রাষ্ট্রপতির ভাষণ

ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান

প্রকাশ | ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
গত বৃহস্পতিবার সংসদে বছরের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ভাষণে তিনি নতুন প্রজন্মের জন্য সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য যে, রাষ্ট্রপতি হিসেবে এটাই সংসদে তার সর্বশেষ ভাষণ। দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনের পর আগামী এপ্রিলে বিদায় নেবেন তিনি। আমরা বলতে চাই, রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে নতুন প্রজন্মের জন্য সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার যে আহ্বান জানিয়েছেন- তা অত্যন্ত গুরুত্ববহন করে এবং তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা, একটি দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জনের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। সম্মিলিত প্রচেষ্টাই কেবল পারে দেশকে এগিয়ে নিতে। ফলে দেশ ও মানুষের কল্যাণে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রশ্নে রাষ্ট্রপতির আহ্বানে সাড়া দিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে এমনটি কাম্য। উলেস্নখ্য, দেশবাসীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে ভাষণ শুরু করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বিরাজমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন। এ ছাড়া সামগ্রিক পরিস্থিতি তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, 'জাতীয় জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ আমরা অতিবাহিত করছি। ২০২২ সাল আমাদের জন্য ছিল চ্যালেঞ্জের একটি বছর। সমগ্র বিশ্বই পার করছে এক কঠিন সময়। করোনা অতিমারি আমরা সফলভাবে মোকাবিলা করে অর্থনীতির গতিশীলতা বজায় রাখতে সক্ষম হলেও রাশিয়া এবং ইউক্রেইনের যুদ্ধ আমাদের এই অগ্রযাত্রাকে শ্লথ করেছে।' কিন্তু তারপরও ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটের আকার ১৪ শতাংশ বেড়ে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকায় উন্নীত হওয়ার বিষয়টিও তিনি উলেস্নখ করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জনের পটভূমি তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, স্বাধীন সার্বভৌম এ দেশে জনগণই সব ক্ষমতার উৎস এবং তাদের সব প্রত্যাশার কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেওয়া আমাদের পবিত্র কর্তব্য।' দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণভাবে নির্মূলের মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ-প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাঙালি জাতিকে আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে বলেও তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। আমরা মনে করি, ভাষণে যে বিষয়গুলো আলোকপাত করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ- তা আমলে নিয়ে সর্বাত্মক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। বলা দরকার, সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে বলেছেন, 'আপনারা জনপ্রতিনিধি, তাই জনস্বার্থকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে স্থান দিতে হবে।' এই বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ- যা অনুধাবন করে জনপ্রতিনিধিদের কাজ করতে হবে দেশের জন্য মানুষের জন্য। প্রসঙ্গত, দেশের অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে জাতি এগিয়ে যাক ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, আত্মমর্যাদাশীল বঙ্গবন্ধুর সমৃদ্ধ 'সোনার বাংলা' গড়ার পথে- এমন আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন রাষ্ট্রপতি। তিনি সরকারের যুগোপযোগী ও নারীবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণের ফলে বাংলাদেশের নারীরা দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে বলেও ভাষণে উলেস্নখ করেন। অন্যদিকে করোনার অভিঘাত মোকাবিলায় বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজের কার্যকর বাস্তবায়নের ফলে অর্থনীতিতে গতিশীলতা ধরে রাখা সম্ভব হওয়ার বিষয়টিও আলোকপাত করেছেন। এ ছাড়া বলা দরকার, বৈশ্বিক অর্থনীতির অস্থিতিশীলতা সত্ত্বেও দেশের খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষিত রয়েছে এবং বর্তমানে দেশে খাদ্যশস্য মজুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ১৪ লাখ মেট্রিক টন, যা সন্তোষজনক বলেও রাষ্ট্রপতি জানান। এবারে দেশব্যাপী আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়াসহ নানা দিক তিনি তুলে ধরেন। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, যোগাযোগ, বিদু্যৎ, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্যও ভাষণে তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে যে বিষয়গুলো আলোকপাত করেছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গত কারণেই সার্বিক বিষয়গুলো অনুধাবন করতে হবে। দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধ অর্জনে সবাইকে কাজ করতে হবে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ- নতুন প্রজন্মের জন্য সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার যে আহ্বান জানিয়েছেন তা আমলে নিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।