বিপুল ইয়াবা উদ্ধার

জড়িতদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মাদকের আগ্রাসন একটি দেশ ও জাতির জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে নির্দেশ করে। আর এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, মাদকের কথা এলে ইয়াবার বিষয়টিও সামনে চলে আসে। বিভিন্ন সময়েই পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো আমলে নিলে ইয়াবার যে চিত্র পরিলক্ষিত হয়, তাতে স্পষ্ট- ইয়াবার দৌরাত্ম্য ভয়াবহ হয়ে উঠেছে; যা কোনোভাবেই স্বস্তিকর বিষয় হতে পারে না। আমরা মনে করি, যখন ভয়াবহ আকারে ইয়াবার বিস্তার হচ্ছে, তখন এ পরিস্থিতিতে ইয়াবার আগ্রাসন থেকে যুবসমাজকে রোধ না করতে পারলে, তার জন্য ভয়ঙ্কর মূল্য দিতে হবে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতি বিচার বিশ্লেষণ সাপেক্ষে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, কক্সবাজারের টেকনাফে পৃথক দুটি অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবা বড়িসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কোস্টগার্ড ওর্ যাব সদস্যরা। এর মধ্যে কোস্টগার্ড বঙ্গোপসাগর থেকে মিয়ানমারের ১১ জন পাচারকারীসহ একটি মাছ ধরার ট্রলারও জব্দ করেছে। সঙ্গত কারণেই এই ঘটনাটিকে আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করা অপরিহার্য। একই সঙ্গে অভিযান পরিচালনা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্যদিয়ে ইয়াবার দৌরাত্ম্য রোধে সংশ্লিষ্টরা আরও বেশি তৎপর হবে এমনটিও কাম্য। মনে রাখা দরকার, যেভাবে ইয়াবা থেকে শুরু করে নানা ধরনের মাদকের ভয়াবহতা সামনে আসে, তা শুধু বর্তমান নয় বরং আগামী দিনের জন্যও অত্যন্ত আশঙ্কার। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। আমরা মনে করি, ইয়াবা উদ্ধার ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় এটা স্পষ্ট, ইয়াবা পাচারকারীরা সক্রিয়। ফলে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনাটিকে আমলে নিয়ে, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, ইয়াবাসহ যে কোনো ধরনের মাদকের ছোবল থেকে যুবসমাজ তথা মানুষকে রক্ষা করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বলাই বাহুল্য, এর আগেও নানা সময়ে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে- কক্সবাজারে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় জোরালো অভিযানও চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এটাও লক্ষণীয় যে, নানা সময়েই এমনটি পরিলক্ষিত হয়েছে যে, অভিযানের পর ইয়াবা পাচারকারী বা ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কিছুটা ঝিমিয়ে পড়লেও কিছুদিন পর আবারও আগের অবস্থা ফিরে আসে। আমরা মনে করি, এ ধরনের পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই উৎকণ্ঠাজনক। সংগত কারণেই পরিস্থিতির ভয়াবহতাকে বিবেচনা করে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে ইয়াবা রোধ করা অপরিহার্য। সংশ্লিষ্টদের বলতে চাই, এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে যে, কক্সবাজার, টেকনাফ, উখিয়া, চট্টগ্রামসহ মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা হয়ে বিপুলসংখ্যক ইয়াবা আসে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। আমরা মনে করি, নিয়মিত অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি এই চক্রগুলোর নেপথ্যে কারা বা কোন মহলের সঙ্গে জড়িত, কারা মদদ দিচ্ছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। কেননা, ইয়াবার ভয়াবহতা রোধ করা না গেলে তার ফলে সৃষ্টি হবে অত্যন্ত আতঙ্কজনক পরিস্থিতি- যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, নিয়মিত অভিযান পরিচালনাসহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্যদিয়ে ইয়াবা পাচারকারীদের রুখে দিতে হবে। এ ছাড়া মাদকচক্রের গডফাদারদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করলে এদের ভয়ানক তৎপরতা কমে আসবে এমনটি মনে করা অমূলক নয়। মাদকের কুফল সম্পর্কেও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ক্যাম্পেইন জোরদার করা জরুরি। ইয়াবার ভয়াবহ আগ্রাসন ঠেকাতে আরও কৌশলী ও যথার্থ উদ্যোগ নিশ্চিত হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।