একাদশ সংসদের যাত্রা শুরু

নিশ্চিত হোক সুশাসন ও গণতন্ত্র

প্রকাশ | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করার ঘোষণার মধ্য দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদের কাযর্ক্রম শুরু হয়েছে ৩০ জানুয়ারি। দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ায় একাদশ সংসদের মধ্য দিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্রের পথে ফের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ। ’৭৩ পরবতীর্ দেশের ইতিহাসে বৃহত্তম সরকারি দলের পাশাপাশি ক্ষুদ্রতম বিরোধী দল নিয়ে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে দিকনিদের্শনামূলক ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। জয়-পরাজয়ের ব্যবধানে দেশের ইতিহাসে রেকডর্ সৃষ্টিকারী একাদশ জাতীয় সংসদের সূচনাতেই স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার পদে পুননির্র্বাির্চত হয়েছেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া। আর সংসদে প্রধান হুইপ পদে নিয়োগ পেয়েছেন নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন। সরকার ও বিরোধী দলের সরব উপস্থিতির মধ্য দিয়ে বুধবার শুরু হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন নিবাির্চত সদস্যরা। অন্যদিকে একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসায় দেশের সিংহভাগ মানুষের আকষর্ণও ছিল সংসদ অধিবেশন। তথ্য অনুযায়ী, বুধবার বিকালে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে পদার্ ওঠে একাদশ জাতীয় সংসদের। দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম তিনশ’ আসনের মধ্যে ২৫৮টি আসনেই বিজয়ী হয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। প্রবীণের চেয়ে নবীন সংসদ সদস্যের আধিক্য ছিল চোখে পড়ার মতো। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বিজয়ের রেশ ছিল সংসদ অধিবেশনেও। পুরো সংসদে ঐতিহ্যবাহী মুজিবকোট পরা এমপিদের আধিক্যে বিরোধী দলকে খুঁজে পাওয়াই দায় হয়ে পড়ে। উদ্বোধনী অধিবেশন দেখতে প্রতিটি গ্যালারিই ছিল দশর্নাথীের্ত কানায় কানায় পূণর্। অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর পরামশর্ক্রমে রাষ্ট্রপতি প্রধান হুইপসহ যে ৬ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন তার মধ্যে তিনজনই নতুন মুখ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন সংসদ সদস্যদের সংবিধান ও কাযর্প্রণালী বিধিসহ সংসদীয় কাযর্ক্রম শিখতে বেশি করে লাইব্রেরিতে যাওয়ার নিদের্শ দেন। সব মিলিয়ে একাদশ সংসদ সংসদীয় গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নিবার্চনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে জয়ী হয়। নিবার্চনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মাত্র আটটি আসনে জয়ী হয়েছে। তবে ঐক্যফ্রন্টের সদস্যরা এখনো সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেননি, ফলে সংসদে ঐক্যফ্রন্টের সদস্যরা ছিলেন অনুপস্থিত। অন্যদিকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পাটির্ প্রধানও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও অসুস্থতার কারণে প্রথম অধিবেশনের উদ্বোধনী দিনে অনুপস্থিত ছিলেন। এরপরও প্রথম অধিবেশন ছিল অত্যন্ত প্রাণবন্ত। দ্বিতীয়বার স্পিকার নিবাির্চত হয়ে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সমগ্র বিশ্বে উন্নয়নের বিস্ময়। এই নিবার্চনে বাংলাদেশের জনগণ আমাদের ওপর আস্থা ও গুরুদায়িত্ব অপর্ণ করেছে- তা যথাযথভাবে পালন করাই হোক আমাদের আজকের প্রত্যয়। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রার মধ্য দিয়ে উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ কাযর্কর ভ‚মিকা রাখবে এই হোক আমাদের সকলের সম্মিলিত কাজ। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখেছি। একাদশ সংসদ নিবার্চনে বিপুল বিজয়ে তিনি বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। আমরা মনে করি, গত এক দশকে দেশে যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অজির্ত হয়েছে, পশ্চাৎপদ অবস্থা থেকে অগ্রসর বিশ্বের কাতারে পেঁৗছানোর যে প্রত্যয় জনমনে গেড়ে বসেছে তা ধরে রাখার দায়িত্ব একাদশ সংসদ সদস্যদের পালন করতে হবে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী দুনীির্ত, জঙ্গিবাদ, মাদকের বিরুদ্ধে তার সরকারের কঠোরতার কথাও বলেছেন। দেশের সাবির্ক অবস্থা বিবেচনায় এটা মনে হওয়া অযৌক্তিক নয় যে, বতর্মান সরকারের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই দেশের উন্নয়ন এবং সুশাসন কায়েমে সরকারকে সফল হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃঢ় নেতৃত্বে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় একাদশ সংসদ দৃষ্টান্ত ভ‚মিকা রাখবে- এমনটিই প্রত্যাশা করে দেশের সবর্স্তরের মানুষ।