নোয়াখালীতে আবারও গণধষর্ণ

কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
কোনোভাবেই রোধ হচ্ছে না অনাকাক্সিক্ষত একেকটি ঘটনা। বরং এমন সব ঘটনা ঘটছেÑ যেন তা আদিম ববর্রতাকেও হার মানায়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, একটি দেশে ধষের্ণর মতো ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর অপরাধমূলক ঘটনা যদি ঘটতে থাকে, তবে এর ভয়াবহতা আমলে নেয়ার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। সঙ্গত কারণেই এমন ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি এই ধরনের ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা অপরিহাযর্ বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, নোয়াখালীর সুবণর্চরে গণধষের্ণর রেশ এখনও কাটেনি আর এরই মধ্যে এবার কবিরহাট থানায় গণধষের্ণর অভিযোগ করেছেন এক গৃহবধূ। জানা যায়, ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নবগ্রামে শুক্রবার রাতে সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে মা ও তিন ছেলেমেয়েকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ওই গৃহবধূকে ধষর্ণ করে তিনজনÑ যা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে। তথ্য মতে, ধষের্ণর অভিযোগে জাকির হোসেন জহির নামে একজনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। জাকির হোসেন ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি এমন বিষয়ও সামনে এসেছে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যেভাবে একের পর এক ধষের্ণর ঘটনা ঘটছে তা অত্যন্ত ভয়ানক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার, এসব ঘটনা আমলে নিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা। আমলে নেয়া দরকার, সুবণর্চরে গণধষের্ণর ঘটনা ছাড়াও কিছুদিন আগে ডেমরায় দুই শিশু হত্যার শিকার হয়েছিল। শিশু দুটির পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল যে, মৃত্যুর আগে তারা ধষের্ণর শিকার হয়েছিল। দুই শিশুর সন্দেহভাজন হত্যাকারী মোস্তফাকে গ্রেপ্তার ও ফঁাসির দাবি জানিয়ে রাস্তায় নেমেছিল এলাকাবাসী। এ ছাড়া গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন সড়কে দুই বছরের শিশু মৃত্যুর আগে ধষের্ণর শিকার হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছিল শিশুটির পরিবার। ঢাকার তুরাগে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ধষের্ণর শিকার হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল। সঙ্গত কারণেই আমরা বলতে চাই, যদি একের পর এক ধষের্ণর মতো ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটতে থাকে তবে এর ভয়াবহতা কীরূপÑ তা আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই এবং এমন ঘৃণ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রসঙ্গত, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পযর্ন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধষের্ণর শিকার হয়েছে ৭১১ জন। ধষের্ণর পর হত্যা করা হয়েছে ৬০ জনকে। ধষর্ণ চেষ্টা করা হয়েছে ৯৮ জনকে। আর ধষের্ণর পর আত্মহত্যা করেছে ৭ জন। আমরা বলতে চাই, কেন এমন ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর ঘটনা একের পর এক ঘটছেই, তা খতিয়ে দেখতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। সবোর্পরি, ধষর্ণ এবং নানাভাবে নারীরা প্রতিনিয়ত নিযার্তনের শিকার হচ্ছেÑ ফলে এই বাস্তবতাকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। এবারের ঘটনায় কবিরহাট থানার ওসি জানিয়েছেন, ওই গৃহবধূ থানায় এসে অভিযোগ করেন। তার অভিযোগকে মামলা হিসেবে নেয়া হয়েছে। এতে ৬-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আমরা চাই যতদ্রæত সম্ভব দোষীদের বিরুদ্ধে কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক। মনে রাখা দরকার, নারীরা নিজ যোগ্যতা বলে গুরুত্বপূণর্ কাজ সম্পাদন করছে, দেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অবদান রাখছে, শিক্ষার হার বাড়ছে. রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। এমতাবস্থায় যদি নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয়, তবে এর চেয়ে পরিতাপের আর কী বা হতে পারে! সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে ধষের্ণর মতো ভয়ঙ্কর ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ হোক এমনটি কাম্য।