বিশ্ব ইজতেমা

সাবির্ক কল্যাণ বয়ে আনুক

প্রকাশ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
টঙ্গীর তুরাগ তীরে আবারও শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমা। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে তাবলিগ জামাতের অনুসারীরা নব উদ্যমে উজ্জীবিত হয়ে বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েন দ্বীন-ইসলাম প্রচারের কাজে। গোটা এক বছর দাওয়াতি কাজ শেষে তারা এই তুরাগ তীরে মিলিত হয়ে আবারও দ্বীন-ইসলাম প্রচারের শপথ নেন। তথ্য মতে, চার দিনব্যাপী টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মুবাল্লিগ ও মুসল্লি এই সম্মেলনে উপস্থিত থেকে দ্বীন প্রচার ও প্রসার কাজে অংশগ্রহণ করেন। এই ইজতেমাকে বলা হয় মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্মেলন। আমরা মনে করি, প্রতি বছর বাংলাদেশে এমন সম্মেলন হওয়াটা অত্যন্ত গৌরবের। প্রসঙ্গত, ১৯৪৪ সালে হজরত মাওলানা আবদুল আজীজের (রহ) মাধ্যমে বাংলাদেশে তাবলিগের মেহনত শুরু হয়। তারপর ১৯৪৬ সালে সবর্প্রথম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের তাবলিগের প্রাণকেন্দ্র কাকরাইল মসজিদে। একসময় ব্যাপক জনসমাগমের কারণে বিশ্ব ইজতেমা টঙ্গীতে স্থানান্তরিত হয়। যদিও এবার ভিন্ন পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই বিশ্ব ইজতেমা। জানা যায়, সাম্প্রতিককালে তাবলিগ জামাতে কিছু মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল। আর তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুই পক্ষকে সমঝোতায় এনে অভিন্ন ইজতেমা আয়োজনের চেষ্টা ছিল সরকারের। কিন্তু সেটি সম্ভব না হলেও, এটা অত্যন্ত ইতিবাচক বিষয় যে, শেষ পযর্ন্ত বিবদমান দুই পক্ষ দুদিন করে মোট চারদিনে (১৫ ফেব্রæয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রæয়ারি পযর্ন্ত) বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠানে সম্মত হয়েছেন। সঙ্গত কারণেই আমরা আশা করব প্রতিবারের মতো এবারও বিশ্ব ইজতেমা নিবির্ঘœ ও শান্তিপূণর্ভাবে অনুষ্ঠিত হবে, আর এই ইজতেমাকে সফল করতে সংশ্লিষ্টরা সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন এমনটিও কাম্য। আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের জন্য বিশ্ব ইজতেমা অত্যন্ত মযার্দা ও সম্মানের। বিশ্বের মানুষ এই ইজতেমা উপলক্ষে বাংলাদেশের তুরাগ তীরে তাদের আগ্রহ ও গভীর মনোনিবেশ করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা দরকার, ১৯৬৭ সাল থেকে টঙ্গীর এই তুরাগ নদের তীরে নিয়মিত ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আর এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিপুলসংখ্যক লোকের নিরাপত্তা ও সাবির্ক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সব মহল আন্তরিকতার সঙ্গে যথাসাধ্য চেষ্টার কোনো ত্রæটি রাখে না। ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিবারই আইনশৃক্সক্ষলা বাহিনী নিয়োজিত থাকে, যাতে ইজতেমা ময়দানে কেউ কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে। এবারও যে কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয় তার জন্য আইনশৃক্সক্ষলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। এ ছাড়া জানা গেছে যে, অন্যসব বারের তুলনায় এবার সিসিটিভি কাভারেজ বেশি থাকবে। বিদেশি মেহমানসহ এখানে আসা সব মুসল্লির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাবেন আইনশৃক্সক্ষলা বাহিনী। ধমর্প্রাণ মুসল্লিদের উদ্দেশে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘আপনারা কোনো ধরনের গুজবে কান দেবেন না। আপনাদের আশপাশে আমরা সাদা পোশাকে যেমন থাকব, পোশাকেও থাকব। আপনাদের আইনি সহায়তা প্রয়োজন হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে যাবেন, আমরা দ্রæত আপনাদের সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করব।’ সবোর্পরি, বিশ্ব ইজতেমাকে সফল করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে এবং প্রতিবারের মতো এবারও বিশ্ব ইজতেমা নিবিের্ঘœ ও শান্তিপূণর্ভাবে অনুষ্ঠিত হবে- এমনটি কাম্য। পাশাপাশি সাবির্কভাবে আমাদের প্রত্যাশা, মুসলিম উম্মাহর এই জাগরণ সবার জন্য কল্যাণ বয়ে আনুক, একই সঙ্গে ইজতেমার বাণী ও সম্প্রীতি ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বময়।