সুখী দেশের তালিকা

অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হবে

প্রকাশ | ২২ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
এ কথা বারবার উচ্চারিত হয়ে আসছে যে, বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনাময় একটি দেশ। স্বাভাবিকভাবেই এই সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে হলে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি, শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রচেষ্টা, নারীর অধিকার সংরক্ষণ, মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ এবং দেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়নসহ সামগ্রিক বিষয়গুলো যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনিভাবে দেশ থেকে দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও আইনের শাসন আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের অগ্রগতি নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হতে হবে। যা বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতির প্রশ্নে এবং একটি সুখী ও সমৃদ্ধময় দেশ গঠনে অত্যন্ত জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এবারের তালিকায় ১৫৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৫তম। অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে বাংলাদেশ ১০ ধাপ পিছিয়েছে। আগের দুই বছরের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল যথাক্রমে ১১০ ও ১১৫তম। এ বছর তালিকায় বাংলাদেশের পরেই আছে ইরাক। বরাবরের মতো এ বছরও তালিকায় ভালো অবস্থানে রয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। এর মধ্যে স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশগুলো রয়েছে সবার ওপরে। তালিকার প্রথম চারটি দেশই স্ক্যান্ডিনেভীয়। আর নিচের দিকে রয়েছে আফ্রিকার দেশগুলো। তালিকায় সবার ওপরে ফিনল্যান্ড ও নিচে সাউথ সুদানের অবস্থান। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, 'সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক' নামে একটি সংস্থার মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে 'ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট' প্রকাশ করে আসছে জাতিসংঘ। বলা দরকার, বাংলাদেশ ১০ ধাপ পিছিয়েছে- এই বিষয়টি আমলে নেয়া জরুরি বলেই আমরা মনে করি। সংশ্লিষ্টদের মনে রাখতে হবে, নাগরিকদের জীবন নিয়ে প্রত্যাশা, সামাজিক সুরক্ষা ও দুর্নীতির মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে এ তালিকা তৈরি করা হয়। সঙ্গত কারণেই এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে করণীয় নির্ধারণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। এবারের তালিকা অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে সুখী দেশ পাকিস্তান আর অসুখী দেশ আফগানিস্তান। তালিকায় দেশ দুটির অবস্থান যথাক্রমে ৬৭তম ও ১৫৪তম। দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তানের পরেই আছে ভুটান। তাদের অবস্থান ৯৫তম। ১০০তম অবস্থানে আছে নেপাল। এ ছাড়া শ্রীলংকা ১৩০তম ও ভারত ১৪০তম অবস্থানে রয়েছে। তালিকায় শীর্ষে থাকা ১০ দেশ হলো- ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, নরওয়ে, আইসল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, নিউজিল্যান্ড, কানাডা ও অস্ট্রিয়া। তালিকা অনুযায়ী, সবচেয়ে অসুখী ১০ দেশ, দক্ষিণ সুদান, মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র, আফগানিস্তান, তানজানিয়া, রুয়ান্ডা, ইয়েমেন, মালাবি, সিরিয়া, বতসোয়ানা ও হাইতি। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, আজও পুরোপুরিভাবে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি আসেনি। এ ছাড়া সামাজিক-রাজনৈতিক, শিক্ষা, মানবাধিকার ও আইনের শাসনজনিত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। একটি সুখী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সংকট চিহ্নিত করে তা নিরসনেও কাজ করতে হবে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, বর্তমানে দেশ বিভিন্নভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে সফলও হয়েছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা বলতে চাই যে, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা- এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। ফলে এই অগ্রগতির বিষয়গুলো আমলে নিয়ে আরও এগিয়ে যেতে কাজ করতে হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। সর্বোপরি সুখী দেশে তালিকা তৈরির যে মানদন্ডগুলো আছে সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে একটি সুখী দেশ হিসেবে নিজেদের এগিয়ে নিতে কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।