মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রপ্তানি আয়

অগ্রগতি বজায় রাখতে উদ্যোগ নিন
নতুনধারা
  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

একটি দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির প্রশ্নে রপ্তানি আয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, যদি রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পায় এবং এই ধারা অব্যাহত থাকে তবে তা আশাব্যঞ্জক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। যা আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, গত দুই মাসের ধারাবাহিকতায় জানুয়ারি মাসেও দেশের রপ্তানি আয় ৫ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছে। এ মাসে পণ্য রপ্তানি করে ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ।

উলেস্নখ্য, বৃহস্পতিবার রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরো (ইপিবি) থেকে প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, এই আয় আগের বছরের একই মাসের ৪৮৫ কোটি ডলারের চেয়ে ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেশি। যদিও এবারের জানুয়ারির ৫২৪ কোটি ৬০ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ১০ শতাংশ কম। গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসেও ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। এ ছাড়া সর্বশেষ ডিসেম্বর মাসে ৫৩৬ কোটি ৫২ লাখ ডলার আয় হয় রপ্তানি থেকে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

আমরা বলতে চাই, যদিও এবারের জানুয়ারির ৫২৪ কোটি ৬০ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ১০ শতাংশ কম- তদুপরি একদিকে আগের বছরের একই মাসের ৪৮৫ কোটি ডলারের চেয়ে ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেশি, অন্যদিকে এ মাসেও রপ্তানি আয় ৫ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছে যা আশাব্যঞ্জক। ফলে রপ্তানি আয়ের ধারাকে এগিয়ে নিতে আরও বেশি পরিকল্পনামাফিক উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে এমনটি কাম্য। বলা দরকার, জানুয়ারি মাস শেষে অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি, এটি ইতিবাচক। আগের অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে রপ্তানি থেকে ২৯ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছিল বাংলাদেশের।

লক্ষ্যণীয় যে, বিজিএমইএ সভাপতি বলেছেন, ভাগ্য ভালো যে, কিছু উচ্চমূল্যের পোশাকের বাজার ধরতে পারা গেছে। আগে যেখানে ১০ ডলারের বেশি দামের শার্টের অর্ডার এ দেশে আসত না, এখন সেখানে ২০ ডলারের শার্টের অর্ডারও পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। এ ছাড়া ভারত, কোরিয়া, জাপানের মতো অপ্রচলিত বাজারেও পণ্য রপ্তানির হার বেড়েছে বলেও তিনি জানান। ফলে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যেও রপ্তানি আয় শক্তিশালী হচ্ছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ করে রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে আরও উদ্যোগ নিতে হবে।

এ কথা বলা দরকার, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে নানা ধরনের সংকটময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সঙ্গত কারণেই সার্বিক বিষয়গুলো যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনি রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ বজায় রাখতে হবে। এর আগে এ বিষয়টিও আলোচনায় এসেছিল যে, ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৮০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে সেই লক্ষ্য পূরণেও কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের এটিও আমলে নেওয়া জরুরি, তৈরি পোশাক খাত বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি আয়ের মধ্য অন্যতম খাত। সঙ্গত কারণেই এ খাতের সার্বিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি। অন্যদিকে সম্ভাবনাময় খাতগুলোর দিকেও নজর দিতে হবে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, একটি দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জন ও অগ্রগতির প্রশ্নে রপ্তানি আয় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ফলে রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ সমীচীন। যখন এ মাসে পণ্য রপ্তানি করে ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ- তখন এটি আমলে নিয়ে রপ্তানি আয়ের ধারা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। যেসব খাতে রপ্তানি আয় বেশি, সেগুলোর দিকে যেমন নজর দিতে হবে; তেমনি এর পাশাপাশি সম্ভাবনাময় খাতগুলোর দিকেও পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। রপ্তানি আয়ের অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে