অভিযান অব্যাহত থাকার ঘোষণা

অপশক্তির মূলোৎপাটনই প্রত্যাশিত

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দুনীির্ত, জঙ্গিবাদ ও মাদক- আমাদের দেশে বহুল আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। সমাজের প্রতিটি স্তরে দুনীির্ত যেমন সবর্গ্রাসীরূপে, শাখা-প্রশাখায় বিস্তৃত হয়ে জেঁকে বসেছে; তেমনিভাবে মাদকের আগ্রাসনের পাশাপাশি ও জঙ্গিবাদের মতো অপশক্তিও প্রায় প্রতিনিয়ত হানা দিচ্ছে সমাজ-রাষ্ট্রে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সমাজ-রাষ্ট্র থেকে দুনীির্ত, জঙ্গিবাদ এবং মাদকের আগ্রাসন সমূলে উৎপাটন সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টসাধ্য হলেও একেবারে অসম্ভব নয়। এর জন্য সবাের্গ্র প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা। রাজনৈতিক সদিচ্ছার জাগরণ ঘটলে দেশ থেকে সব ধরনের অশুভ-অপশক্তি নিমূর্ল করা যে সম্ভব, তা আমরাও বিশ্বাস করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে তার সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা পুনবর্্যক্ত করে দৃঢ় কণ্ঠে বলেছেন, দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং এর অজর্নগুলো সমুন্নত রাখতে দুনীির্ত, জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর এই দৃঢ়তা অপশক্তিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে ইতিবাচক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদশর্ন শেষে মাদক ব্যবসায়ী, সরবরাহকারী এবং গ্রহণকারী উভয়ের বিরুদ্ধেই বহুমুখী ব্যবস্থা নেয়ার নিদের্শ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আগেও বলেছেন, ‘দুনীির্তকে আমরা প্রশ্রয় দিই না। নিজেদের লোককেই কোনো ছাড় দিই না। এমনকি আমাদের মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে যে কোনো সময় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করি। আদালত থেকেও ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।’ আমরাও মনে করি, দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দুনীির্ত, জঙ্গিবাদ এবং মাদকের আগ্রাসন প্রতিরোধসহ সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী সব ধরনের অশুভ কমর্কাÐের অবসান ঘটাতে হবে। আর এটি করতে হবে সরকার তথা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকেই। জঙ্গিবাদ, দুনীির্ত, মাদকের আগ্রাসন যেহেতু দেশ ও জাতির জন্য মহাক্ষতিকর, সেহেতু এসব নেতিবাচক কমর্কাÐ কিছুতেই সমথর্নযোগ্য হতে পারে না। আমরা জানি, সরকার দুনীির্তর বিরুদ্ধে কঠোর থাকার কারণে বিশ্বব্যাপী দুনীির্তর ধারণা সূচকে আমাদের অগ্রগতি হয়েছে। এতে স্পষ্ট হতে পারে, সরকার কঠোর থাকলে দুনীির্ত দমন করা অসম্ভব নয়। যদিও কোনো দেশ থেকে শতভাগ দুনীির্ত নিমূর্ল করা সম্ভব হয় না। দুনীির্ত প্রতিরোধে সরকার সচেষ্ট ও কঠোর থাকলে দুনীির্ত যেমন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে না। লক্ষণীয় যে, প্রশাসন কঠোর থাকায় জঙ্গিরাও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সাহস পাচ্ছে না। অন্যদিকে গত বছর মাদকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে সরকার প্রশংসিত হয়েছে। তবে এই অভিযানে বিচারবহিভ‚র্ত হত্যাকাÐের অভিযোগ আছে। আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই, প্রতিটি নাগরিকের ন্যায্য বিচার পাওয়ার অধিকার সংবিধানসম্মত। ফলে মানবাধিকার পরিপন্থি বিচারবহিভ‚র্ত হত্যাকাÐ যাতে না ঘটে সে ব্যাপারেও সংশ্লিষ্টদের সজাগ থাকা বাঞ্ছনীয়। আর সবকিছু বিচেনায় নিয়েই আমরা বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শনা অত্যন্ত বিবেচনাপ্রসূত এবং সময়োপযোগী। উল্লেখ্য, অতীতে আমাদের দেশ বারবার দুনীির্ততে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, যা ছিল সত্যিকারের লজ্জার। তবে শেখ হাসিনা সরকারের বিগত শাসনামলে, দেশের বাঘা বাঘা দুনীির্তবাজদের বিচার হয়েছে, যা এখনো চলমান। দুনীির্তবাজদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত আশা জাগানিয়া। জঙ্গিবাদ এবং মাদকের বিরুদ্ধেও সরকারের কঠোর। জঙ্গিবাদ দমনে প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য সাফল্যও রয়েছেÑ যা আমাদের আশান্বিত করে। আমরা বলতে চাই, দুনীির্তবাজ, জঙ্গিগোষ্ঠী এবং মাদক সংশ্লিষ্টদের যথাযথ বিচার করা গেলে সমাজে তার ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ফলে এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী যে নিদের্শনা দিয়েছেন তা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সঠিক দিকনিদের্শনা বলেই আমরা বিবেচনা করি। দুনীির্তগ্রস্ত সমাজ যেমন দেশবাসীর প্রত্যাশা নয়, তেমনিভাবে বাংলাদেশ জঙ্গি রাষ্ট্রের পরিচিতি পাক তা কারও প্রত্যাশা হতে পারে না। অন্যদিকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মাদকমুক্ত সুস্থ সমাজ গঠনই কাম্য। এছাড়া মযার্দাশীল ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে উন্নত বিশ্বের সারিতে নিজেদের দেখতে চাইলে সব ধরনের অশুভ-অপশক্তিকে ‘না’ বলতেই হবে; রুখে দিতে হবে তাদের অশুভ কমর্কাÐ। সমূলে বিনাশ করতে হবে তাদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শনা বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ অপশক্তিমুক্ত হয়ে মযার্দাশীল জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে সগৌরবে মাথা উঁচু করে দঁাড়াকÑ এটিই প্রত্যাশা।