নারীর স্তন ক্যানসার ব্যক্তি সচেতনতা জরুরি

প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে নারীদের স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এক পরিসংখ্যানে বলছে, দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার নারী নতুন করে এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন, আর মারা যান প্রায় ৮ হাজার নারী। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরামের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে মৃতু্যর অন্যতম প্রধান কারণ ক্যানসার। আর মৃতু্যর প্রধান কারণ হিসেবে সঠিক সময়ে ক্যানসার শনাক্ত না হওয়াকে দায়ী করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। দেশে তিন-চতুর্থাংশ স্তন ক্যানসার শেষ পর্যায়ে ধরা পড়ে। এর কারণ সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতার অভাব রয়েছে। বিশেষত নারীদের সংকোচবোধের কারণে দেরিতে চিকিৎসকের কাছে যান। বাংলাদেশে সার্বিকভাবে ক্যানসার নির্ণয় ও চিকিৎসা ব্যবস্থাও অপ্রতুল। বিশ্বব্যাপী নারীদের মধ্যে শীর্ষস্থানে থাকা নীরব ঘাতক স্তন ক্যানসার। স্তন ক্যানসার প্রতিরোধ, প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় ও ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ের কোনো জাতীয় কর্মকৌশল, কর্মপরিকল্পনা ও কর্মসূচি নেই। লক্ষণ না থাকলেও ঝুঁকিপূর্ণ নারীদের সহজ ও ব্যথা কষ্টবিহীন পদ্ধতি প্রয়োগ করে গোপন থাকা ক্যানসার নির্ণয় করাকে ক্যানসার স্ক্রিনিং বলা হয়। স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থায় স্তন ক্যানসার নির্ণয় করে সময়মতো পরিপূর্ণ চিকিৎসা দিতে পারলে শতকরা ৯০ ভাগ রোগীর সুস্থ হওয়া সম্ভব। দুঃখজনক বিষয় হলো সময়মতো চিকিৎসায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। যার ফলে তিন-চতুর্থাংশ রোগী ধরা পড়ে রোগের শেষ পর্যায়ে। স্বাস্থ্য খাতে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তবে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে ক্যানসার। এ খাতে আমাদের অগ্রগতি হয়নি। ফলে ক্যানসার চিকিৎসায় অনেক মানুষ দেশের বাইরে যাচ্ছেন। সারাবিশ্ব ক্যানসার চিকিৎসায় অনেক দূর এগিয়েছে। ফলে এখন আর ক্যানসার হলেই মৃতু্য এমন নয়। শুধু ভ্যাকসিন দিয়ে অনেক ক্যানসার থেকে বেঁচে থাকা যায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্যানসার হতে পারে। স্তন ক্যানসার তাদের মধ্যে অন্যতম। এই ক্যানসার অনেক সময়ই শরীরে আমাদের অজ্ঞাতে বৃদ্ধি পায়। তার প্রধান কারণ এই রোগ সম্বন্ধে আমাদের অসচেতনতা। যদি এই রোগের প্রাথমিক পর্যায় একে শনাক্ত করা যায় তাহলে আমরা অনেক মানুষকে এই রোগের হাত থেকে বাঁচাতে পারব। প্রায় সব ধরনের ক্যানসারের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো আমাদের শরীরে কোষের অস্বাভাবিক, অনিয়মিত বৃদ্ধি এবং কোষ বিভাজন। ক্যানসার-আক্রান্ত কোষ শরীরে অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এতে রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। যদিও স্তন ক্যানসার প্রায় সম্পূর্ণরূপে মহিলাদের মধ্যেই ঘটে থাকে। তবে পুরুষদের স্তন ক্যানসার হওয়া অসম্ভব নয়। সংখ্যায় কম হলেও পুরুষদের স্তন ক্যানসারের ঘটনা সাধারণত বেশি বয়সে দেখা যায়। তুলনামূলক বিচারে মহিলাদের স্তন ক্যানসার সম্ভাবনা কম বয়সেই বৃদ্ধি পায়। যদিও ৫০ বছরের বেশি বয়স্ক মহিলাদের স্তন ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা বেশি, কিন্তু যে কোনো বয়সেই এই রোগ হওয়া সম্ভব। সুতরাং এ বিষয়ে সচেতনতার বিকল্প নেই।