পাটের ব্যবহার

কাযর্কর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ২০ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
পাটের সোনালি অঁাশ নামটি যেন বিস্মৃতপ্রায়। একটা সময় দেশের প্রধান অথর্করী ফসল হলেও সেই সোনালি দিন আর নেই। অথচ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে আবারও পাটের হারানো সুদিন ফিরে পাওয়া সম্ভব বলেই আমরা মনে করি। এ ক্ষেত্রে পলিথিনের ব্যবহার রোধ করার পাশাপাশি পাটের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করা অপরিহাযর্ বলেই প্রতীয়মান হয়। প্রসঙ্গত বলা দরকার, সম্প্রতি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে বিকল্প হিসেবে পাটের তৈরি ‘সোনালি ব্যাগ’ ব্যবহারের আহŸান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা মনে করি, এই আহŸান অত্যন্ত ইতিবাচক। তথ্য মতে জানা যায়, বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তজাির্তক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০১৮’- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আহŸান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী প্লাস্টিককে বিশ্বব্যাপী সমস্যা উল্লেখ করে বলেছেন, পাটের পলিমার থেকে যেটা পচনশীল সেই ধরনের ব্যাগ তৈরি হচ্ছে। যার নাম ‘সোনালি ব্যাগ’। এই সোনালি ব্যাগ পরিবেশ দূষণ করবে না। আমরা বলতে চাই, যখন এমন বিষয়ও সামনে এসেছে, পাটকে তার সোনালি দিনে ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং পাটের ওপর গবেষণা চলছে, তখন তা আশাব্যঞ্জক। আমরা মনে করি, বাস্তবতা অনুধাবন করা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার পাটের হারানো দিন ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রচেষ্টা জারি রাখা। মনে রাখতে হবে, সারা বিশ্বেই প্লাস্টিকের বিকল্প পরিবেশবান্ধব পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে পাট। আর সম্প্রতি ‘সোনালি ব্যাগ’-এর মালিকানা স্বত্ব বাংলাদেশের করে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া এবং বাণিজ্যিকভাবে এর বাজারজাতকরণের জন্য একটি টাস্কফোসর্ গঠনের সুপারিশও করেছে সংসদীয় কমিটি। জানা যায়, এপ্রিলে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পকির্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন জানিয়ে, প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার পাটজাত পলিথিন ব্যাগ তৈরি হচ্ছে। এগুলো ১৫ কেজি ধারণ ক্ষমতার। আমরা মনে করি, যখন বিশ্বব্যাপী পরিবেশের কথা আসছে, তখন তা সন্দেহাতীতভাবেই আমাদের জন্য বড় ধরনের একটি সুযোগ। যা কাজে লাগাতে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখা দরকার। পাট থেকে নানা ধরনের পণ্য তৈরির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, ‘এটা আমাদের জন্য বিরাট সুযোগ সৃষ্টি করেছে। বিশ্বব্যাপী যখন পরিবেশের কথা আসছে, আমরা পাট উৎপাদনকারী একটি দেশ। এই পাট পণ্য উৎপাদন করে এর বহুমুখী ব্যবহার আমরা নিশ্চিত করতে পারি, বিদেশে রপ্তানিও করতে পারি। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে হলে রপ্তানি আয় অত্যন্ত গুরুত্বপূণর্ বিষয়। ফলে সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগী হলে দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানিও সম্ভব। আর এ জন্য করণীয় নিধার্রণ সাপেক্ষে কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনতে একদিকে যেমন পাটের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, তেমনিভাবে পাট চাষিরা পাবেন ন্যায্যমূল্যের নিশ্চয়তা এমনটিও অপরিহাযর্। কোনোভাবেই যেন পাট চাষিরা বঞ্চনার শিকার না হয় সেই বিষয়টি আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। ভুলে যাওয়া যাবে না, পাট চাষে যদি কৃষকরা লাভবান না হয় তবে তারা আগ্রহ হরিয়ে ফেলতে পারে, যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। পাটকে অন্যতম প্রধান অথৈর্নতিক সম্পদে পরিণত করে দেশকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সঠিক বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে পাটের সুদিন ফিরে আসুক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।