শিশু অপহরণ সঠিক পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০৮ মে ২০২৩, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যতই দিন যাচ্ছে সমাজে শিশু অপহরণের হার বাড়ছে। কেবল অপহরণ নয়, নির্যাতন ও হত্যার সংখ্যাও বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, দীর্ঘ ৬/৭ বছর ধরে শিশুদের অপহরণ করে আসছে চক্রটি। এ পর্যন্ত ৫০০-৬০০ শিশুর পিতা-মাতার কাছ থেকে অর্থ আদায় করেছে। এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর উঠে এসেছে এমন তথ্য। ৫ মে শুক্রবার গাজীপুরের সালনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. মিল্টন মাসুদ, মো. শাহীনুর রহমান ও সুফিয়া বেগম। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে অপহরণে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ও ৫টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। চক্রটি মূলত স্কুল-মাদ্রাসা, বাজার বা রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন জায়গায় একাকী থাকা ৮-১৬ বছর বয়সি শিশুদের টার্গেট করে- যারা পিতা-মাতার মোবাইল নম্বর বলতে পারে। এ চক্রের মূলহোতা মিল্টন মাসুদ টার্গেটকৃত শিশুর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে। শিশুদের তার বাবার পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে অন্য কোথাও নিয়ে যায়। তারপর পিতা-মাতার মোবাইল নম্বর নিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১০-৫০ হাজার টাকা দাবি করে। ৫০০ টাকা দিলেও শিশুদের ছেড়ে দিত তারা। অনেক সময় টাকা না দিলেও দুই-তিন ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে দেয়। প্রায় ৬/৭ বছর ধরে চক্রটি ৫০০ থেকে ৬০০ শিশুর পিতা-মাতার কাছ থেকে অর্থ আদায় করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। এটা সমাজের এক ভয়াবহ চিত্র। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ ধরনের অপহরণ চক্রের সংবাদ এর আগেও উঠে এসেছে। অপহরণের ঘটনা এর আগেও বেশ কয়েকটি ঘটেছে। এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এ ধরনের জঘন্য প্রবণতা রোধ করতে না পারলে একদিকে যেমন সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে অন্যদিকে শিশুরাও থাকবে নিরাপত্তাহীন। পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনবে। সুতরাং সময় থাকতেই সাবধান হওয়া সমীচীন। এটা সত্য, সমাজের একশ্রেণির বর্বর পাষন্ড মানুষের হাতে অনেকের জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়ছে, অবলীলায় জীবন চলে যাচ্ছে। এমনকি শিশুর জীবনও চলে যাচ্ছে। সমাজে শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঠুনকো কারণে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। আপনজনের হাতেও শিশুর জীবন চলে যাচ্ছে। কেবল তাই নয়- আমাদের কোমলমতি শিশুরা অবলীলায় অপহরণ নির্যাতন ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। অথচ শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমাজ তথা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কারণ আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কান্ডারি। শিশুর সুস্থ বিকাশ কীভাবে হবে, কীভাবে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে- এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের নতুনভাবে ভাবা উচিত। পাশাপাশি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে।