কমর্সংস্থান বাড়ছে না

কাযর্কর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ একটি জনসংখ্যাবহুল দেশ। সঙ্গত কারণেই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দেশকে সাবির্ক সমৃদ্ধি অজের্নর দিকে নিয়ে যেতে হলে এবং মানুষের বসবাসের স্বাভাবিকতা বজায় রাখা ও জীবনযাপনের মান উন্নয়নের প্রশ্নে বেকারত্বের বিষয়টি ভাবনার অবকাশ রাখে। যদি বেকারত্ব বাড়ে কিংবা যথাযথভাবে কমর্সংস্থান নিশ্চিত হচ্ছে না এমন খবর সামনে আসে, তবে তা উদ্বেগজনক বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, দেশে চাহিদা অনুযায়ী কমর্সংস্থান না হওয়ায় প্রতিবছর নতুন করে বেকার হচ্ছে আট লাখ কমর্ক্ষম মানুষ। এ ছাড়া দেশের অথর্নীতিতে দুটি ভাবনার বিষয় হচ্ছে, উচ্চ প্রবৃদ্ধি অজির্ত হলেও সে তুলনায় কমর্সংস্থান তৈরি হচ্ছে না। অন্যটি হচ্ছে প্রবৃদ্ধির সুফল সবর্ত্র সমানভাবে পৌঁছাচ্ছে না। আর এর ফলে সবোর্চ্চ ধনী ও সবির্নম্ন দরিদ্রের মধ্যে মারাত্মক আয়বৈষম্য তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রবিবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরা হয়েছে। ‘কাক্সিক্ষত সামাজিক উন্নয়নের জন্য অন্তভুির্ক্তমূলক প্রবৃদ্ধি : সমস্যা ও প্রাধান্য’ শীষর্ক প্রতিবেদনটি প্রকাশ উপলক্ষে একটি সংলাপের আয়োজন করা হয়। আমলে নেয়া দরকার, সিপিডির প্রতিবেদন তৈরিতে বিশ্বব্যাংকের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, প্রতিবছর ২১ লাখ কমর্ক্ষম মানুষ কমের্র বাজারে প্রবেশ করছে। কিন্তু প্রতিবছর কমর্সংস্থান তৈরি হচ্ছে প্রায় ১৩ লাখের। এ ক্ষেত্রে প্রতিবছর আট লাখ কমর্ক্ষম মানুষ কাজ পায় না। আমরা বলতে চাই, প্রতিবছর নতুন করে আট লাখ মানুষ বেকার হচ্ছে এমন বিষয়সহ যখন অথর্নীতিতে দুটি ভাবনার বিষয় সামনে আসছেÑ তখন তা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে সামিগ্রক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি। মনে রাখা দরকার, বেকারত্বের বোঝা দূর না হলে আগামী দিন হবে আরো বেশি উৎকণ্ঠারÑ যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। এ ছাড়া সবোর্চ্চ ধনী ও সবির্নম্ন দরিদ্রের মধ্যে মারাত্মক আয়বৈষম্য তৈরি হয়েছেÑ এই বিষয়টিও সুখকর হতে পারে না। তথ্যমতে, ৩০ বছর আগে যেখানে সবোর্চ্চ ৫ শতাংশ ধনীর আয় বেড়েছিল প্রায় ১৯ শতাংশ, সেখানে ২৫ বছর পর ২০১৫-১৬ সালে বৃদ্ধি পায় প্রায় ২৮ শতাংশ। একই সময়ে সবির্নম্ন ৫ শতাংশ দরিদ্র মানুষের আয় বৃদ্ধি ১ শতাংশ থেকে ০.২৩ শতাংশে নেমেছে। সঙ্গত কারণেই এই বৈষম্য দেশের অন্তভুির্ক্তমূলক অথৈর্নতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক নয়। ফলে এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই আমরা মনে করি। একইসঙ্গে বলতে চাই, প্রবৃদ্ধির সুফল সবর্ত্র সমানভাবে পৌঁছাচ্ছে না এটি দুঃখজনক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করেÑ যা আমলে নিয়ে প্রবৃদ্ধির সুফল নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। সবোর্পরি আমরা সরকার সংশ্লিষ্টদের বলতে চাই, সিপিডির প্রতিবেদনটি আমলে নিন এবং সাবির্ক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ করে কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত করুন। গত ২৫ বছরে ধনী ও দরিদ্রের আয়বৈষম্যের তথ্য দিয়ে এমন বিষয়ও সামনে এসেছে যে, প্রবৃদ্ধির সুবিধা সমানভাবে বিতরণ না হওয়ায় বৈষম্য চরম আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য খাতের বিষয়ে বলা হয়েছে, হাসপাতালগুলোতে অবকাঠামোর উন্নয়ন হলেও এর মানসম্মত ব্যবহার হচ্ছে না। শিক্ষা প্রাথমিক শিক্ষায় অন্তভুির্ক্ত, বয়স্ক শিক্ষার হার ও জেন্ডার বৈষম্য হ্রাস, উপবৃত্তি কমর্সূচির আওতা বৃদ্ধি পেলেও মানসম্মত শিক্ষার ব্যাপক অভাব রয়েছে। ফলে এই বিষয়গুলোকে আমলে নেয়া এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে যত দ্রæত সম্ভব সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন এমনটি কাম্য।