এমপিওভুক্তির দাবি

যথাযথ উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ২৩ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, একটি জাতিকে সমৃদ্ধির ধারায় এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষার বিস্তৃতি এবং যথাযথ পরিবেশ সৃষ্টি করার কোনো বিকল্প নেই। আর এ ক্ষেত্রে শিক্ষকের ভূমিকা সন্দেহাতীতভাবেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গত কারণেই শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়গুলো আমলে নেয়া এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবের জানা গেল যে, এমপিওভুক্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন দেশের বিভিন্ন এলাকার নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নেন তারা। এতে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের উভয়পাশেই যানবাহন আটকা পড়ে। প্রসঙ্গত উলেস্নখ করা দরকার, এর আগে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে পদযাত্রা শুরু করে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন। কিন্তু পুলিশি বাধার মুখে তাদের পদযাত্রা থেমে যায়। আমরা মনে করি, শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবির বিষয়টি সরকার সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। উলেস্নখ করা জরুরি যে, আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়েছন, এমপিওভুক্তি না করা পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরে যাবেন না। নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি বলেছেন, 'আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে পদযাত্রা করতে চাইলে আমাদের আটকে দেয়া হয়। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চাই, তাকে আমরা আমাদের কথা জানাতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পাওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না।' এছাড়া এমনটিও জানা গেছে যে, এর আগে ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব শিক্ষকদের আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, শিক্ষকদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। তখন তারা ঘরে ফিরে যান। কিন্তু সে দাবি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি এমনটিও বলেছেন যে, তাদের ধারণা প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানানো-ই হয়নি। তাই তারা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের মাধ্যমে তাকে বিষয়টি অবহিত করতে চান। আমরা বলতে চাই, একটি সুশিক্ষিত জাতি গঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য, ফলে এমপিওভুক্তির দাবির বিষয়টি বিবেচনা করা জরুরি। কেননা শিক্ষকরা যদি মানবেতর জীবনযাপন করেন বা আর্থিক নিশ্চয়তার বিষয়টি না থাকে, তবে তাদের শিক্ষাদান বাধাগ্রস্ত হবে- এমনটি স্বাভাবিক, আর শিক্ষার্থীরাও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ফলে এমপিওভুক্তিসহ শিক্ষকদের যে কোনো দাবি আন্তরিকভাবে বিবেচনায় নেয়া জরুরি, তেমনিভাবে শিক্ষার বিস্তার ও মান নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের সামগ্রিক পদক্ষেপও অব্যাহত রাখতে হবে। কেননা একটি দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়ন তখনই ফলপ্রসূ হবে যদি যথাযথভাবে সুশিক্ষার বিস্তার হয়। এছাড়া আমলে নেওয়া দরকার, ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী দাবি মেনে নিয়েছেন। অনশন ভেঙে শিক্ষকদের ঘরে ফিরে যেতে বলেছেন। এরপর জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীসহ কয়েকজন এসে তাদের বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। কিন্তু এক বছর পার হলেও দাবি বাস্তবায়ন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকও। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এমপিওভুক্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে যে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন দেশের বিভিন্ন এলাকার নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা- তা যথাযথভাবে আমলে নিন এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিচার বিশ্লেষণ করে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করুন। মনে রাখা দরকার, সুশিক্ষার বিস্তার এবং শিক্ষার যথাযথ মান নিশ্চিত করার প্রশ্নে শিক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক- এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।