এক ধাপ অবনমন দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে

প্রকাশ | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে 'সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত' দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)। বাংলাদেশের স্কোর ১ পয়েন্ট কমে ২৬ থেকে ২৫ হয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে এক ধাপ অবনমন হয়েছে। যদিও তালিকায় ওপরের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ গত বছরের মতো ১৪৭তম রয়েছে বাংলাদেশ। এবারে ২৫ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একই অবস্থানে রয়েছে ইরান ও গিনি। বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী এই সংস্থার প্রকাশ করা 'দুর্নীতির ধারণা সূচকে (সিপিআই)' এ তথ্য উঠে এসেছে। এটা সত্য, বাংলাদেশের সাফল্যের তালিকা দীর্ঘ এবং আকর্ষণীয়। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর নিজস্ব আর্থিক সংকট মোকাবিলার সক্ষমতা রয়েছে। বাংলাদেশের সাফল্যের তালিকা আরো অনেক দীর্ঘ হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা। যদিও সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতাও রয়েছে- এটা স্বীকার করতেই হবে। দুর্নীতি নির্মূল করতে না পারা এটা আমাদের সামগ্রিক ব্যর্থতা। তবে হতাশ হলে চলবে না, চলবে না মনোবল হারালেও। আমাদের দৃঢ়চেতা মানসিকতা নিয়ে সততা ও ন্যায়নিষ্ঠা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্র তা যত ক্ষুদ্রই হোক তার চরিত্র হতে হয় গণমুখী তথা জনকল্যাণমূলক। আমাদের দুর্ভাগ্য যে বাংলাদেশকে নিয়ে বিগত প্রায় পাঁচ দশকে অনেক স্বপ্ন দেখলেও রাষ্ট্রের কাঠামোগত চরিত্র দাঁড় করানো সম্ভব হয়নি। যদিও বাংলাদেশকে বলা হচ্ছে এশিয়ার বাঘ উন্নয়নের রোল মডেল। স্বাধীনতাপরবর্তী বাংলাদেশ এতটাই আর্থিকভাবে দুর্বল ছিল, মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও রাজনীতিবিদ হেনরি কিসিঞ্জার এই দেশকে একটি 'তলাবিহীন ঝুড়ি' হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের সেই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকার দেশের ইপ্সিত প্রবৃদ্ধির ভিত্তি রচনা করতে সক্ষম হয়েছে। রেমিট্যান্স প্রাপ্তির হারও অনেক বেড়েছে এবং এ ক্ষেত্রে বাজেটে বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়েছে। মাতৃমৃতু্য ও শিশুমৃতু্যর হার কমেছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। সামাজিক উন্নয়ন সূচকে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতি অনেক ভালো। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। সুখী ব্যবসা সফল দেশের তালিকায় বাংলাদেশ আশাব্যঞ্জক অবস্থানে রয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ক্রীড়াসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এক সময় দুর্নীতির জন্য পর পর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। দুর্নীতির সেই কলঙ্কতিলক মোচন করতে আমরা সক্ষম হয়েছি এটা যেমন সত্য, একইভাবে সত্য যে, আমরা সমাজ-রাষ্ট্র থেকে দুর্নীতি নির্মূল করতে পারিনি। যার কারণে আমাদের আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে তার রয়েছে জিরো টলারেন্স নীতি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার তিনি। ইতোমধ্যে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি দৃঢ়কণ্ঠে বলেছেন, দুর্নীতি না হলে দেশের চেহারা পাল্টে যেত। আমরাও তাই মনে করি। দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।