দৃষ্টিভঙ্গি বদলান সমাজ বদলে যাবে

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

আলী ফজল মোহাম্মদ কাওছার সিলেট
আমরা সৃষ্টির সেরা জীব। আঠারো হাজার মাখলুকাতের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে আল্লাহ পাক আমাদের সৃষ্টি করেছেন। আমাদের কাছ থেকে মহান আল্লাহ পাকের অন্য সৃষ্টিসহ মানবজাতির ভালো আচরণ পাওয়ার কথা নয় কি? উত্তর হবে হঁা। কিন্তু আমাদের মধ্য থেকে শিষ্ঠাচার, মানুষের প্রতি মানুষের ভালো ব্যবহার যেন হারিয়ে গেছে। কিছু মানুষের কাছে যেন সমাজ জিম্মি হয়ে আছে। তারা যা করবে তাই যেন সঠিক। আর অন্যরা যা করবে তা যেন ভুল। এটা কেন? একটি জিনিস আমাদের সমাজে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে তা হচ্ছে অপরের সমালোচনা। একজন মানুষের সমালোচনা করুন ঠিক আছে। কিন্তু সমালোচনা করতে গিয়ে কেন নোংরা কথাবাতার্। এটা আমাদের নোংরা মন-মানসিকতার পরিচয় বহন করে নয়কি? আমরা নিজেরা অনেক খারাপ গুণ নিয়ে আছি। কিংবা আমাদের আচার-আচরণে অনেক মানুষ কষ্ট পায়। কিন্তু আমরা সেদিকে দৃষ্টি না দিয়ে কিংবা আমাদের মধ্যে অনেক দোষ-ত্রæটি থাকা সত্তে¡ও সেগুলো সংশোধন না করে আমরা অন্যের দোষ-ত্রæটি কিংবা অন্যের বিভিন্ন কাজ নিয়ে আমরা সমালোচনায় ব্যস্ত থাকি। আমরা সমাজে নিজেদের ক্ষমতা বাড়াতে গিয়ে কিংবা মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করে থাকি। কিন্তু সেগুলো থেকে নিজেদের সংশোধন না করে আমরা অন্যের দোষত্রæটি খুঁজতে ব্যস্ত থাকি। বতর্মান বাংলাদেশের এক তরুণ আইডলের নাম মাশরাফি বিন মতুর্জা। প্রজন্মের লাখ লাখ তরুণদের আইডল সে। কিন্তু তার একটি রাজনৈতিক দলে অংশগ্রহণ নিয়ে তাকে নিয়ে যে পযাের্য়র সমালোচনা হয়েছেÑ এমনকি তার বউকে নিয়ে যে পযাের্য়র সমালোচনা হয়েছে এটা আমাদের মন-মানসিকতার কোন পযাের্য় পড়ে? যারা তাকে নিয়ে তার বউকে নিয়ে খারাপ নোংরা মন্তব্য করতেছে তারা তাদের নোংরা মন-মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছে। একজন মানুষের কোনো দলে যোগদান কিংবা নিবার্চনে অংশগ্রহণ তার গণতান্ত্রিক অধিকার। সেই গণতান্ত্রিক অধিকারকে নিয়ে কেন এই টানাহেঁচড়া? মাশরাফি এখন একজন জনপ্রতিনিধি তাকে কাজ করার সুযোগ দিন। সে যদি খারাপ কাজ করে তাহলে তাকে নিয়ে সমালোচনা করুন। সেই সমালোচনার ভাষা যেন হয় গঠনমূলক। হয়তো তাকে দিয়ে সমাজের অনেক কিছু পরিবতর্ন সম্ভব। একজন মানুষ কাজ করার সময় পাওয়ার আগে কেন সমালোচনার স্বীকার হবে? তার বউকে নিয়ে কেন খারাপ মন্তব্য হবে? এটি আমাদের কোন পযাের্য়র নোংরা মন-মানসিকতার পরিচয়? একজন নুরুল ইসলাম নাহিদ (সাবেক শিক্ষামন্ত্রী) কাজ করতে গিয়ে ভুলত্রæটি হতে পারে। কিন্তু মনে রাখতে হবে নুরুল ইসলাম নাহিদের সাফল্যের পাল্লা কিন্তু কম ভারী নয়। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে তাকে নিয়ে সমালোচনা হতে পারে। কিন্তু সেই সমালোচনা কি গঠনমূলক হতে পারেনা? একজন সত্তর বছরের বেশি বয়সের মানুষকে নিয়ে কেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল? ইউটিউবে কেন নোংরা ভিডিও বানানো? এটা আমাদের কিরকম মন-মানসিকতার পরিচয়? যারা এই বয়স্ক মানুষটিকে নিয়ে এসব নোংরা খেলায় মেতে উঠেছেন আপনারা ভুলে যাবেন না আমাদের এই বয়সে আসতে হবে। আমাদের সমাজের কিছু মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি কিংবা কুরুচিপূণর্ ব্যবহার দেখলে খুব খারাপ লাগে। একটি জিনিস মনে রাখা দরকার সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের উন্নতির জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। দৃষ্টিভঙ্গি বদলালে সমাজ বদলে যাবে।