চিকিৎসকদের প্র্যাকটিস নীতিমালা তৈরির নিদের্শ

যথাযথ বাস্তবায়ন হোক

প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ একটি জনসংখ্যাবহুল দেশ। সঙ্গত কারণেই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই বিপুল জনগোষ্ঠীর যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা স্বাভাবিকভাবেই একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের বিষয়। আর এটাও বলা দরকার, বিভিন্ন সময়েই চিকিৎসা খাত নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগও সামনে এসেছে। রোগীদের তুলনায় চিকিৎসক সংকট, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংকট, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাব, কমের্ক্ষত্রে চিকিৎসকের অনুপস্থিতিসহ এরকম নানা অভিযোগ প্রতিনিয়তই সামনে আসে। ফলে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এসব বিষয়গুলোর সমাধানে সবার্ত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত সরকারি চিকিৎসকদের প্র্যাকটিসের বিষয়ে পূণার্ঙ্গ নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের নিদের্শ দিয়েছেন হাইকোটর্। এ ছাড়া ‘দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ল্যাবরেটরিজ (রেগুলেশন) অডির্ন্যান্স, ১৯৮২’র ৪ ধারা কেন অসাংবিধানিক, বে-আইনি, অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোটর্। উল্লেখ্য, দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস এন্ড ল্যাবরেটরিজ (রেগুলেসন্স) অডির্ন্যান্স-১৯৮২-র ৪ ধারায় সরকারি চাকরিজীবী চিকিৎসকদের কমর্ সময়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবেন না। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ করা সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে হোইকোটের্র বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্জ এ আদেশ দেন। এর আগে ৪ ফেব্রæয়ারি অফিস চলাকালীন সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধে সরকারে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোটের্ রিট করা হয়েছিল। আমরা মনে করি, যেভাবে চিকিৎসা খাতে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি এবং প্রাইভেট প্র্যাকাটিস সংক্রান্ত অভিযোগ সামনে আসে তা কোনোভাবেই স্বস্তিকর নয়, সঙ্গত কারণেই চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত সরকারি চিকিৎসকদের প্র্যাকটিসের বিষয়ে পূণার্ঙ্গ নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের যে নিদের্শ দিয়েছেন হাইকোটর্Ñ তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হোক এমনটি কাম্য। একইসঙ্গে সরকার সংশ্লিষ্টদের বলতে চাই, দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি বজায় রাখা এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনের স্বাভাবিকতার ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি কোনোভাবেই উপেক্ষিত হতে পারে না। ফলে চিকিৎসা খাতের সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের আরো বেশি উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি বলেই আমরা মনে করি। কেননা, এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না যে, চিকিৎসক সংকট এবং প্রয়োজনীয় অবকঠামো সংকট ছাড়াও চিকিৎসা ব্যয় সংক্রান্ত বিষয় নানা সময়েই আলোচনায় এসেছেÑ যা কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়ার বিষয় নয়। এমনকি অনেক পরিবার শুধুমাত্র চিকিৎসা খরচ মেটাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। আমরা বলতে চাই যে, যে দেশে বেশিরভাগ পরিবারই নিত্যনতুন অভাব-অনটনকে মোকাবেলা করে জীবনযাপন করে, সে দেশের চিকিৎসা ব্যয় সহনীয় হওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে বাস্তবতা পযের্বক্ষণ করা এবং সাবির্ক বিষয় আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই যে, চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত সরকারি চিকিৎসকদের প্র্যাকটিসের বিষয়ে পূণার্ঙ্গ নীতিমালা প্রণয়নের জন্য স্বাধীন কমিশন গঠনের যে নিদের্শ দিয়েছেন হাইকোটর্Ñ এর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক। এর পাশাপাশি, চিকিৎসা খাতের সামগ্রিক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ করে, দেশের মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টরা সবার্ত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে এমনটিও আমরা প্রত্যাশা করি।