ইতিবাচক রপ্তানি

দেশের জন্য আশাব্যঞ্জক

প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশকে সমৃদ্ধির ধারায় এগিয়ে নিতে হলে রপ্তানি আয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলে রপ্তানি বাণিজ্যসংক্রান্ত স্বস্তির খবর এলে তা আশাব্যঞ্জক। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, তৈরি পোশাক খাতের ওপর ভর করে ইতিবাচক ধারায় রয়েছে রপ্তানি আয়। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) তিন হাজার ৯০ কোটি ৩০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি। আমরা মনে করি, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আয় মানেই তা সন্তোষজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। ফলে এই বিষয়টিকে আমলে নিয়ে অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে যথাযথ উদ্যোগ জারি রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। একই সঙ্গে রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের সংকট সৃষ্টি হলে তাও দ্রম্নত সমাধান করতে হবে। মনে রাখা দরকার, রপ্তানি আয়ের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রসঙ্গত, রপ্তানিকারকরা বলছেন, রপ্তানি আয়ে সুখবর নিয়েই অর্থবছর শুরু হয়েছিল। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। আর এর মূল কারণ দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে অন্যান্য খাতেরও আয় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ফলে রপ্তানিতে বড় প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হচ্ছে। আমরা উলেস্নখ করতে চাই- রপ্তানিকারকদের এমন প্রত্যাশাও সামনে এসেছে, বছরের পরবর্তী মাসগুলোতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং ইতিবাচক এ ধারা অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। আমরাও চাই, অগ্রগতি ধরে রাখতে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত করবেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, তৈরি পোশাক খাত দেশের অন্যতম রপ্তানি খাত। ফলে রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে পোশাক খাতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ- এই বিষয়টি আমলে নিয়ে এই খাতে যেন কোনো প্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সেই সতর্কতা ও যথাযথ পদক্ষেপ জারি রাখতে হবে। এ ছাড়া কারখানার নিরাপত্তা, শ্রমিকদের জীবনমানসহ সামগ্রিক বিষয়গুলোকে আমলে নিয়েও কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা জরুরি। ভুলে যাওয়া যাবে না, তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের (জুলাই-মার্চ) সময়ের নয় মাসে মোট রপ্তানি আয়ে পোশাকের অবদান ৮৩ শতাংশ। তবে হোমটেক্স, টেরিটাওয়েলসহ এ খাতের অন্যান্য রপ্তানির উপখাত হিসাব করলে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ৮৮ শতাংশেরও বেশি হবে। উলেস্নখ্য, ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সব ধরনের পণ্য রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৮৮২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এ সময়ে আয় হয়েছে ৩ হাজার ৯০ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৭ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, একক মাস হিসেবে চলতি বছরের মার্চে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৩৪ কোটি ডলার। লক্ষ্য ছিল ৩২৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এ হিসাবে এ মাসে আয় বেড়েছে ৭ কোটি ৭২ লাখ ডলার। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, যে সব ক্ষেত্রে রপ্তানি আয় বেড়েছে সেগুলোর দিকে দৃষ্টি দেয়ার পাশাপাশি পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে- এই বিষয়টিও আমলে নেয়া দরকার। কেননা আলোচিত সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে। একই সঙ্গে অর্জিত হয়নি লক্ষ্যমাত্রাও। সামগ্রিক রপ্তানি আয় বৃদ্ধি ও অগ্রগতি বজায় রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।