বিশ্বে ৪০ হাজার মানুষ মারা যেতে পারে ডেঙ্গু রোধে উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি কয়েক বছরে কতটা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠেছে যা বলার অপেক্ষা রাখে না। সঙ্গত কারণেই ডেঙ্গু সংক্রান্ত যে কোনো ধরনের উদ্বেগ তৈরি হলে তা আমলে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। প্রসঙ্গত পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, একটি স্ত্রী এডিস মশা যদি ফ্ল্যাভিভাইরাস প্যাথোজেন বহন করে এবং এ অবস্থায় কাউকে কামড় দেয় তাহলে ভুক্তভোগী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন। আর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে জয়েন্টে ব্যথা, রক্তক্ষরণ এমনকি মৃতু্য পর্যন্ত হতে পারে। একইসঙ্গে এটাও জানা যাচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন মনে করে- সারা বিশ্বে প্রতি বছর ১০ কোটি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। অন্যদিকে, এটা আমলে নেওয়া জরুরি যে, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়ছে। আমরা বলতে চাই, দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়েও নানাভাবে নানা সময় শঙ্কা উঠে এসেছে। ফলে যখন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়ছে এমনটি জানা যাচ্ছে, তখন তা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। লক্ষণীয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুয়ায়ী, ২০০০ সালে প্রায় বিশ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে মারা গেছে। আর এটা আশঙ্কা করা হচ্ছে, চলতি বছর বিশ্বে ৪০ হাজার মানুষ এ রোগে মারা যেতে পারেন। তথ্য মতে, সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত অঞ্চল হলো লাতিন আমেরিকা। ২০০০ থেকে ২০০৫ সালে সেখানে বছরে গড়ে পাঁচ লাখ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। কিন্তু ২০২৩ সালে অঞ্চলটিতে ৪৬ লাখ মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। এদিকে, ২০২৪ সালে এরই মধ্যে সেখানে প্রায় ৬০ লাখ কেস শনাক্ত হয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্রাজিলের মানুষ। আমরা মনে করি, ডেঙ্গু যেভাবে বাড়ছে তা আমলে নিয়ে বিশ্ব নেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্টদের কার্যকরী পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে, তেমনি দেশের সংশ্লিষ্টদেরও ডেঙ্গু পরিস্থিতি এড়ানো যাবে না। অন্যদিকে, চলতি বছর বিশ্বে ৪০ হাজার মানুষ এ রোগে মারা যেতে পারেন এমন আশঙ্কা কোনোভাবেই সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। এছাড়া স্মর্তব্য যে, একদিকে যেমন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তেমনি অঞ্চল ছাপিয়ে তা ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের সর্বত্র। এডিস মশা তাপমাত্রার ছোট পরিবর্তনের জন্য সংবেদনশীল এবং বিশ্ব উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পরিসর প্রসারিত হচ্ছে। অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়া ৫ ছড়ায়- যা এখন সারা বিশ্বেই পাওয়া যায়। যদিও এডিস এখনো সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েনি। কিন্তু জলবায়ুর বর্তমান প্রবণতা অনুযায়ী, এডিস মশা দক্ষিণ ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে আরও দুইশ কোটি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ারও ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা বলতে চাই, সারা বিশ্বের জন্য ডেঙ্গু সংক্রান্ত যে তথ্য সামনে আসছে তা আশঙ্কাজনক। যা এড়ানো যাবে না। বিশ্ব নেতৃত্ব এবং সংশ্লিষ্টদের ডেঙ্গুর বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নিতে হবে এবং তা মোকাবিলায় সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। বলা দরকার, নগরায়ণ এডিস মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে। একটি ডেঙ্গু মশা তার দুই সপ্তাহের জীবনে একাধিক ব্যক্তিকে কামড়াতে পারে। কিছু স্থানে এই রোগ আগে ছিল না কিন্তু এখন দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ছে। আরও আশঙ্কার বিষয় হলো, এই প্রবণতা এখন বাংলাদেশ ও ভারতেও দেখা যাচ্ছে। এছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্যালিফোর্নিয়া, দক্ষিণ ইউরোপ, আফ্রিকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, ডেঙ্গু সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরের জন্য বিশ্বকে অবশ্যই প্রস্তুতি নিতে হবে এমনটিও আলোচনায় এসেছে। যদিও উত্তর গোলার্ধ ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, তবে এতে বিশ্বের দরিদ্র অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে এটি সংশ্লিষ্টদের আমলে নেওয়া জরুরি। অন্যদিকে, বিশ্বের জন্য যেভাবে ডেঙ্গু আশঙ্কাজনক হয়ে উঠছে সেটি আমলে নিতে হবে তেমনি বাংলাদেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষেও সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হতে হবে। সামগ্রিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ডেঙ্গু রোধে প্রয়োজনীয় সচেতনতা বাড়ানোসহ পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং তার বাস্তবায়নেরও কোনো বিকল্প নেই।