রাজধানীর সিটিং সাভির্স

নৈরাজ্য দূর করুন

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
রাজধানী ঢাকার গণপরিবহনের অরাজকতা নতুন নয়। এই অরাজকতা দীঘির্দন থেকেই চলছে। ফলে সাধারণ মানুষের দুভোর্গ বেড়েই চলেছে। এই অরাজকতা দূর করার জন্য নানা চেষ্টা ও তৎপরতা পরিলক্ষিত হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। অন্যদিকে রাজধানীতে সিটিং সাভিের্সর নামে যে সব পরিবহন চলে তারা নানা ধরনের অরাজকতা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে থাকে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, গণপরিবহনে ‘সিটিং সাভির্স’ বলে কিছুর আইনি বৈধতা না থাকলেও পরিবহন সঙ্কটের ঢাকা শহরে বেশিরভাগ বাস ‘সিটিং সাভির্স’ হয়ে গেছে। কিছু বাস সারাদিন ‘লোকাল’ হিসেবে চললেও অফিস সময়ে ‘সিটিং’ হয়ে যাচ্ছে। ফলে জরুরি সময়ে যানবাহন না পেয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। আবার ‘সিটিং সাভির্স’-এর নাম করে অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও অনেক বাসে আসনের অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হচ্ছে, বাড়তি ভাড়া দিলেও তাদের যেতে হচ্ছে দঁাড়িয়ে। যাত্রী ওঠানামার জন্য এসব গাড়ি প্রতিটি স্টপেজেই দঁাড়াচ্ছে। ফলে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও সেবা পাচ্ছেন না যাত্রীরা। বিআরটিএ-এর তথ্যানুযায়ী, ঢাকার শহর ও শহরতলীর আড়াইশ রুটে প্রায় আট হাজার বাস ও মিনিবাস চলাচল করে। এর প্রায় প্রতিটি রুটেই দেখা গেছে যাত্রীদের ভোগান্তির চিত্র। আমরা মনে করি এই চিত্রের দ্রæত অবসান হওয়া জরুরি। এ ব্যাপারে যথাযথ কতৃর্পক্ষের কাযর্কর ব্যবস্থা নেয়া উচিত। রাজধানী ঢাকার গণপরিবহনের দুদর্শার চিত্র আরও ভয়াবহ। বাসে গাদাগাদি করে উঠে গন্তব্যে যেতে হয়। এই সব বাসে মহিলা যাত্রীরা ওঠার সুযোগ পায় খব কমই। এর পাশাপাশি সড়ক দুঘর্টনা তো রয়েছেই। সড়কে আইন ভঙ্গ করে চালকরা গাড়ি চালাবে, তাদের খামখেয়ালিপনার কারণে অবলীলায় যাত্রীদের প্রাণ চলে যাবে এটা কোনোভাবেই সমথর্নযোগ্য হতে পারে না। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, আইন মেনে গাড়ি চালাতে চালকদের এত আপত্তি কেন। তাদের অবহেলা উদাসীনতা আর খামখেয়ালিপনার কারণে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ চলে যাচ্ছে, সে দিকে তাদের কোনো ভ্রæক্ষেপ নেই, নেই অনুশোচনা। নিজেদের বিবেকের কাছেও একবার প্রশ্ন করে না। দায় কতর্ব্যবোধ অনুশোচনা থাকলে চালকরা সচেতন হতেন। এর আগে বাস থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে যাত্রীকে। দুই বাসের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় মারা গেছেন একাধিক ব্যক্তি। অবাক ব্যাপার যে, ঢাকাতে দুই বাসের অসুস্থ প্রতিযোগিতা এখনো চলছে। এর সরল অথর্ হচ্ছে শিক্ষাথীের্দর নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কোনো কাজে আসেনি। যাতায়াতের ক্ষেত্রে সেই পুরনো চিত্রই চোখে পড়ছে। অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বাসের চালক কন্ডাক্টর হেলপার মিলে একের পর এক রোমহষর্ক অপরাধ করেই যাচ্ছে কোনো রকম প্রতিকারহীনভাবে। দীঘির্দন থেকে দেশের পরিবহন সেক্টরে যে নৈরাজ্য চলছে তার অবসান ঘটাতে না পারলে যাত্রী হয়রানি ও দুভোর্গ কমবে না। যে করেই হোক এর লাগাম টেনে ধরতে হবে। কারণ এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সময় থাকতেই কতৃর্পক্ষের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। পরিবহন সঙ্কট দূর করার ক্ষেত্রেও কাযর্কর ভ‚মিকা নিতে হবে। সেই সঙ্গে অপরাধীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে গণপরিবহনে যাত্রী হয়রানি অনিয়ম ও দুভোর্গ বন্ধ করতে ।