থামছে না মানব পাচার যথাযথ পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
কিছুতেই থামছে না মানব পাচার। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৪৯০ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। আটকদের মধ্যে বাংলাদেশি ছাড়াও নেপাল, আফগানিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক রয়েছেন। তবে আটকদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি রয়েছেন তা জানা যায়নি। বৃহস্পতিবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৩১ জানুয়ারি বুধবার স্থানীয় সময় মধ্যরাত ২টা ৩০ মিনিটে বুকিত আমান আন্ডারকভার এলাকায় অপরাধ বিভাগ (ডি-সেভেন) এর নেতৃত্বে জেনারেল অপারেশন টিম (পিজিএ) এবং সেলাঙ্গরের মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের (জিম) সহায়তায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়। অভিবাসন বিভাগ বলছে, অভিযানের আগে অভিবাসীদের অনুপ্রবেশের বিষয়ে স্থানীয় জনগণের কাছ থেকে অভিযোগ ও তথ্য নেওয়া হয়। পরে পুলিশ এলাকায় প্রায় এক মাস ধরে গোয়েন্দা ও নজরদারি চালায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নানা ধরনের উদ্যোগ ও তৎপরতা সত্ত্বেও মানব পাচার কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। সাগরপথে থাইল্যান্ড কিংবা মালয়েশিয়ায় মানব পাচার হচ্ছে। এখন মানব পাচারের প্রধান টার্গেটে পরিণত হয়েছে রোহিঙ্গারা। প্রায়ই তারা ট্রলারে করে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছে। এর একাংশ সাগরে ডুবে প্রাণও হারাচ্ছেন অত্যন্ত মর্মান্তিকভাবে। এরপরও যে মানব পাচার থেমে নেই। তারা মনে করে কোনোভাবে একবার থাইল্যান্ড বা মালয়েশিয়ায় যেতে পারলেই সব সমস্যার সমাধান। মাসে লাখ টাকা উপার্জন করার যাবে- এমন মরীচিকার পেছনে ছুটতে গিয়ে সাগরপথে বিদেশে পাড়ি জামাতে গিয়ে নৌকাডুবিতে প্রাণ হারাচ্ছেন লোকজন। এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। মানব পাচারের শিকার হওয়ার পর বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাচারকারীরা অন্তত ১৮টি রুট ব্যবহার করে। মানব পাচার বাংলাদেশের অন্যতম শিরঃপীড়ায় পরিণত হয়েছে। জল-স্থল-আকাশপথে প্রতিদিন মানব পাচার চলছে। মূলত জীবন ও জীবিকার কারণে, দেশে কর্মসংস্থানের অভাবে, দারিদ্র্যের পীড়নে মানুষ পাড়ি জমাচ্ছেন বিদেশে। এসব মানুষের বেশিরভাগই প্রতারিত হচ্ছে, হচ্ছে সর্বস্বান্ত। একটা সময় শুধু রোহিঙ্গা পুরুষরা কাজের তাগিদে সাগর পাড়ি দিতেন। এখন কিন্তু নারী ও শিশু পাচারও বাড়ছে। অবৈধভাবে দেশের বাইরে যাওয়ায় বাংলাদেশের অনেক অভিবাসী মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ছেন। চলাচলে সীমাবদ্ধতা, ঋণের চক্রে পড়া, জোরপূর্বক শ্রম, যৌন নির্যাতন, জোরপূর্বক বিবাহ এবং দাসত্বের মতো শোষণমূলক আচরণের শিকার হচ্ছেন অভিবাসীরা। দরিদ্র ও প্রান্তিক নারী-পুরুষ এবং শিশুরাই মানব পাচারকারীদের লক্ষ্যে পরিণত হচ্ছেন। বাংলাদেশ থেকে যেসব মানুষ পাচারের শিকার হন, তাদের ৫১ শতাংশই পাচারকারীদের ফাঁদে পড়ে ভাগ্য ফেরাতে গিয়ে বা অর্থনৈতিক কারণে। আমরা মনে করি, মানব পাচার বন্ধ না হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূতি প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কাজেই কোস্ট গার্ড, পুলিশ ও বিজিবিসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও নজরদারি বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনে সীমান্তের সক্ষমতা বাড়িয়ে পাচার বন্ধ করতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।