ভেজালবিরোধী অভিযান

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিভিন্ন সময়েই পত্রপত্রিকায় খাদ্যে ভেজালসংক্রান্ত বিষয় আলোচনায় এসেছে। ভেজালবিরোধী অভিযানও পরিচালিত হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এ নিয়ে জনমনেও রয়েছে ব্যাপক উদ্বেগ। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল যে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পক্ষ থেকে গৃহীত খাদ্যে ভেজালবিরোধী অভিযানের শেষ দিন বৃহস্পতিবার পযর্ন্ত মোট ২৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদÐ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া একটি হোটেল সিলগালা, পঁাচটি প্রতিষ্ঠানকে সতকর্ করা এবং মোট ১১ লাখ ৪৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। তথ্য মতে জানা যায়, এবারে ডিএসসিসির পঁাচটি অঞ্চলের আঞ্চলিক নিবার্হী কমর্কতার্ এবং নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে করপোরেশনের পঁাচটি অঞ্চলে অভিযান পরিচালিত হয়। আমরা মনে করি এই বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক। কেননা এটা মনে রাখা দরকার, অপরাধীরা পার পেয়ে গেলে তারা আরও বেশি অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠতে পারেÑ এমন আশঙ্কা থেকেই যায়। সঙ্গত কারণেই ভেজালের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি হওয়াটা জরুরি। প্রসঙ্গত বলতে চাই, মানুষ ভেজাল খাদ্য খেতে বাধ্য হচ্ছে এমন বিষয়ও নানা সময়ে সামনে এসেছে। এর আগে জনমানুষের উদ্বেগ ও ভেজালের ভয়াবহ ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে উচ্চ আদালত থেকেও একাধিকবার সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিদের্শ দেয়া হয়েছে। আর এখন যখন অভিযানে কারাদÐের বিষয়টি সামনে এলো, আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিতেও ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানো। লক্ষণীয় যে, বিভিন্ন সময়েই পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখা গেছে, সরিষার তেল, লবণ, হলুদের গুঁড়া, মধু, গুড়, বিস্কুট, ডাল, সেমাই, জেলিসহ আরও অনেক খাদ্যপণ্যে ভেজাল। এ ছাড়া হোটেলের খাবারসহ নানারকম খাদ্যপণ্যে ভেজাল। ফলে এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই সামনে আসে যে, খাদ্য পণ্যে যদি ভেজাল রোধ না হয়, তবে মানুষ খাবে কী? এটা বলা দরকার, সাধারণ মানুষের পক্ষে ভেজাল খাদ্যদ্রব্য চিহ্নিত করা কঠিন, ফলে সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে কঠোর উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখা দরকার, এর আগে বিভিন্ন সময় খাদ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত ডিডিটিসহ কাবার্ইড, ক্রোমিয়াম, অ্যালড্রিন, আসেির্নক, ফরমালিনের মতো অনেক বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। আর এগুলো মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টি, লিভার ও কিডনি অকেজো করে দেয়াসহ প্রাণঘাতী রোগের কারণ হচ্ছে এমনটিও আলোচনায় এসেছে। ফলে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টরা কাযর্কর ভ‚মিকা অব্যাহত রাখবে এমনটি জরুরি। মাছে ও দুধে মেশানো হয় ফরমালিন। ফলমূল পাকাতে ব্যবহৃত হয় কাবার্ইড। মুড়িতে ইউরিয়া, শুঁটকি তৈরিতে ডিডিটি, গুঁড়া মসলা, চানাচুর ও রঙিন খাবারে ব্যবহার করা হয় শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর কাপড়ের রংÑ আমরা মনে করি, এগুলোসহ এমন সব তথ্য উঠে এসেছে বিভিন্ন সময়ে যা উৎকণ্ঠার জন্ম দেয়। সঙ্গত কারণেই খাদ্যে ভেজালের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প থাকতে পারে না। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, খাদ্যে ভেজাল মেশানোর সঙ্গে নীতি ও নৈতিকতার প্রশ্ন জড়িত। কেননা অতি মুনাফার লোভে এমন ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হবে এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সঙ্গত কারণেই খাদ্যে ভেজাল মেশানোর মতো ভয়াবহ কাজের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ খাদ্যে ভেজালের ঘাতক বিষ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে শরীরে প্রবেশ করে, আর এ থেকে নানা ধরনের রোগ সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে। সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে ভেজাল রোধে সবার্ত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক- এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।