অ্যান্টিবায়োটিকের অযৌক্তিক ব্যবহার

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর এ দেশের জনগণ দীর্ঘদিন থেকেই নাখোশ। অভিযোগ রয়েছে চিকিৎসকদের খামখেয়ালিপনারও। এ ছাড়াও চিকিৎসাকেন্দ্রিক ব্যবস্থাপনাগত ত্রম্নটিও রয়েছে। ফলে উপযুক্ত চিকিৎসা না পেয়ে অনেক রোগীই পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে অথবা অন্যান্য উন্নত রাষ্ট্রে চিকিৎসা সেবা নিতে যায়। রোগীদের এই প্রবণতার মধ্যে চিকিৎসকদের ওপর আস্থাহীনতাও একটি বড় কারণ। এমনও দেখা গেছে, দেশে চিকিৎসারত একজন রোগী একইসঙ্গে দশ রকমের ওষুধ সেবন করে লাখ লাখ টাকা খরচ করেও রোগ ভালো করতে পারছে না। অথচ ভারতে গিয়ে এক বা দুই প্রকার ওষুধ সেবন করে সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ রোগ চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে আমাদের চিকিৎসকদের অজ্ঞতা ও অপারগতা। এর পেছনে অনভিজ্ঞতা ও অদক্ষতাও কাজ করে। ফলে দেখা দেয় নানা বিপত্তি। অনেক সময় ভুল চিকিৎসার কারণেও রোগীর অকাল মৃতু্য ঘটে। কোনো রোগী একজন ডাক্তারের কাছে চিকিৎসাসেবা নিতে গেলে ওই ডাক্তার না বুঝেই রোগীকে এক গাদা ওষুধ দেবেন। যার মধ্যে থাকবে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন অ্যান্টিবায়োটিক। কোনো রকম বাছবিচার না করে রোগীদের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে- যা আমাদের জন্য বিপজ্জনক, একই সঙ্গে দুঃসংবাদও। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসতন্ত্রের ওপরের অংশের সংক্রমণ, অস্ত্রোপচারের আগে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, এছাড়া বিভিন্ন ঘটনায় আহদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক সময় অপ্রয়োজনীয়ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের বিপজ্জনক প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিকের অযৌক্তিক ব্যবহার রোধ করা সম্ভব না হলে একদিকে যেমন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসবে অন্যদিকে যে কোনো ধরনের সংক্রামক ব্যাধি উপশমের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে অ্যান্টিবায়োটিক কোনো কাজেই আসবে না। অর্থাৎ ধীরে ধীরে সংক্রামক ব্যাধির চিকিৎসা জটিল হয়ে পড়বে। এ ছাড়া অর্থহীন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে রোগীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ার অধিক সম্ভাবনা থাকে। পাশাপাশি রোগীর চিকিৎসা মেয়াদ বেড়ে যায়। অনেক সময় চিকিৎসকরা হীন উদ্দেশ্যে বা না বুঝে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন। যার ফলে রোগীর ভোগান্তিসহ অর্থেরও অপচয় হয়। মনে রাখতে হবে চিকিৎসা একটি সেবামূলক গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর পেশা। এখানে সব চেয়ে বড় প্রয়োজন প্রত্যেক চিকিৎসকের সচেতন হওয়া এবং সাবধানতা অবলম্বন করা। এর কোনো রকম ব্যত্যয় ঘটলে রোগীর বিপদ অবধারিত। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পাশাপাশি রোগীদেরও সচেতন হতে হবে। আবদুল মতিন ঢাকা