২৮ ফেব্রæয়ারি ভোট

সহিংসতামুক্ত নিবার্চনের প্রত্যাশা

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
’ আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনিবার্চনের মধ্য দিয়ে আবারও নিবার্চন শুরু হতে যাচ্ছে। একইদিন সম্প্রসারিত ঢাকা উত্তর সিটির ১৮টি ওয়াডর্ ও দক্ষিণ সিটির ১৮টি ওয়াডের্ সাধারণ এবং ১২টি সংরক্ষিত নারী ওয়াডের্ও ভোট হবে। অপরদিকে কিশোরগঞ্জ-১ সংসদীয় আসনের নিবার্চনও একইদিনে অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। পটুয়াখালী ও বরগুনার আমতলী পৌরসভা ছাড়াও দেশের ১১টি ইউনিয়ন পরিষদে সাধারণ নিবার্চনও অনুষ্ঠিত হবে ২৮ ফেব্রæয়ারি। একইদিন আরও কয়েকটি পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ও জেলা পরিষদের বিভিন্ন পদে উপনিবার্চন হবে। মঙ্গলবার তফসিল ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এ তথ্য জানিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। আগামী মে মাসে সব উপজেলা পরিষদের মেয়াদও শেষ হয়ে যাবে। ফলে উপজেলা নিবার্চনও আসন্ন। সব মিলিয়ে দেশে নিবার্চনের মৌসুম চলছে বললেও অত্যুক্তি হয় না। নিবার্চন হলো, সংবিধান স্বীকৃত একটি দেশের নাগরিকের মৌলিক অধিকার। দেশের জনগণ এ প্রক্রিয়ায় তাদের জনপ্রতিনিধি নিবার্চনের সুযোগ পান, যারা ক্ষমতার অংশ হয়ে সেই জনগণের দাবি-দাওয়া পূরণসহ তাদের ভালো-মন্দ দেখার সুযোগ পান। গণতান্ত্রিক দেশে এ জন্য নিবার্চনকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। নিবার্চনের মাধ্যমে প্রতিনিধি বাছাই কারও গণতন্ত্রের পূবর্শতর্ হিসেবে বিবেচিত। বাস্তবতা হলে আমাদের দেশে এই ভোটের অধিকার নানাভাবেই বিঘিœত হয়ে আসছে। রাজনৈতিক দলগুলো ভোটাধিকার নিশ্চিতের কথা বলে আসলেও, অনেকের ক্ষেত্রে তার ব্যত্যয় ঘটছে বলে অভিযোগ আছে। এরপরও নিবার্চনের কোনো বিকল্প থাকা উচিত নয়। সুষ্ঠু ও অবাধ নিবার্চন অনুষ্ঠানের জন্য দেশে নিবার্চন কমিশন আছে। সাংবিধানিক এ সংস্থাটির নিবার্চনকালীন ক্ষমতাও প্রচুর। কিন্তু নানান কারণে প্রতিষ্ঠানটি ক্ষমতার যথাযথ প্রয়োগেও অক্ষম, অতীতে দেখা গেছে এমনটি। যে কারণে নিবার্চন কমিশনের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থার সংকট তৈরি হওয়াও অযৌক্তিক নয়। অথচ, যে কোনো নিবার্চন সুষ্ঠু, অবাধ এবং সহিংসতামুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবেÑ দেশবাসী এমনটিই প্রত্যাশা করে। ইসির তথ্য অনুযায়ী, মেয়াদ শেষে সারা দেশের উপজেলা পরিষদগুলোতে পঁাচ ধাপে নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের ৬৯টি উপজেলায় আগামী ৮ বা ৯ মাচর্ ভোটগ্রহণের সম্ভাব্য দিন নিধার্রণ করা হয়েছে। একই মাসের ভিন্ন তারিখে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুথর্ ধাপের ভোটের দিনও ধাযর্ করা হয়েছে। ফেব্রæয়ারির মাসে নিবার্চন কমিশনের সভায় নিবার্চনের তফসিল চ‚ড়ান্ত হবে বলে জানা যায়। অন্যদিকে আগামী মাচের্ ঢাকার দুই সিটিতে ভোটের দিন নিধার্রণ করায় একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য পদে তফসিল ঘোষণার দিন তারিখ ১৭ থেকে এগিয়ে ৩ ফেব্রæয়ারি নিধার্রণ করেছে কমিশন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে এ পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। ঢাকার মোট ৩৬টি সম্প্রসারিত ওয়াডের্র তফসিল গত বছরের ৯ জানুয়ারি ঘোষণা করেছিল ইসি। কিন্তু আদালতে রিটের কারণে গত বছর এ দুই সিটির নিবার্চন স্থগিত করে কমিশন। সম্প্রতি আদালত রিট খারিজ করার পর মঙ্গলবার এই তফসিল ঘোষণা করল ইসি। আমরা মনে করি, দেশের যে কোনো নিবার্চনই হওয়া উচিত অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, সহিংসতামুক্ত ও অংশগ্রহণমূলক। কমিশন যেহেতু তাদের কঠোরতার কথা বারবার বলে আসছে, সুতরাং প্রত্যাশা থাকবে কোনো নিবার্চনই যেন প্রহসনমূলক না হয় সেদিকে যথাযথ নজর রাখা। নিবার্চন অথর্বহ করতে ইসির পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোরও বিশেষ ভ‚মিকা রয়েছে। লক্ষ্য করা যায়, স্থানীয় সরকার হোক কিংবা জাতীয় নিবার্চনই হোক, নিবার্চন কেন্দ্র করে সহিংসতা, সংঘষর্, প্রাণহানির মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা থামছে না। এরূপ পরিস্থিতি অত্যন্ত পরিতাপের এবং একই সঙ্গে ভীতিকরও। এর অবসান ঘটাতে হবে। দেশের উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণেই এটা করতে হবে। দেশে শান্তিপূণর্ পরিবেশ বজায় রাখাসহ সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার রাজনৈতিক সহাবস্থান তৈরির উদ্যোগ নেয়া। মনে রাখা দরকার, দেশের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে চায়। সুতরাং নিবার্চনে শান্তিপূণর্ পরিবেশ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার বিকল্প থাকা উচিত নয়।