ভিসা জটিলতার আশঙ্কা

হজযাত্রা নিরাপদ ও নিশ্চিত হোক

প্রকাশ | ১৭ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
এবারও মক্কা নগরীতে পবিত্র হজপালন প্রত্যাশীদের ভিসা জটিলতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। গত বছর ই-ভিটা জটিলতার সঙ্গে সৌদি কতৃর্পক্ষের অথর্সংক্রান্ত দুটি নিয়ম যুক্ত হওয়ায় শেষ দিকে হজপ্রত্যাশীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল। বিষয়টি তখন ব্যাপক আলোচনায় চলে আসে। পাশাপাশি এই জটিলতার জন্য সংশ্লিষ্ট সবারই দায় আছেÑএমন অভিযোগ করেছিলেন হজযাত্রীরা। আর এবছর হজপ্রত্যাশীরা ভিসা প্রসেসিংয়ের ধীরগতির কারণে ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন। তথ্য মতে, এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট এক লাখ ২৬ হাজার ৭৯৮ জন হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ছয় হাজার ৭৯৮ জন আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন এক লাখ ২০ হাজার। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫২৮টি হজ এজেন্সি এই কাযর্ক্রম পরিচালনা করছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গেছে, রোববার দুপুর পযর্ন্ত এক লাখ ২৬ হাজার ৭৮৮ জন যাত্রীর বিপরীতে ভিসা হয়েছে মাত্র ৩১ হাজার ৪৭১টি। অনেকে অভিযোগ করেছেন, হজ উপলক্ষে সব টাকা পরিশোধ করা সত্তে¡ও যাত্রার আগমুহূতের্ এরা ভিসা ও টিকিট হাতে পাননি। অপরদিকে হাব-এর মহাসচিব দাবি করেছেন, এ বছর ভিসা জটিলতার কোনো সুযোগ নেই। যাত্রীদের হতাশ না হওয়ার পরামশর্ দিয়েছেন তিনি। বলার অপেক্ষা রাখে না, হজযাত্রা নিবির্ঘœ করার দাবি দীঘির্দনের হলেও দেশের হজ পালনেচ্ছুরা বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না। বিষয়টি অত্যন্ত পরিতাপের। চলতি বছর ধমর্ মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সিগুলোর পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্নের কথা জোর দিয়ে বলা হলেও নানান বিপত্তির পাশাপাশি নতুন সমস্যা হিসেবে আবিভ‚র্ত হয়েছে ভিসার ধীরগতি। হজ সাংবাৎসরিক ফরজ ইবাদত। প্রতিবছর বিশ্বের প্রায় ৪০ লাখ ধমর্প্রাণ মুসলমান হজ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় সমবেত হন, যাদের মধ্যে এক লাখেরও বেশি বাংলাদেশি থাকেন। হজ খুবই স্পশর্কাতর একটি বিষয়। এর সঙ্গে ধমর্প্রাণ মুসলমানদের আবেগ-অনুভ‚তি ও বিশ্বাসের প্রশ্ন জড়িত। অথচ প্রতিবছর হজ পালনেচ্ছুদের নানারকম দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের কতর্ব্য হওয়া দরকার এ ব্যাপারে আরও আন্তরিক পদক্ষেপ নেয়া। স্মতর্ব্য যে, হজ মৌসুমে সৌদি আরবে ভালো মানের বাড়ি, মিনায় ভালো জায়গায় তঁাবু ও হজের দিন পরিবহন সমস্যা ছাড়াও অজু, গোসল ও টয়লেট সমস্যায় হজযাত্রীদের নাকাল হওয়ার খবরও সংবাদ শিরোনাম হয়। এছাড়া পদদলিত হয়ে কিংবা অবকাঠামো ভেঙে বড় ধরনের হতাহতের খবরও আসে মাঝেমধ্যে। সৌদি আরবের হজ আয়োজকরা এ ব্যাপারে যতœবান হলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরেও হজ পালনেচ্ছুদের নানান সমস্যা ও দুভোর্গ পোহাতে হলে- তাতে সংশ্লিষ্টদের ভ‚মিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয় বলেও আমরা মনে করি। প্রতারণা ছাড়াও হজযাত্রীরা বিভিন্ন ধরনের অব্যবস্থাপনার শিকার হচ্ছেন, যা মোটেই কাম্য নয়। এবার হজযাত্রীদের বহনের জন্য বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্স আগেই ঠিক করে রাখা হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ ১৮৭টি ফ্লাইটে ৬৪ হাজার ৯৬৭ জন এবং সৌদি এয়ারলাইন্সের ১৮৮টি ফ্লাইটে ৬১ হাজার ৮৩১ জন যাত্রী পরিবহন করবে। হজের শেষ ফ্লাইট ঢাকা থেকে ছেড়ে যাবে ১৫ আগস্ট। হজ পালন শেষে ২৭ আগস্ট প্রথম ফিরতি ফ্লাইট জেদ্দা আন্তজাির্তক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবে। জানা গেছে, ২৫ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পযর্ন্ত বিভিন্ন ফ্লাইটে এখনো প্রায় ১০ হাজার হজ টিকিট অবিক্রীত রয়েছে। এ কারণে বিমানের পক্ষ থেকে সব হজ এজেন্সিকে হজযাত্রীদের দ্রæত টিকিট সংগ্রহেরও অনুরোধ করেছে। সবোর্পরি বলতে চাই, হজের ঠিক আগমুহূতের্ উদ্ভ‚ত ভিসা জটিলতার সমাধানে দ্রত ব্যবস্থা নেয়ার বিকল্প থাকা সঙ্গত নয়। এক্ষেত্রে ধমর্ মন্ত্রণালয়, হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ (হাব) সংশ্লিষ্ট সবার পাশাপাশি বিশেষ করে সৌদি আরব কতৃর্পক্ষেরও সহযোগিতা প্রয়োজন। হজযাত্রীদের বিড়ম্বনা দূর করতে সবাই আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস। হজযাত্রীদের কাক্সিক্ষত মানের সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সব ধরনের জটিলতা নিরসনে কতৃর্পক্ষ দ্রæত পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।