বাংলাদেশ ৩৫তম অর্থনীতির দেশ

উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে

প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক

একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের সঙ্গে অর্থনৈতিক অগ্রগতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন ও অগ্রগতির বিষয়টি নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের আলোচনাও উঠে এসেছে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। মূলত কানাডিয়ান অনলাইন প্রকাশনা 'ভিজু্যয়াল ক্যাপিটালিস্ট'-এর 'দ্য টপ হেভি গেস্নাবাল ইকোনমি' শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এমন বিষয় উঠে এসেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এই তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার মাত্র দুটি দেশ- বাংলাদেশ ও ভারত ৫০টি বৃহত্তম অর্থনীতির অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আমরা মনে করি, 'ভিজু্যয়াল ক্যাপিটালিস্ট'-এর 'দ্য টপ হেভি গেস্নাবাল ইকোনমি' শীর্ষক প্রতিবেদনের তথ্য আমলে নিতে হবে এবং দেশের অর্থনীতিকে আরো গতিশীল ধারায় এগিয়ে নিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। জানা গেছে, দেশগুলোকে মোট দেশীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ভিত্তিতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আর প্রতিবেদন অনুসারে ৪৬০ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জিডিপি নিয়ে ২০২২ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমলে নেওয়া দরকার, এর আগে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৪১তম। আমরা বলতে চাই, যখন ৪১তম অবস্থান থেকে এখন বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ, তখন বিষয়টি আশাব্যঞ্জক। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে, অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে হবে। প্রসঙ্গত, প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, প্রতিবেশী দেশ ভারত বিশ্ব অর্থনীতিতে পঞ্চম স্থানে চলে গেছে। এর আগে এটি ছিল ষষ্ঠ অবস্থানে। ২০২২ সালে ভারত ৩ দশমিক ৪৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার জিডিপি নিয়ে যুক্তরাজ্যকে (ইউকে) ছাড়িয়ে পঞ্চম স্থান দখল করেছে। তালিকায় প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও জার্মানি। বিশ্বের ১০টি বৃহত্তম অর্থনীতির বাকি পাঁচটি দেশ যথাক্রমে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা, রাশিয়া ও ইতালি। প্রতিবেদন অনুসারে ২০২২ সালে বিশ্বে দুটি বড় ঘটনা ঘটেছে। প্রথমটি হলো- বিশ্বের জনসংখ্যা ৮ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। দ্বিতীয়টি হলো- বিশ্ব অর্থনীতির আকার ১০০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে ১০১ দশমিক ৫৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। আমরা উলেস্নখ করতে চাই, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং একটি শক্তিশালী রপ্তানি বাজারের মানদন্ডে ২০৩৭ সালের মধ্যে ১৯১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ২০তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে বলে এর আগে পূর্বাভাস দিয়েছিল লন্ডনভিত্তিক শীর্ষ স্থানীয় থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর)। এছাড়া বাংলাদেশ গত এক দশকে বিশ্বের দ্রম্নততম বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে বলেও উলেস্নখ করা হয়েছিল। আমরা মনে করি, এখন যখন এমন বিষয় উঠে আসছে যে, বাংলাদেশ বর্তমানে ৩৫তম বৃহত্তর অর্থনীতির দেশ তখন এটি আমলে নিতে হবে এবং দেশের সার্বিক সমৃদ্ধি অর্জন ও অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখতে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি সামগ্রিক অর্থেই আশাব্যঞ্জক। বিভিন্ন সময়ে দেশের অগ্রগতির বিষয় যেমন সামনে এসেছে, তেমনি এটাও মনে রাখতে হবে, নানা ধরনের চ্যালেঞ্জও আলোচনায় এসেছে। ফলে সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। এর আগে এমন আলোচনাও উঠে এসেছিল, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার জন্য বেসরকারি খাতে অর্থায়ন বৃদ্ধি করা অপরিহার্য। এছাড়া সম্পদের গুণমান উন্নত করা, ব্যাংকের মূলধন বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ মোকাবিলা করা আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য জরুরি। ফলে সর্বাত্মক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং সেই মোতাবেক উদ্যোগ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি- এটি যেমন আমলে নিতে হবে, তেমিন অগ্রগতি ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণে সংশ্লিষ্টরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।