রেলযাত্রা

নিরাপদ হোক

প্রকাশ | ১৬ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ ও উন্নত হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের উন্নয়নও চোখে পড়ার মতো। নতুন রেলপথ নির্মাণ, নতুন কোচ আমদানিসহ নানা কারণেই মানুষ রেলের প্রতি আরও বেশি আস্থাবান হচ্ছে যা ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। তবু এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যাত্রী দুর্ভোগসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগও বিদ্যমান। ফলে এই বিষয়গুলো যদি রোধ করা যায় তবে তা আরও বেশি সুখকর বাস্তবতাকেই সামনে আনবে। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, যোগাযোগের মাধ্যম সহজ করার পাশাপাশি যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন এবং নিরাপত্তার বিষয়টিও জরুরি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করতে যাত্রীদের নিবন্ধনব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। আর সবাই নিবন্ধন করলে ট্রেনের কালো টিকিট আর মিলবে না- এমন প্রত্যাশা রেল মন্ত্রণালয়ের। এ ক্ষেত্রে আমরা বলতে চাই, টিকিট কালোবাজারি একটি অত্যন্ত আলোচিত বিষয়। বিশেষ করে যখন যাত্রী চাপ বেশি থাকে তখন কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্যও বেড়ে যায়, যা বিভিন্ন সময়েই গণমাধ্যমের খবরে উঠে এসেছে। এমনকি মানুষকে জিম্মি করে টিকিট কালোবাজারিরা অর্থ আদায়ে মরিয়া হয়ে ওঠে এমনটিও আলোচিত, যা অত্যন্ত পরিতাপের জন্ম দেয়। নিবন্ধনের বিষয়ে জানা যাচ্ছে, নিবন্ধন করতে প্রথম দিকে যাত্রীদের মধ্যে সাড়া পাওয়া না গেলেও এখন বেশ উৎফুলস্নভাবেই নিবন্ধন করতে দেখা গেছে। তবে একই কাউন্টারের নিবন্ধন ও টিকিট কাটতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। এ ছাড়া টিকিটের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আমরা মনে করি, এই বিষয়টিও সংশ্লিষ্টদের আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। এ ছাড়া এমন দাবির বিষয়ও উঠে এসেছে যে, নিবন্ধনের জন্য আলাদা কোনো ডেস্কের ব্যবস্থা করা হোক- যা বিবেচনায় নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। বলা দরকার, গত এক মাস ধরে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের টিকিট নিতে নিবন্ধন করার ব্যবস্থা চালু করা হয়। ক্রমেই সাড়া মেলায় ১১ মার্চ থেকে আরও ৮টি ট্রেনের নিবন্ধন সেবা চালু করা হয়েছে। স্টেশন থেকে টিকিট নিয়ে নিবন্ধন করা যাবে, আবার রেলওয়ের ওয়েবসাইটে ঢুকেও নিবন্ধন করা যাবে, তবে এ ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও মোবাইল ফোন নম্বর দিতে হবে। আর একবার নিবন্ধিত হলে পরের বার শুধু মোবাইল নম্বর বলেই স্টেশন থেকে টিকিট কাটা যাবে। এ ক্ষেত্রে আমরা বলতে চাই, নিবন্ধনের বিষয়টি যেন ঝামেলাহীন হয় সেটি সংশ্লিষ্টদের বিবেচনায় রেখে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, যাত্রী দুর্ভোগ যত কমবে এবং যাত্রা সহজ ও নিরাপদ হবে, ততই তা সুখকর বাস্তবতাকেই সামনে আনবে যা সবারই কাম্য। যখন এমনটিও উঠে এসেছে যে, একই কাউন্টারে টিকিট ও নিবন্ধন একসঙ্গে চলায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে- তখন আমরা মনে করি, এই বিষয়টি এড়ানো যাবে না, কর্তৃপক্ষকে বিবেচনায় নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সর্বোপরি বলতে চাই, রেলের সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখা দরকার, রেল দুর্ঘটনাসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় বিভিন্ন সময়েই আলোচনায় এসেছে, যা কাম্য নয়। আর একটি মহল কালোবাজারে টিকিট বিক্রি করে বলে অভিযোগ আছে, এবার যখন সেই কালোবাজারি রোধ করতে নিবন্ধনব্যবস্থা চালু হয়েছে- যেখানে এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তি তার টিকিট সংগ্রহ করতে পারবে; তখন বিষয়টি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। ফলে এই বিষয়টিসহ রেলের সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন ও নিরাপত্তায় সংশ্লিষ্টরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখবেন- এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।