ট্রাফিক শৃঙ্খলা

ফিরিয়ে আনতে হবে

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ঘনবসতিপূণর্ রাজধানীতে মানুষ অনেক দুভোর্গ নিয়ে বাস করে। এখানে রয়েছে পানি, গ্যাস সঙ্কট, রয়েছে আবাসন ও নিরাপত্তা সঙ্কট। ব্যয়বহুল জীবনযাত্রায় মানুষ এখানে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে বেঁচে আছে। এসব সমস্যা ছাড়াও রাজধানীর মানুষ যে দুভোের্গর শিকার প্রতিদিনই হচ্ছে সেটি হলো ভয়াবহ যানজট। যাতায়াত সমস্যা এখন নগরবাসীর জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে দঁাড়িয়েছে। স্কুলগামী শিক্ষাথীর্ থেকে শুরু করে চাকরিজীবী প্রতিটি মানুষকে প্রতিদিন চরম দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। এর ওপর আথির্ক ক্ষতি তো আছেই। যানজট থেকে হাসপাতালের রোগী পযর্ন্ত রেহাই পাচ্ছে না। পাশাপাশি গণপরিবহনের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে শিক্ষাথীের্দর আন্দোলনের পর থেকেই। জনমনে স্বস্তি নেই, শান্তি নেই, ভোগান্তির শেষ নেই। এর প্রধান কারণ সড়কে শৃঙ্খলা বা ট্রাফিক শৃঙ্খলা না থাকা। এর জন্য মূলত গাড়ির চালকরা দায়ী। পাশাপাশি পথচারীরাও কম দায়ী নয়। চালকরা যেমন আইন মেনে গাড়ি চালায় না, একইভাবে পথচারীরাও আইন মেনে রাস্তায় চলাচল করে না। ফলে প্রায়ই দুঘর্টনা ঘটে। বিশেষ করে রাজধানীতে মোটরসাইকেল আরোহীরা বেশ বেপরোয়া। এসবের অবসান হওয়া জরুরি। রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ট্রাফিক শৃঙ্খলা আনতে ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ মঙ্গলবার থেকে ৩১ জানুয়ারি পযর্ন্ত ট্রাফিক শৃঙ্খলা কাযর্ক্রম পরিচালনা করবে। এ সময় জনসাধারণকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করা হবে। ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রাফিক শৃঙ্খলা সপ্তাহ ও ট্রাফিক সচেতনতা মাস পালনের মাধ্যমে ট্রাফিক আইনের কঠোর বাস্তবায়ন ও সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে ঢাকা শহরের ট্রাফিক শৃঙ্খলার উন্নতি হচ্ছে। তবে ট্রাফিক আইন না মানার সংস্কৃতি এবং ট্রাফিক আইন বাস্তবায়নে অপযার্প্ত ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সুবিধা ও বিভিন্ন সমস্যার কারণে দীঘির্দনের পুঞ্জীভ‚ত সমস্যা রাতারাতি সমাধান সম্ভব না। তবে ট্রাফিক আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং জনসচেতনতার ফলে ঢাকা শহরে ট্রাফিক শৃঙ্খলার উন্নতি এখন বেশ চোখে পড়ছে। জেব্রা ক্রসিংয়ের আগে স্টপ লাইন বরাবর গাড়ি থামানো এবং স্টপেজ ছাড়া যত্রতত্র গাড়ি থামানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাম লেন ঘেঁষে নিধাির্রত স্টপেজে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা নিশ্চিত করবে ট্রাফিক। হাইড্রোলিক হনর্, দ্রæতগতির যানবাহন, বেপরোয়া গতি, হুটার, বিকন লাইট, উল্টো পথে চলাচল এবং মোটরসাইকেলের আরোহীদের হেলমেটসহ সব ধরনের ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে পরিচালিত বিশেষ ট্রাফিক অভিযান এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাযর্ক্রম অব্যাহত রাখা হবে। ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে কাজ করবে রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, গালর্ গাইড, বিএনসিসি সদস্যরা। এসব উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে জীবন-জীবিকার তাগিদে রাজধানীবাসীকে কোনো না কোনো সময় ঘরের বাইরে বের হতেই হয়। প্রায় দেড় কোটি মানুষের বসবাস এই ঢাকায়। সেই তুলনায় পযার্প্ত রাস্তা নেই। রিকশা ও প্রাইভেট কারে চারদিক সয়লাব। এমন অবস্থায় রাজধানীতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হবে এর আর বিচিত্র কী। মনে রাখতে হবে, যানজটজনিত দুভোের্গর অবসান না হলে একদিকে যেমন মানুষের কমর্ঘণ্টা নষ্ট হবে অন্যদিকে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হবেÑ যা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। সুতরাং রাজধানীর অসহনীয় যানজট নিরসনে পরিকল্পিত উদ্যোগ জরুরিভাবে গ্রহণ করতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।