তরুণ প্রজন্মে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও প্রভাব

প্রকাশ | ২৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

রাসেল হোসেন সাকিব
বাঙালি, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ- তিনটি শব্দ একই সূত্রে গাঁথা। একটি ছাড়া আরেকটির অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের ইতিহাসে সদা উজ্জ্বল নক্ষত্রের দীপ্যমান হয়ে থাকবেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাকিস্তানি জনতার বিরুদ্ধে নিরস্ত্র বাঙালি রুখে দাঁড়িয়েছিল দেশপ্রেমের চেতনায়; দেশমাতৃকাকে মুক্তির আশায়। এ দেশের মুক্তিকামী জনতা একটি ফুলকে বাঁচাতে, একটি পতাকা উড়াতে, জীবনকে তুচ্ছ করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল স্বাধীনতা লড়াইয়ে, মুক্তির লড়াইয়ে। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী, বিচক্ষণ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বই বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল, পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত করেছিল। তরুণ প্রজন্মের ভাবনায় বঙ্গবন্ধু নিঃসন্দেহে সেরা দেশপ্রেমিক হয়ে থাকবেন। দেশমাতৃকার জন্য তিনি সারাজীবন নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাকে কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে কাটাতে হয়েছিল ৪৬৮২ দিন। যা ছিল তার ৫৪ বছর ৫ মাস জীবনের ১২ বছর ১০ মাস। তার ক্ষুরধার রাজনৈতিক জীবনের মেধা, প্রজ্ঞা ও নির্দেশনা আমাদের দিয়ে গেছেন স্বাধীন সার্বভৌম ও সোনার বাংলা। বঙ্গবন্ধু তার সমগ্রজীবনে তরুণ প্রজন্মকে অসীম সাহসিকতা, মানবতার সেবা করা, আত্মবিশ্বাসী ও আত্মপ্রত্যয়ের বার্তা দিয়ে গেলেন। তিনি যে মহানুভবতা ও দেশপ্রেমের আদর্শ রেখে গেছেন তা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারলে সত্যিকারের সোনার বাংলা নির্মাণ করা সম্ভব। তার চলার পথ তরুণদের সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে অনুপ্রেরণা জোগায়। তরুণরা একটি দেশের জীবনীশক্তি। এই জীবনীশক্তিকে সদব্যবহার করতে পারলে বাংলাদেশ দ্রম্নতগতিতে এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধু তার সমগ্রজীবনে স্বাধীন, সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও মানবিক রাষ্ট্র গড়তে কাজ করে গেলেন। তিনি এমন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছেন, যেখানে থাকবে না কোন বেকারত্ব ; তেমনি মানুষ অর্থনীতি সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দেশ চলবে। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের যে মর্যাদা, অহংকার, সততার শিক্ষা, মাথা উঁচু করার উজ্জীবনী শক্তি, দেশের জন্য কিছু করে যাওয়ার অধিকার দিয়েছে, তা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জাগ্রত করতে হবে। বঙ্গবন্ধু বলে গেলেন, 'বাঁচতে হলে মানুষের মতো বাঁচবো; মরতে হলে বীরের মতো মরব' যা তরুণ প্রজন্মকে চলার পথে অনুপ্রেরণা জোগায়। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ফিদেল কাস্ত্রো বলে গেলেন, 'আমি হিমালয় দেখিনি, তবে আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসে এই মানুষটি হিমালয়ের সমতুল্য। আর এভাবেই আমি হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতা লাভ করেছি।' বঙ্গবন্ধু দৃঢ়পণে বিশ্বাস করতেন, তরুণদের সৃষ্টিশীল মেধা ও প্রচেষ্টাকে কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ যেমন সহজে এগিয়ে যাবে, তেমনি কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও পথভ্রষ্ট থেকে মুক্তি পেয়ে আলোকবর্তিকার পথ খুঁজে পাবে। তিনি পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে শিখিয়েছেন 'সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়' যা তরুণ প্রজন্মকে হৃদয়পটে ধারণ করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে শপথ নিতে হবে- এই মহান নেতার নীতি ও আদর্শকে ধারণ করে স্মার্ট বাংলা গড়ে তোলার ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে হয়ে কাজ করার। তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নামই নয়, বরং আত্মবিশ্বাসের ছোঁয়া, গৌরবের উষ্ণতা ও ভালোবাসার ঠিকানাও। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও বিশ্বাস তরুণ প্রজন্ম ধারণ করলে কখনো তারা বিপথে যাবে না। বঙ্গবন্ধুর ভাবনা-চিন্তা-দর্শন হোক তরুণ প্রজন্মের চলার পথের পাথেয়। রাসেল হোসেন সাকিব শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়