্ হোক

প্রকাশ | ১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মানুষের জীবন যাপনের প্রশ্নে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সঙ্গতির বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। ফলে ব্যয় বৃদ্ধির মতো ঘটনা ঘটলে তার পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ উদ্যোগও জারি রাখতে হবে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল যে, সদ্য সমাপ্ত ২০১৮ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৬ শতাংশ। পণ্যমূল্য ও সেবা সাভিের্সর মূল্য বেড়েছে ৫ দশমিক ১৯ শতাংশ। যদিও রাজধানীর খুচরা বাজার ও বিভিন্ন সেবার দাম বিশ্লেষণ করে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব বলেছে যে, বিদায়ী বছরে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আগের বছরের চেয়ে কম বেড়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসা ও যাতায়াত ব্যয় বাদ দিয়ে জীবনযাপনের ব্যয়-সংক্রান্ত প্রতিবেদন শনিবার ঢাকা রিপোটার্সর্র্ ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করে বেসরকারি সংগঠনটি। তথ্যমতে, ঢাকা শহরের ১৫টি খুচরা বাজারের ১১৪টি খাদ্যপণ্য, ২২টি নিত্যব্যবহাযর্ সামগ্রী এবং ১৪টি সেবা সংস্থার তথ্য নিয়ে এই পযাের্লাচনা প্রতিবেদন তৈরি করেছে ক্যাব। আমরা মনে করি, এসব তথ্য ও সামগ্রিক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। কেননা এটা মনে রাখা জরুরি যে, যদি জনসাধারণের জীবন যাপনের ব্যয়, আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূণর্ না হয় তবে এর প্রভাব ইতিবাচক হবে না আর তা আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকেই সামনে আনবে। যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সঙ্গত কারণেই জনজীবনের ব্যয় এবং আয়ের সামগ্রিক চিত্র পযের্বক্ষণসাপেক্ষে করণীয় নিধার্রণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন জরুরি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পূবর্বতীর্ ২০১৭ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছিল ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ, পণ্যমূল্য ও সেবাসাভিের্সর মূল্য বেড়েছিল ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। অথার্ৎ আগের বছরের চেয়ে গত বছর জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ পয়েন্ট কম। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের মনে রাখতে হবে, ব্যয় বৃদ্ধি কম হলেও ব্যয় যে বেড়েছে এটাকে এড়ানোর সুযোগ নেই। লক্ষণীয় যে, ভোক্তার ঝুলিতে যেসব পণ্য ও সেবা রয়েছে সেসব পণ্য ও সেবা পরিবারের মোট ব্যয়ের সঙ্গে তুলনা করে পণ্য ও সেবার ওজনের ভিত্তিতে শহুরে জীবনযাত্রার ব্যয়ের এই হিসাব বের করেছে ক্যাব। ফলে দেশের মোট জনসংখ্যার বড় অংশ গ্রামে থাকলেও নিজেদের সামথের্্যর অভাবে ব্যয়ের সাবির্ক চিত্র তুলে আনা সম্ভব হয়নি জানিয়েই ক্যাব চেয়ারম্যান বলেছেন, শহুরে এই হিসাব সাবির্ক চিত্র সম্পকের্ একটি আংশিক ধারণা দেবে। ক্যাবের পযের্বক্ষণ বলছে, ২০১৮ সালে অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ছিল। ২০১৮ সালে এর আগের বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে সাবানের। এছাড়া চাল, মাছ, শাকসবজি, পান-সুপারি, তরল দুধের মতো পণ্যতে দাম বেড়েছে। আর ২০১৮ সালে এর আগের বছরের তুলনায় ডাল, লবণ, মসলা, চিনির দাম কিছুটা কমেছে। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই যে, যখন মানুষের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের বিষয়টি সঙ্গতিপূণর্ হবে তখন জনজীবনে স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এমন বিষয়ও উঠে এসেছে যে, ব্যয় অনুপাতে একজন ব্যক্তির আয় বৃদ্ধি না পেলে সেটা স্বস্তিদায়ক হবে নাÑ ফলে এই বিষয়টি আমলে নিতে হবে। মনে রাখা দরকার, বিভিন্ন সময়েই পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ ব্যয় বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে ভোক্তা অসন্তোষের বিষয় আলোচনায় এসেছে। তাই আয় বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেয়ার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। আর আয় বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। কেননা ব্যয় বৃদ্ধির তুলনায় মানুষের আয় যদি বৃদ্ধি হয় তাহলে সেটাই হবে ইতিবাচক। আর সেই লক্ষ্যে যথাযথ উদ্যোগ জারি থাকবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।