মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিনীত অনুরোধ

প্রকাশ | ১৪ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সশ্রদ্ধ সালাম নেবেন। আমরা কয়েক লাখ উচ্চ শিক্ষিত বেকার তরুণ-তরুণী সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নূ্যনতম ৩৫ বছর করার দাবিতে বিগত সাত বছর ধরে আন্দোলন করতে করতে আমরা ক্লান্ত, সর্বস্বান্ত ও হতাশাগ্রস্ত। বর্তমানে আমাদের বয়সসীমাও ৩৫-এর কাছাকাছি। আপনার সরকারের প্রায় সব মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা বিগত সময়ে এবং এখন পর্যন্ত শুধুই আশার বাণী শুনিয়ে যাচ্ছেন। এর শেষ কোথায়? এবারের নির্বাচনী ইশতেহারেও দাবিটি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রম্নতি রয়েছে। মাননীয় সড়ক ও সেতুমন্ত্রীও নির্বাচনের আগে বলেছেন অন্যান্য অ্যাডভান্সড গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বয়সসীমার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দ্রম্নতই এর যৌক্তিক সমাধান দেবেন। সংসদে বহুবার এর প্রস্তাব উঠেছে এবং জনপ্রশাসনের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কমপক্ষে ৫ বার এর পক্ষে সুপারিশ করেছে। আমরা অতীতে দেড় দশকে ভয়াবহ সেশন জটে ৪-৫ বছর জীবন থেকে হারিয়েছি। আপনি জানেন ইতোমধ্যে দেশের নানা প্রান্তে চাকরির বয়স না থাকার হতাশায় অনেকেই আত্মহত্যা করেছে আর এই প্রবণতায় অনেকেই উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। নার্সরা সর্বোচ্চ ৩৬ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন যা আমরা সাধারণদের সঙ্গে রীতিমতো একটা বৈষম্য। অথচ সংবিধানে স্পষ্ট উলেস্নখ আছে- 'প্রজাতন্ত্রের কর্মে প্রবেশে সব নাগরিকের সুযোগের সমতা থাকিবে'। নিয়োগের মাপকাটি তো হওয়া উচিত মেধা, যোগ্যতা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে। হোক না সেটা যে কোনো বয়সে! অন্যান্য দেশ যেখানে এই নিয়ম মানে সেখানে আমাদের মানতে আপত্তি কোথায়? কারিগরি পদগুলোর ক্ষেত্রে প্রবেশের বয়সসীমা খুব বেশি হওয়া উচিত। আপনি ভালো করেই জানেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে সর্বোচ্চ ৪০ বছর এবং মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশসহ ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে এই সীমা ৩৫ থেকে শুরু করে অবসরের আগের দিন পর্যন্ত। অস্বীকার করতে পারবেন, আমরা রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করি না? আমরাই ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সব আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছি, অনস্বীকার্য অবদান রেখেছি। তাহলে আমরাই কেন আজ এই স্বাধীন বাংলায় অবহেলিত, ন্যায্য, যৌক্তিক ও সাংবিধানিক দাবি বঞ্চিত? বঙ্গবন্ধু তো বলেছিলেন- 'যদি কেউ ন্যায্য কথা বলে সংখ্যায় একজন হলেও তার ন্যায্য কথা বা দাবি আমরা মেনে নেব।' আমাদের হতাশা, লুকানো কান্না, কষ্ট, অস্থিরতা ও প্রাত্যহিক দিনযাপনটা কেমন সেটা যদি বোঝাতে পারতাম তাহলে হয়তো আর চুপ করে থাকতে পারতেন না। আমরা যে আপনার কাছেও যেতে পারি না! এই একমাত্র আপনি চাইলেই দাবিটির বাস্তবায়ন হয়ে যায়। প্রবেশের বয়স বাড়ালে যদি অবসরের বয়স বাড়ানোর দরকার হয় তো সেটাও বাড়িয়ে দিন আমাদের তো কোনো আপত্তি নেই। আমরা কি আপনার সন্তানের মতো নই? কয়েক লাখ রোহিঙ্গাদের প্রতি যে মানবতা দেখিয়েছেন সেই মানবতা কি আমাদের দেখাতে পারেন না? যদি দ্রম্নত আমাদের দাবির বাস্তবায়ন না করে দেন তাহলে আমরা এই বয়সে যাব কোথায়? আর কিছুদিন পরেই তো আমাদের বয়স ৩৫ পেরিয়ে যাবে। আমরা যাব কোথায়? আত্মহত্যা ছাড়া হয়তো আর শেষ কোনো পথ আমাদের সামনে আর থাকবে না। সমৃদ্ধ, সুখী, ক্ষুধামুক্ত ও আধুনিক বাংলা গড়ায় আমরাও অংশীদার হতে চাই। তাই আপনার ২টা পায়ে পড়ি উপরোক্ত সার্বিক দিক বিবেচনা করে দ্রম্নতই দয়া করে আমাদের সুযোগ দানস্বরূপ চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নূ্যনতম ৩৫ বছর করে দিন। সারা দেশের ৩৫ প্রত্যাশীদের পক্ষে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ সংগঠনের ইমতিয়াজ হোসেন, এম এ আলী, আলামিন রাজু, নাদিয়া সুলতানা, নাজমুল হোসেন, নাসির আহমেদ, এনামুল, ইমরান, বর্ষা, সোনিয়া, শাফিন খান, মারজুক হোসেন, হারুনুর রশিদ প্রমুখ। ঢাকা