তামাকমুক্ত বাংলাদেশ

নিতে হবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা

প্রকাশ | ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
তামাকের ক্ষতিকর দিক কিংবা এর কুপ্রভাবের কথা কমবেশি সবারই জানা। আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে 'তামাকমুক্ত বাংলাদেশ' গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে 'তামাকমুক্ত বাংলাদেশ' গড়ে তোলার লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। পরিবেশ-প্রতিবেশ, জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার বন্ধে আমাদের আন্তরিক হতে হবে। বিশেষ করে তরুণসমাজকে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার হতে দূরে রাখতে রেডিও, টিভি, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে অভিভাবকসহ সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। দেশে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষের মৃতু্যর কারণ তামাকের আগ্রাসন। পরোক্ষ ধূমপান অধূমপায়ীদের হৃদরোগের ঝুঁকি ২৫-৩০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় শতকরা ২০ থেকে ৩০ ভাগ। দেশে ক্রমবর্ধমান ই-সিগারেটের ব্যবহার ভয়াবহ পর্যায়ে যাওয়ার আগেই এটি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। বাংলাদেশে ই-সিগারেট আমদানি, উৎপাদন, বিক্রি, বিপণন ও ব্যবহার বন্ধে এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের জন্য সংসদ সদস্যরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক সংগঠন, এনজিওসহ সবার সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের 'তামাকমুক্ত বাংলাদেশ' গড়ে তুলতে হবে। আন্তর্জাতিক নানা গবেষণায় ই-সিগারেট মারাত্মক স্বাস্থ্য হানিকর প্রমাণিত হওয়ার পরও বাংলাদেশে ই-সিগারেটের বৈধ ব্যবসার সুযোগ দাবি করেছে। তামাক কোম্পানির এ ধরনের অপচেষ্টা এখনই প্রতিরোধ করতে না পারলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের পদক্ষেপগুলো ও এর বাস্তবায়ন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। আমরা মনে করি, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া এত সহজ নয়। প্রকাশ্যে ধূমপানের জন্য ৩০০ টাকা জরিমানার বিধান থাকা সত্ত্বেও মানুষ আইন মানছে না। সর্বত্রই চলছে ধূমপান- যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। আইন না মানার প্রবণতা বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে। সবার আগে মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। তামাক কোম্পানির এ ধরনের অপচেষ্টা এখনই প্রতিরোধ করতে না পারলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের পদক্ষেপগুলো ও এর বাস্তবায়ন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। যদি জনগণের রুচি ও মানসিকতার পরিবর্তন না হয় তা হলে কীভাবে সম্ভব তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া। সিগারেটের গায়ে লেখা থাকে সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তারপরেও তো মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ধূমপানের দিকে। বিশেষ করে আমাদের তরুণসমাজ ধূমপানসহ নানা ধরনের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। কেবল তরুণসমাজই নয়, কিশোররাও এখন ধূমপানসহ নানা ধরনের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। এটা সমাজের জন্য এক বিপজ্জনক বার্তা। আমরা চাই ধূমপানমুক্ত সমাজ ও দেশ। এটা একদিনেই হবে না। এর জন্য সরকারকে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। আমরা চাই, ধূমপানমুক্ত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ। দেশের মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে হলে এর বিকল্প নেই।