প্রশ্ন ফঁাসের চক্র ভাঙার দাবি

সুশিক্ষার পথ প্রশস্ত হোক

প্রকাশ | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একটি দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অজের্নর প্রশ্নে শিক্ষার অগ্রগতি নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। সঙ্গত কারণেই শিক্ষা ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের অব্যবস্থাপনা বা অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে তা আমলে নিয়ে কঠোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে সরকার সংশ্লিষ্টদেরই। ভুলে যাওয়া যাবে না যে, প্রশ্নফঁাস থেকে শুরু করে, নকল বই, ফি আদায়ে অনিয়ম, দুনীির্ত, কোচিং বাণিজ্যসহ নানারকম অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা সামনে এসেছে বিভিন্ন সময়েÑ যা সুশিক্ষার বিস্তারে কোনোভাবেই সহায়ক হতে পারে না। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সময় কেন্দ্রের ২০০ গজের ভেতরে বাইরের সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। মূলত পরীক্ষা কেন্দ্রের ‘সুষ্ঠু ও শান্তিপূণর্’ পরিবেশ নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আমরা মনে করি, পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূণর্ করতে যে কোনো ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণই অপরিহাযর্। বলা দরকার, আজ থেকে সারা দেশে মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এ বছর সব মিলিয়ে ৪ হাজার ৯৬৪টি কেন্দ্রে ২৫ লাখ ৭৩ হাজার ৮৫১ জন শিক্ষাথীর্ এ পরীক্ষায় অংশ নেবে। আমরা বলতে চাই, যখন এমন বিষয়ও সামনে এসেছেÑ প্রশ্নফঁাস ঠেকানোর চেষ্টায় গতবারের মতো এবারও পরীক্ষা শুরুর সাত দিন আগে থেকে শেষ পযর্র্ন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নিদেশর্না দিয়েছে সরকারÑ তখন বিষয়টি ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। এ ছাড়া অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে তৈরি বিশেষ নিরাপত্তা খামে ভরে এবার কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে। প্রশ্নফঁাসের মতো ভয়াবহ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সংশ্লিষ্টরা কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে এমনটি কাম্য। এ ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় খবরে উঠে এসেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভতির্সহ বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফঁাসের সঙ্গে জড়িত দুটি ‘বড় চক্রের’ হোতাসহ ৪৬ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। আমরা মনে করি, এই বিষয়টি অত্যন্ত স্বস্তিকর। এখন সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। এ ছাড়া এমন আশার কথাও সামনে এসেছে যে, এই চক্র ভেঙে দেয়ায় আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় আর কেউ প্রশ্ন ফঁাসের ‘ধৃষ্টতা’ দেখাবে না। আমরা বলতে চাই, শিক্ষার সামগ্রিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে হলে প্রশ্ন ফঁাসের মতো মেধা বিধ্বংসী ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। মনে রাখতে হবে, আজকের শিক্ষাথীর্রাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ ফলে তাদের শিক্ষার পরিবেশ যদি কলুষিত হয় তবে তা আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকেই সামনে আনবে যা কোনোভাইে গ্রহণযোগ্য নয়। সংশ্লিষ্টদের আমলে নেয়া দরকার, এতদিন প্রশ্ন ফঁাস হতো মূলত প্রেস থেকে। তারপর ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে তা ছড়ানো হতো এমন বিষয় জানা গেছে। ফলে এই বিষয়টিকে সামনে রেখেও নজরদারি ও যথাযথ তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা উল্লেখ করতে চাই, যে কোনো কারণে যদি শিক্ষাথীের্দর ঝরে পড়ার ঘটনা ঘটে তবে তা আমলে নিতে হবে। মাধ্যমিক স্কুল সাটিির্ফকেট পরীক্ষায় ঝরে পড়েছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষাথীর্ এমনটিও সামনে এসেছে। এ ক্ষেত্রে জানা যায়, যারা এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেবে তাদের মধ্যে গত দুই বছর আগে নিবন্ধন করেছিল ২২ লাখ ৮৭ হাজার ৩২৩ শিক্ষাথীর্। আর এবার পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ১৭ লাখ ৪০ হাজার ৯৩৭ জন। সে হিসাবে নিয়মিত ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩৮৬ জন ঝরে পড়ল। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, প্রকৃত হিসাবে পরীক্ষাথীর্ কমেনি। গত দুই বছর আগে শিক্ষাথীর্রা পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করে। তাদের মধ্যে অনেকে টেস্ট পরীক্ষায় বিভিন্ন বিষয়ে ফেল করায় তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, শিক্ষার সামগ্রিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে এবং প্রশ্ন ফঁাস থেকে শুরু করে যে কোনো অনিয়ম বন্ধে সংশ্লিষ্টরা সবার্ত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখবে এমনটি প্রত্যাশিত।