বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে

নতুনধারা
  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। চিকিৎসা খাতে রীতিমতো নৈরাজ্য বিরাজ করছে। একদিকে মানুষ ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না। অন্যদিকে, ভুল চিকিৎসা ও ভুয়া চিকিৎসকের দৌরাত্ম্য মারাত্মকভাবে বেড়েছে। দেশের প্রতিটি হাসপাতালে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, শুধু হাসপাতাল তৈরি করলে আর কিছু মেশিন কিনে দিলেই চিকিৎসা হয়ে যাবে না। চিকিৎসাসেবা মূলত নির্ভর করে ডাক্তার-নার্সদের ওপর। এই বিষয়গুলোতে ভবিষ্যতে আর ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। হাসপাতালগুলোতে আমরা এখন পর্যন্ত কোয়ালিটি চিকিৎসা দিতে পারছি না। তবে সেবার মানোন্নয়নে আমরা সারাদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছি। রাববার দুপুরে জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে বিশ্ব ক্যানসার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

দেশে কেবল মানসম্মত চিকিৎসা সংকট নয়, বাজারে আরেক দফা বেড়েছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম। দুঃখজনক সংবাদ হচ্ছে, ঢাকা শহরের প্রায় ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। যা রোগীর জীবনেরঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এই নিয়ে কয়েক দফা ওষুধের দাম বাড়ানো হলো সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে। এছাড়াও ফার্মেসিভেদেও দামের মূল্য পার্থক্য রয়েছে। কোনো কোনো ওষুধের দাম ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিগুণও রাখা হয়- যা রীতিমতো অন্যায়। পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ রপ্তানি কারক দেশে পরিণত হয়েছে এই দেশ। আমেরিকা, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ১৫১টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। দেশের ৯৮ শতাংশ ওষুধের চাহিদা মিটিয়ে এসব দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। এভাবে লাগামহীনভাবে যদি ওষুধের দাম বাড়তেই থাকে তা হলে সাধারণ রোগী, যারা স্বল্প আয়ের এবং প্রবীণ যারা অবসরে আছেন তাদের অবস্থা কী হতে পারে। আমাদের প্রত্যাশা, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছে বেশির ভাগ প্রাণসংহারী জীবাণু। এর মানে হলো- উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করেও এসব জীবাণু ধ্বংস বা প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। এর ফলে বছরে কয়েক লাখ মানুষের মৃতু্য ঘটছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ২০৫০ সালে বিশ্বে ১ কোটি মানুষের মৃতু্য ঘটবে। 'বাংলাদেশে প্রায় দুই-আড়াই লাখ ফার্মেসি আছে। যাদের একটি বড় অংশই অনিবন্ধিত। এই দুই-আড়াই লাখ ফার্মেসি যদি একদিনে অন্তত ৫টি করে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করে, তাহলে দেখা যায়, দিনে তারা ১০ থেকে ১৫ লাখ অ্যান্টিবায়োটিক সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছে। যার মধ্যে খুব অল্পসংখ্যক মানুষের হয়তো এটার প্রয়োজন ছিল। একজন দোকানদারের পক্ষে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক রোগীর জন্য প্রয়োজন আর কোনটা প্রয়োজন নেই, এটা বোঝার সুযোগ নেই। এমনকি অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স সম্পর্কে তাদের ধারণা না থাকায়, তারা রোগীদের দু'তিন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকে সাময়িক উপসমের জন্য। যা রোগীর জীবনকে বিপন্ন করে তোলে। এর ফলে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত হচ্ছে না। এর পাশাপাশি রয়েছে ভুয়া ডাক্তার। অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। আমাদের প্রত্যাশা, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ মানসম্মত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে